ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানকে কোহলির হুঙ্কার!

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৩ জুন ২০১৭

পাকিস্তানকে কোহলির হুঙ্কার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজ আর একটা দিন, তারপরই সেই প্রতিক্ষিত মহারণ। বার্মিংহামের এজবাস্টনে মুখোমুখি হবে দুই চরম প্রতিপক্ষ ভারত-পাকিস্তান। এই লড়াইটি নিয়ে বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক-সমর্থকদের মধ্যে যে টানটান উত্তেজনা আর নানাবিধ জল্পনা-কল্পনা। আর সেটার রেশ আছে দুইদলের ক্রিকেটারদের মধ্যেও। বিশেষ করে উভয় দলের তারকাদের নিয়েই এখন মাঠের বাইরে মনস্তাত্ত্বিক ও কথার লড়াই শুরু হয়েছে। ভারতের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ ও অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি পাক ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে পাক বোলারদের জন্য বড় পরীক্ষা হবে কোহলিকে আটকে রাখা। ইতোমধ্যেই পাক পেসার জুনাইদ খান দাবি করেছেন তার বল ঠিকভাবে খেলতেই পারেন না কোহলি। তবে এখন পর্যন্ত এ টপঅর্ডারের যে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স সেটা নিশ্চিতভাবে বিশ্বের যে কোন বোলিং আক্রমণকে ধসিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। পাক পেসারদেরও ভুগিয়েছেন বেশ কয়েকবার। তাই এ মহারণে কোহলিকে আটকানোরই পরীক্ষা দিতে হবে পাক পেসারদের। ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসার নাম কোহলি। তিনি যে কোন ম্যাচে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে যেতে পারলে বিশ্বের যে কোন প্রতিপক্ষের জন্যই তা ভয়ানক। কারণ যে কোন ধরনের বোলিং আক্রমণকে একাই দুমড়ে-মুচড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। বর্তমান পাকিস্তান স্কোয়াডে পেসারদের মধ্যে যারা আছেন এর মধ্যে মোহাম্মদ আমির, হাসান আলী, জুনাইদ খান ও ওয়াহাব রিয়াজ অন্যতম। ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার আগে পাক ক্রিকেটাররা উত্তেজনায় টগবগ ফুটছেন। পেসার জুনাইদ ইতোমধ্যেই উসকে দিয়েছেন কোহলিকে, বলেছেন ঠিকমতো তার বলগুলো মোকাবেলাই করতে পারেন না তিনি। তবে তার কথাটা যৌক্তিক মনে হতেই পারে। কারণ পাকদের বিরুদ্ধে মিশ্র ব্যাটিং অভিজ্ঞতা আছে কোহলির। ১০ ওয়ানডেতে মাত্র দুই সেঞ্চুরিসহ ৪১.৪৪ গড়ে করেছেন ৩৭৩ রান। অথচ তার ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৫৩.১১। সে যাই হোক, এমন অন্তত ৫টি ম্যাচ আছে যেগুলোতে বলতে গেলে একাই পাকদের হারিয়ে দিয়েছেন কোহলি। ২০১২ সালের টি২০ বিশ্বকাপে কোহলির কাছেই হেরে গিয়েছিল পাকরা। প্রথম ব্যাট করে মাত্র ১২৮ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান দল। কিন্তু ভারতের শক্ত ব্যাটিং লাইনআপ তেমন সুবিধা করতে পারেনি শুরু থেকে। তাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানের বোলিং। তরুণ রাজা হাসানের বলে যেন আগুন ঝরছিল। কিন্তু এর মধ্যেই ৬১ বলে ৭৮ রানের একটি বিস্ফোরক ইনিংস উপহার দিয়ে দলের জয়টাকে সহজ করে তোলেন কোহলি। দলকে জিতিয়ে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন এবং হন ম্যাচসেরা। গত বছর এমন দুটি ঘটনা আছে যখন কোহলি একাই কাঁদিয়েছেন পাকদের। এর মধ্যে গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে কলকাতায় আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল ভারতীয় দল। তবে সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন দুর্দান্ত এক ফিফটি হাঁকিয়ে। বিশ্বকাপের মাত্র কিছুদিন আগেই টি২০ এশিয়া কাপেও ভারতের ত্রাণকর্তা হয়েছিলেন কোহলি। পাক বোলারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ৫১ বলে ৪৯ রানের একটি ইনিংস খেলেন। মাত্র ৮৩ রানে অলআউট হওয়ার পরও পাক বোলারদের দুরন্ত বোলিং কাঁপিয়ে দিয়েছিল ভারতীয়দের ভিত। কিন্তু কোহলির ইনিংস সব শঙ্কা দূর করে সহজ জয় এনে দেয়। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে আরেকটি পাক-ভারত লড়াই হয়েছে। সেখানেও ভারতের জয়ের নায়ক হয়েছিলেন কোহলি। এ্যাডেলেইডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে কোহলির ১২৬ বলে ৮ চারে করা ১০৭ রানের ইনিংস ভারতীয় দলকে দারুণ এক সংগ্রহ পাইয়ে দেয়। পরে ফিল্ডিংয়ের সময়ও দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে থাকা শহীদ আফ্রিদিকে। এ ম্যাচেরও সেরা খেলোয়াড় হন কোহলি। আরেকটি উদাহরণ আছে ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। ৩২৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল পাকিস্তান।
×