ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নাম্বার ওয়ান বনাম আন্ডারডগ

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ৩ জুন ২০১৭

নাম্বার ওয়ান বনাম আন্ডারডগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ আজ। এবি ডি ভিলিয়ার্সের নেতৃত্বাধীন প্রোটিয়ারা আইসিসি ওয়ানডের র‌্যাঙ্কিংয়ের ‘নাম্বার ওয়ান’ দল। টুর্নামেন্টের হট-ফেবারিট তারা। অন্যদিকে ক’দিন আগেই বাংলাদেশকে ষষ্ঠস্থান ছেড়ে দিয়ে সাতে নেমে গেছে লঙ্কানরা। অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ নিজে স্বীকার করেছেন, আসরে আন্ডারডগ তারা। সুতরাং বাস্তবতার বিচারেই এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে লড়াইটা যেহেতু ব্যাট-বলের, তাই শেষ বলে কিছু নেই। গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে অনেক কিছুই হতে পারে। একদিবসীয় দ্বৈরথে সেটি তো আরও বেশি করে সত্য। শ্রীলঙ্কার জন্য বাড়তি দুশ্চিন্তা, ইনজুরির কারণে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অনিশ্চিত নিয়মিত অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন এটির নাম ছিল আইসিসি নকআউট ট্রফি। মিনি বিশ্বকাপ হিসেবেও ডাকা হতো। ওয়ানডে কিংবা টি২০, আইসিসির কোন টুর্নামেন্টে সেটিই প্রোটিয়াদের একমাত্র শিরোপা। আগে ও পরের প্রতিটি বৈষয়িক আসরে হট-ফেবারিট হিসেবে শুরু করেও সাফল্যের খাতা শূন্য। একাধিবার কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হওয়া প্রোটিয়াদের নামের পাশে এখন ‘চোকার’ অপবাদ। সেটি ঘোচাতে ডি ভিলিয়ার্স এবার এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে তিনি বলেছেন, ‘প্রোটিয়াদের কেউ থামাতে পারবে না।’ কুইন্টন ডি কক, হাসিম আমলা, কাগিসো রাবাদা, ফ্যাফ ডুপ্লেসিস, ডেভিড মিলার, কেশভ মহারাজদের নিয়ে গড়া স্কোয়াডকে বর্তমান সময়ের সেরা ওয়ানডে দল বলেও অভিহিত করেছেন তিনি। প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘গ্রুপে আমি আমাদের দারুণ সম্ভাবনা দেখছি। আমরা যদি নিজেদের খেলাটা খেলতে পারি আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, গ্রুপে আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। গত কয়েক বছর ধরে আমরা প্রত্যাশিত ক্রিকেট খেলছি। হতাশার ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে এই পর্যায়ে নিজেদের মানদ অনেক ওপরে তুলে নিয়ে এসেছি। ধারবাহিক ভাল ফলাফল উপহার দিয়েছি। তবে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। এটা সেরা সব দলের টুর্নামেন্ট। সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে।’ অধিনায়কের টগবগে আত্মবিশ্বাসের বড় কারণ নিজেদের শক্তি। ব্যাটিং লাইনআপও দুর্দান্ত। ওপেনিংয়ে হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক, এরপর ফ্যাফ ডুপ্লেসিস, ডি ভিলিয়ার্স, জেপি ডুমিনি ও ডেভিড মিলার। ইংল্যান্ডের কাছে ২-১এ সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অবস্থা ভাল নয়। র‌্যাঙ্কিংয়ে সাতে নেমে যাওয়া ম্যাথুজের দল ক’দিন আগে হেরেছে দুর্বল স্কটল্যান্ডের কাছে। প্রস্তুতি ম্যাচে সাড়ে তিন শ’ রান করেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছে। ম্যাথুজ তাই আগেই স্বীকার করে নিয়েছেন তারা আন্ডারডগ, ‘টুর্নামেন্টে কেউই আমাদের সম্ভাবনা দেখছে না। সত্যি বলতে, আন্ডারডগ হিসেবে শুরু করতে পেরে আমরা বরং খুশিই। ফেবারিট নই বলেই নির্ভার হয়ে খেলতে পারব। আর নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে কি হতে পারে মাঠেই তা দেখা যাবে। প্রতিপক্ষ নয়, আমার কেবল আমাদের সামর্থ্য নিয়েই ভাবছি।’ ২০০২ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লঙ্কানরা। ম্যাথুজ না খেললে আজ নেতৃত্ব দেবেন উপুল থারাঙ্গা। শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি (১১০) হাঁকিয়েছেন তিনি। কুশল মেন্ডিস ও দীনেশ চান্দিমালের ওপর ব্যাটিংয়ের অনেক কিছু নির্ভর করবে। আছেন তরুণ নিরোশান দিকওয়েল। অলরাউন্ড পজিশনে থিসারা পেরেরা, নুয়ান কুলাসেকারা, সেক্কুগে প্রসন্ন। বোলিংয়ে বড় নাম পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। ইনজুরির জন্য গত দেড় বছর খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। তবে আইপিএল দিয়ে দারণভাবে ফর্মে ফিরেছেন। ১৯৯২ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৬৫ ওয়ানডের ৩৪টিতে জয় দক্ষিণ আফ্রিকার, ২৯টিতে শ্রীলঙ্কার। টাই ও পরিত্যক্ত একটি করে। ২০১৪ সালের পর থেকে শেষ সাত দেখায় প্রতিবারই জয় প্রোটিয়াদের।
×