ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেহেরপুরের আম যাচ্ছে ইউরোপে ॥ দাম কমায় চাষীর ক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩ জুন ২০১৭

মেহেরপুরের আম যাচ্ছে ইউরোপে ॥ দাম কমায় চাষীর ক্ষোভ

সংবাদদাতা, মেহেরপুর, ২ জুন ॥ মেহেরপুরে আমের বাম্পার ফলন হলেও বাজার দর নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে প্রতিটি বাগানে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রফতানির লক্ষ্যে ব্যাগিং পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা আম পরিপুষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, আমের বাজারদর নিয়ে চাষীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। এছাড়া পরিপক্ব না হওয়া পর্যন্ত খোলাবাজারে আম বিক্রি না করার পরামর্শ দেন তিনি। হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলি, আ¤্রপলিসহ নানা জাতের আম উৎপাদনে দেশজুড়ে কদর রয়েছে মেহেরপুরের। বিশেষ করে দেশজুড়ে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে হিমসাগর ও ল্যংড়া আমের। ২য় বারের মতো এ বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে রফতানি হতে যাচ্ছে মেহেরপুরের হিমসাগর আম। প্রতি বছরই আমের চাষ করে লোকসানের মুখে পড়ে জেলার ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। কিন্তু গত বছর থেকে মেহেরপুরের আম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রফতানি হওয়ায় সেই লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিয়েছে চাষী। এ বছর ব্যাপক হারে বিদেশে আম রফতানির লক্ষ্যে প্রতিটি বাগানের আম পরিপুষ্ট হয়েছে। হলুদ রং ধারণ করেছে আম। অনেক বাগানেই গাছ থেকে খোলা আম পাড়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বাজারদর না পাওয়ায় এ বছরও চিন্তিত চাষীরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলায় ২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে গেল বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ব্যাগিং পদ্ধতিতে ১২ মেট্রিকটন আম রফতানি হয়েছে। কেজি প্রতি ৯৫ টাকা হারে দাম পেয়েছিল চাষী। লাভবান হওয়ায় এবছরও রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ আম যার পরিমাণ আড়াই শ’ মেট্রিক টন। চলতি বছর রফতানিযোগ্য আমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ টাকা কেজি। যা গত বছরে তুলনায় ১০ টাকা কম। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে আম চাষিদের মাঝে। তাদের দাবি গতবারের তুলনায় শ্রমিক খরচ ও উৎপাদন খরচ বেড়েছে। রফতানিযোগ্য কেজি প্রতি আম উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক্সপোর্টাররা গাছ থেকে সেরা আমগুলো কিনবেন। বাকি আম বিক্রি করতে হবে স্থানীয় বাজারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ে আরও ১০ দিন আগে চুক্তিবদ্ধ চাষীদের সাথে আম নেয়ার কথা ছিল তাদের। নির্ধারিত সময়ে আম নেয়ার কথা থাকলেও তা না নেয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে তারা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে হিমসাগর আম রফতানির এক্সপোর্টার আবুল হোসেন জানান, বিদেশে জিপিপির মূল্য ১২০ টাকা থেকে নেমে এসেছে ১০০ টাকার নিচে। এছাড়াও গেল দুই মাস এক্সপোর্ট বন্ধ থাকায় বাজার দখল করে নিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের আম অনেক কম দামে বিক্রি হওয়ায় তাদেরও কম দামে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম কম দেয়ার কথা স্বীকার করে এক্সপোর্টার এ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বাইরে থেকে একটি আমের ব্যাগ আমদানি করে কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে লাগছে ৪ টাকা। এতে আমের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
×