ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কার্ডিফের স্মৃতি ফিরবে ওভালে?

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ৩ জুন ২০১৭

কার্ডিফের স্মৃতি ফিরবে ওভালে?

স্পোর্টস রিপোর্টার, লন্ডন থেকে ॥ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে নামার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছিলেন, ‘সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই।’ মানে বাংলাদেশ যে এখন কতটা উন্নতি করছে, সেই ছোঁয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো শক্তিশালী যজ্ঞে দেখিয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কী তা পারা গেল? সহজেই জিতল ইংলিশরা। এবার বাংলাদেশের সামনে আছে অস্ট্রেলিয়া। যে দলটিকে একবারই হারাতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের কার্ডিফে। তাই প্রশ্নও উঠছে, ইংল্যান্ডেই যেহেতু খেলা; কার্ডিফের স্মৃতি কী ফিরবে ওভালে? সোমবার ওভালেই যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। মাশরাফি বলেছিলেন, ‘গত দুই বছরে দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সুযোগ করে নিয়েছি। তবে এ টুর্নামেন্টে আমরা শুধু খেলার জন্যই খেলব না। সবাইকে দেখিয়ে দেয়ারও সুযোগ।’ বাংলাদেশ আসলে অর্ধেকটা দেখিয়েও দিয়েছে। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি এবং মুশফিকুর রহীমের হাফ সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৫ রান করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে দেখিয়ে দেয়া গেছে। একটা হুঙ্কার সামনের প্রতিপক্ষদের জন্য ছুড়ে দেয়া গেছে। শুধু বোলিংয়েই পারা যায়নি। যদি বাংলাদেশ এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন রান বা তারচেয়ে বেশি রান করতে পারে; বোলিংটাও ভাল করে, তাহলে তো অসিদের হারানোও সম্ভব। হলেও হতে পারে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে দীর্ঘ ৬ বছর খেলেনা বাংলাদেশ। সেই ২০১১ সালে দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ওয়ানডে লড়াই হয়েছিল। এরপর আর দুই দল পরস্পরের বিপক্ষে খেলেনি। ২০১৫ সালে খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু বৃষ্টি ম্যাচটি হতে দেয়নি। যেহেতু এতদিন দুই দলের মধ্যকার খেলা হয়নি। কাগজে-কলমে বাংলাদেশ সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার ধারণা থাকলেও মাঠে তো লড়াই হয়নি। মাঠের লড়াইয়ে একদিন ভাল খেলে আবার জয় মিলতেও পারে। তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা রয়েছেন। আবার বল হাতে মাশরাফি, মুস্তাফিজ, রুবেলরা আছেন। সাকিবের সময়টা ভাল যাচ্ছে না। তবে এটাও তো ঠিক স্পিনে সাকিবই ভরসা। সাকিব জ্বলে উঠলে, স্পিনটা উইকেটে ধরলে; অস্ট্রেলিয়া কুপোকাত হতে কতক্ষণ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ১৮টিতেই হেরেছে। জিতেছে একটি ম্যাচ। সেটি সেই কার্ডিফে। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ নেটওয়েস্ট সিরিজে খেলে। মোহাম্মদ আশরাফুলের ১০০ রানে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। প্রতাপশালী অসিদের দুমড়ে মুছড়ে দেয়। তখনই বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটকে আগমনী বার্তা জানান দেয়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরও ১২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। একযুগ ধরে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আরেকটি সুযোগ খুঁজছে বাংলাদেশ। এখন সেই সুযোগটি কাজেও লেগে যেতে পারে। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে যে কোন দলের জন্যই হুমকিস্বরূপ। দলটি প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরছে। র‌্যাঙ্কিংয়েও নিজেদের ৬ নম্বরে নিয়ে এসেছে। যদিও ইংল্যান্ডের কাছে হারায় আবার সাতে নেমে গেছে। তবে উন্নতির ধারা কিন্তু ঠিকই বজায় রেখেছে। অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর এবার সুযোগও বলা চলে। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা যে সবাইকে দেখিয়ে দেয়ার কথা বলছে, অসিদের হারালে সেটা আরও বেশি মজবুত ভিত পাবে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে সব দলকেই তিনবার বা তার বেশিবার হারিয়েছে। শুধু অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে একবার। একাধিকবার হারানোর ক্ষুধাও মেটানোর সুযোগ আছে। তা সম্ভবও। গত দুই বছরে বাংলাদেশ দারুণ ক্রিকেট খেলছে। এই সময়ে বাংলাদেশের সামনে যে দলই পড়েছে, হয় হেরেছে; নয়ত বিপাকে পড়েছে। এমন উন্নতির সময়ে অস্ট্রেলিয়ার গায়েও কী হারের আঁচ লাগিয়ে দিতে পারবে না বাংলাদেশ? খেলাটা ক্রিকেট। যে কোন কিছু সম্ভব। অস্ট্রেলিয়াকে আবার হারানোও সম্ভব। আর হারালেই তো কার্ডিফের স্মৃতি ওভালে ফিরে আসবে।
×