ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘৪০০ রানও যথেষ্ট নয়’

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ৩ জুন ২০১৭

‘৪০০ রানও যথেষ্ট নয়’

স্পোর্টস রিপোর্টার, লন্ডন থেকে ॥ বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবালের মনে আনন্দ উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। আবার কষ্টও আছে। আনন্দ এজন্য যে আজ কার্ডিফে যে জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যকার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল ম্যাচটি হবে, ম্যাচটি দেখতে যাবেন তিনি। প্রায় তিন লাখ টাকা মূল্যের টিকেট কিনেছেন। শুধু প্রিয় ফুটবলার রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর খেলা দেখবেন বলে। যেহেতু ইংল্যান্ডেই আছেন, লন্ডনে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলছেন। তাই রোনাল্ডোর খেলা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল দেখার সুযোগটি হাতছাড়া করছেন না। আরেকদিকে কষ্ট হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচটিতে হেরে গেছে বাংলাদেশ। তিনি সেঞ্চুরি করার পরও। তবে প্রথম ম্যাচ থেকে তামিমের বোধ হয়েছে, ‘৪০০ রানও যথেষ্ট নয়।’ কেন? ইংল্যান্ডের উইকেটগুলোতে এখন প্রচুর রান হয়। কোন দল যদি ৩৫০ কিংবা ৪০০ রানও করে তাহলেও নিরাপদ নয়। তখন বোলিংটাও ভাল করতে হবে। তা না হলে জেতা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর বাংলাদেশ তো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিল ৩০৫ রান। তাও আবার বোলিং যেমন হওয়ার কথা ছিল, তার ধারে কাছেও বোলারদের কাছ থেকে নৈপুণ্য মিলেনি। তামিম তাই বলেছেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি ৩০০ রানও যথেষ্ট নয়। কিন্তু আমরা যে স্কোরই করি না কেন যদি আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে না পারি তাহলে ৪০০ রানও যথেষ্ট নয়। আমাদের ভুলগুলো বের করতে হবে এবং পরের ম্যাচের আগেই তা শুধরাতে হবে। আমাদের শুধু বসে ভাবতে হবে আমরা কি করলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন আসতে পারতো।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুটা কিন্তু দুর্দান্ত করে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার মিলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। সৌম্যের পর ইমরুল আউট হন। তাতেও সমস্যা হয়নি। তামিম-মুশফিক মিলে যে ১৬৬ রাানের বড় জুটি গড়েন। কিন্তু যেই সেঞ্চুরি করার পর তামিম ও হাফ সেঞ্চুরি করার পর মুশফিক আউট হয়ে যান, টানা দুই বলে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ । সেখানেই সব এলোমেলো হয়ে যায়। অথচ ৩৩০-৩৪০ রান হওয়া খুবই সম্ভব ছিল। শেষদিকে রান কম হয়ে গেছে। তামিম অবশ্য নিজের দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শন ঠিকই করেছেন। ১২৮ রান করে আউট হয়েছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। ১৪২ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৮ রান করে আউট হন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে (২০১০ সালে) ও ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে দেখালেন তামিম। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি করেন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি তামিমেরই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এর আগেও সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। তবে সেটি ২০১০ সালে বাংলাদেশের মাটিতে ছিল। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন তামিম। এবার ইংল্যান্ডের মাটিতে করলেন। ওভালে ওপেনারদের মধ্যে এক ওয়ানডে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান এখন তামিমের। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেঞ্চুরিয়ানও তামিম। তামিম জানান, ‘আমরা (আমি আর সৌম্য) যখন শুরু করি তখন উইকেটে বল কখনও জোরে আসছিল। কখনও অনেক স্লো। তাই বড় শট কিংবা ক্রিজ থেকে বের হয়ে এসে শট খেলা সহজ ছিল না। কিন্তু ১০ ওভার পর উইকেট সহজ হয়ে গেছে। এরপর আমি আমার স্বাভাবিক খেলাটা খেলে গেছি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি আলাদা স্পেশাল কিছু করতে চাইনি। আমি একটি বল করে খেলতেছিলাম। বৃহস্পতিবার আমি যা করছি সেটা হলো বাউন্ডারি মারার কোন বল মিস করিনি। যখনই বাজে বল এসেছে, আমি চেষ্টা করেছি চার না হলে ছয় মারতে।’ তামিম তাতে সফল হয়েছেন। সেঞ্চুরিই হাঁকিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু দল জিতেনি। জিতবে কি করে এমন বোলিং হলে। তামিম তো বলেই দিলেন, বোলিং ভাল না হলে ৪০০ রানও জেতার জন্য যথেষ্ট নয়।
×