ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল ॥ দেখার কেউ নেই

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৩ জুন ২০১৭

কলাপাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল ॥ দেখার কেউ নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২ জুন ॥ দুর্যোগ ঝুঁকির গ্রাসে থাকা সাগরপাড়ের জনপদ কলাপাড়া। এই জনপদে এখন নদীপথে চলছে অনুমোদনহীন অসংখ্য যাত্রীবাহী নৌযান। অভ্যন্তরীণ রুট ছাড়াও সাগর মোহনা, রামনাবাদ, আগুনমুখা এমনকি সাগরপথ পাড়ি দিয়ে এসব যান এখন ফ্রি স্টাইলে চরম ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী বহন করছে । এছাড়া মালবাহী অনেক নৌযানও চলাচল করছে। কলাপাড়া উপজেলা সদরের স্লুইসঘাট, গোডাউনঘাটের পূর্বদিকে, ফেরিঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব যান ছেড়ে যায়। এছাড়াও মহিপুর, আলীপুর থেকেও ছোট ছোট যান যাত্রী বোঝাই করে চলাচল করছে। এসব যানের নেই কোন ফিটনেস। নেই কোন লাইফ জ্যাকেট কিংবা লাইফ বয়া। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাকের ডগায় অন্তত অর্ধশত যান প্রতিদিন এভাবে যাত্রীবহন করছে। উত্তাল নদী কিংবা সাগর মোহনা এমনকি সাগরে চলাচলের সময় এসব যান ডুবে প্রাণহানির মতো বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। আইডব্লিউটিএসহ উপজেলা প্রশাসন এসব যান চলাচল বন্ধে কিংবা অভ্যন্তরীণ নিরাপদ রুটে চলাচলে বাধ্যকতার পাশাপাশি বয়া লাইফ জ্যাকেট রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেনি। মানুষ দায় ঠেকে নিত্য চলাচলে এ যান ব্যবহার করছে। তবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়লে যাতে বয়া কিংবা লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করতে পারে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কলাপাড়া থেকে তালতলী, নিউপাড়া, বড়বগী, ছোটবগী, নিজকাটা, ফতেহপুর, কাঁঠালপাড়া, টুঙ্গিবাড়িয়া, ফুলবুনিয়া, তেগাছিয়া, পক্ষিয়াপাড়া, মধুখালী, ঢোস, বাবলাতলা, চারিপাড়া, ধানখালী, গাইয়াপাড়া, গাববাড়িয়ার সঙ্গে প্রতিদিন এসব যান যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। এছাড়া মহিপুর-আলীপুর থেকে পাথরঘাটা-বরগুনা এমনকি খুলনা পর্যন্ত চলাচল করছে মালবাহী কিছু যানবাহন। একই সঙ্গে উত্তাল রামনাবাদ-আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে ছোট্ট লঞ্চ চলাচল করছে প্রতিনিয়ত। ওই নৌযানেও পর্যাপ্ত সংখ্যক লাইফ বয়াসহ লাইফ জ্যাকেট রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়া উত্তাল এ নদীপথে চলাচল করছে স্পীডবোট। তাও তদারকির প্রয়োজন। যাত্রীদের বক্তব্য, তারা অপেক্ষাকৃত কম খরচে এসব যানবাহনে চলাচল করছেন। ঝুঁকি জেনে এবং মেনেই তারা চলছেন। এসব যানে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও চলাচল করছে। খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, এ যান অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া না থাকলে ওই নৌযান বন্ধ করা প্রয়োজন। অনেক ছোট ফাইবার বোট রয়েছে। সাত-আটজন মানুষ চলাচল উপযোগী এ যানে ওভার লোড করে যাত্রী তোলা হয়। এমনকি ছাদেও যাত্রী নেয়া হয়। এ নৌযানের মালিক মাহতাব সিকদার, নসু মিয়া, ছিদ্দিক জানান, জীবনের প্রয়োজনে তারা এ যানে যাত্রী টানেন। এ নৌযান থেকে আবার বাল্কহেড ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন নামের সংগঠনকে বাৎসরিক এক হাজার-পনেরো শ’ টাকা নবায়ন ফি দিতে হয়। ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, এ নৌযানের সকল মালিককে ডেকে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানে যাত্রী চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।
×