ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি আবাহনী-শেখ জামাল

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৩ জুন ২০১৭

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি আবাহনী-শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ধানম-ি এলাকায় অবস্থিত ফুটবল ক্লাব দুটি। একটি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। আরেকটি শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। একটি দর্শক সমর্থনপুষ্ট, ঐতিহ্যবাহী এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ফুটবলে আধুনিক ধাঁচের খেলার প্রবর্তক। আরেকটি অল্প সময়ের মধ্যেই ঈর্ষণীয় সাফল্য পাওয়া দল। ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপে’ আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় দল দুটি মুখোমুখি হবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। এক কথায় বলা যেতে পারে ‘ধানম-ি ডার্বি’ আজ। ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী হচ্ছে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। এ আসরের দ্বিতীয় সর্বাধিক ৯ বারের শিরোপাধারী আবাহনী (সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়নও তারা) গ্রুপে ১-১ গোলে ড্র করে নবাগত সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে। এছাড়া ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রকে। কোয়ার্টারে তারা ২-১ গোলে হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে। ‘বেঙ্গল ইয়োলোস’ খ্যাত শেখ জামাল ধানম-ি হচ্ছে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। এ আসরের তিন বারের শিরোপাধারী জামাল গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফরাশগঞ্জকে হারায় ৩-০ গোলে। পরের ম্যাচে তারা টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে হারায় শেখ রাসেলকে। (এই ম্যাচের আগে গোল এবং পয়েন্ট দু’দলেরই সমান ছিল। এতে করে জামাল-রাসেল উভয়দলই শেষ আটে নাম লেখানো নিশ্চিত করেছিল। প্রশ্ন ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে তা নিয়ে। তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৯০ মিনিটের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী দুই দলের গোল ও পয়েন্ট সমান হওয়ায় সেক্ষেত্রে খেলার ফল নিষ্পত্তি হয় সরাসরি টাইব্রেকারে। এজন্য দু’দলকে কোন অতিরিক্ত সময় খেলতে হয়নি)। কোয়ার্টারে জামাল ১-০ গোলে হারায় মোহামেডানকে। এ আসরে এ পর্যন্ত ৩ ম্যাচে ৪ গোল করেছে আবাহনী। হজম করেছে ২ গোল। দলের মধ্যে জোড়া গোল করেন রুবেল মিয়া। এছাড়া ১টি করে গোল করেন এমেকা ডার্লিংটন এবং নাবিব নেওয়াজ জীবন। পক্ষান্তরে এ আসরে এ পর্যন্ত ৩ ম্যাচে ৪ গোল করেছে জামাল। কোন গোল হজম করেনি। দলের মধ্যে ১টি করে গোল করেন মমদৌ বাও, সলোমন কিং, নুরুল আবসার এবং সোহেল মিয়া। গত ফেডারেশন কাপে আবাহনী-জামাল মুখোমুখি না হলেও হয়েছিল স্বাধীনতা কাপের সেমিতে। সে ম্যাচে আবাহনী লি টাক এবং সানডে চিজোবায় বিধ্বস্ত হয়ে ০-৬ গোলে হেরেছিল জামাল। এছাড়া গত প্রিমিয়ার লীগের প্রথম সাক্ষাতে দু’দল ড্র করেছিল ৩-৩ গোলে। ফিরতি মোকাবেলায় অবশ্য ৩-২ গোলে জিতেছিল আবাহনীই। শেখ জামালের ম্যানেজার আনোয়ারুল করিম হেলাল বলেন, ‘আবাহনী ভাল দল। তাদের সঙ্গে ম্যাচটা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আমাদের লক্ষ্য অবশ্যই ফাইনাল। ছেলেরা পূর্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ফাইনালে পা রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।’ দলের নাইজিরিয়ান কোচ জোসেফ আফুসি বলেন, ‘আমার মূল লক্ষ্য প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা। ফেডারেশন কাপ হচ্ছে আমাদের প্রস্তুতির টুর্নামেন্ট। তাই বলে আমরা সেমির ম্যাচটিকে মোটেও হাল্কাভাবে নিচ্ছি না।’ অন্যদিকে আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বলেন, ‘ফাইনালেই চোখ আমাদের। নিজেদের ঘরের শিরোপা কিছুতেই অন্যদের হাতে তুলে দিতে চাই না। এ জন্যই সেমিফাইনালটা জিততে চাই। এমেকা ডার্লিংটন এবং ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে গতবার শেখ জামালে খেলেছে। এবার তারা আমাদের দলে। আশা করছি তারা তাদের নিজেদের খেলাটাই মাঠে উপহার দেবে। প্রতিপক্ষ হিসেবে জামাল অবশ্যই ভাল দল। আমরা স্বাভাবিক খেলাটা খেললেই ম্যাচটা জিততে পারব।’ দলের ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ বলেন, ‘এএফসি কাপের আমরা নিজেদের শেষ গ্রুপে মোহনবাগানকে বাগে পেয়েও হারাতে পারিনি। তবে এএফসি কাপে খেলার কারণে আমরা খেলার মধ্যেই আছি। ফলে আমাদের আত্মবিশ^াস তুঙ্গে।’ এখন দেখার বিষয়, আজকের সেমির মহারণে কে জেতে।
×