ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবহনে নতুন সেবা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ৩ জুন ২০১৭

পরিবহনে নতুন সেবা

ডিজিটাল যুগে পরিবহন সেবা কেন পিছিয়ে থাকবে। সেখানেও নতুন সুবিধা ও আধুনিকতা যুক্ত হোক এটাই প্রত্যাশা। এমন একটি সুসংবাদই মিলেছে বৃহস্পতিবারের জনকণ্ঠে। ঠিক একমাস পর এই নতুন পরিবহন সেবা পেতে যাচ্ছেন ঢাকাবাসী। পরবর্তীকালে এটি সারা দেশেই সম্প্রসারিত হবে। সরকার অনুমোদিত এ্যাপসভিত্তিক এই যাত্রীসেবা চালু হচ্ছে ‘হ্যালো’ নামে। মোবাইল ফোনে অ্যাপ ব্যবহার করে ডাকা যাবে গাড়ি। যেটি অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী মূল্যে যাত্রী বহন করবে। পরিবহন সেবা প্রতিষ্ঠানটির আবেদনে বলা হয়, দেশে আনুমানিক অর্ধ লক্ষাধিক রেন্ট-এ কার অনুমোদনহীন যাত্রী পরিবহন করে আসছে। এ সেক্টরকে বিআরটিএ-এর রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এনে সফটওয়্যার ও ডিভাইস সংযোজনের মাধ্যমে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনলে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে নতুন মাত্রা যোগ হবে। এতে রেন্ট-এ কার ও যানবাহনের নিরাপত্তা, যাত্রী নিরাপত্তাসহ বিআরটিএ বছরব্যাপী বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে। উল্লেখ্য, হ্যালো এমন একটি সেবা, যা ট্যাক্সিচালক ও যাত্রী উভয়েই ব্যবহার করতে পারেন। কোম্পানির নিজস্ব কোন ট্যাক্সিক্যাব বা প্রাইভেটকার নেই। অনলাইন থেকে ‘হ্যালো’ এ্যাপস ডাউনলোড করা যাবে। এরপর ই-মেইল ও ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে চালক ও যাত্রীকে। তারপরই তাঁরা এর সেবা নিতে পারবেন। ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহন নিয়ে অভিযোগ ও ভোগান্তির শেষ নেই। কর্মস্থলে ও বিভিন্ন প্রয়োজনে নানা গন্তব্যস্থলে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোটি মানুষকে একান্ত বাধ্য হয়ে ভিড়ে ঠাসা বাস-মিনি বাসের যাত্রী হতে হয়। যানজট ছাড়াও বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য যানবাহন থামানোর কারণে নিত্যদিন অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। যেসব নাগরিকের ব্যক্তিগত গাড়ি কেনা কিংবা তা রক্ষণাবেক্ষণের সামর্থ্য নেই অথচ বেশি ভাড়া দিয়ে হলেও সময় বাঁচিয়ে গন্তব্যস্থলে যেতে চান, সমস্যাটা তাদেরই বেশি। কারণ ট্যাক্সি ক্যাব, অটোরিক্সার নিদারুণ স্বল্পতা। রাজধানীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য। প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। ঢাকা মহানগরীতে সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার। এর মধ্যে বৈধ অটোরিকশা ১২ হাজার ৮৩০টি। সরকার গত ১ নভেম্বর থেকে মিটার রিডিংয়ে ভাড়া নির্ধারণের নির্দেশ দেয়। নজরদারির জন্য রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। যাত্রীরা সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়লেও তা দেখার যেন কেউ নেই। যেভাবে রাজধানীতে মানুষ বাড়ছে সেভাবে বাড়ছে না পরিবহন। ফলে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। উন্নত বিশ্বের কথা থাক, এশিয়ার দেশগুলো, বলা যেতে পারে পার্শ্ববর্তী দেশের শহরের মতো সুশৃঙ্খল ও পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা আমাদের দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে আজও গড়ে ওঠেনি। ট্যাক্সি এখানে সোনার হরিণ। সিএনজিচালিত অটোরিক্সাগুলো অত্যন্ত স্বেচ্ছাচারী। যাত্রীর প্রয়োজন নয়, তারা দেখে নিজেদের সুবিধা। অথচ চাহিবামাত্র যাত্রীর গন্তব্য অভিমুখে গাড়ি হাঁকানো আবশ্যিক শর্তের মধ্যেই পড়ে। আমরা মনে করি, যাত্রীসুবিধা নিশ্চিত করার জন্য করণীয় কোন কিছুই উপেক্ষা করার সামান্যতম সুযোগ নেই। রাজধানীবাসী যাত্রীর প্রয়োজনের দিকটি বিবেচনা করলে জরুরী ভত্তিতে ট্যাক্সি ক্যাব ও অটোরিক্সার সংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানোর বিকল্প নেই। এর আগে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন ‘উবার’ চালু হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের বৈধতা প্রাপ্তিতে সেটিতে কিছু সমস্যা রয়েছে। তারপরও মানুষ এতে উপকৃত হয়েছে। আশা করা যায় ‘হ্যালো’ পরিবহনও নগরীর যাত্রীদের প্রয়োজন মিটিয়ে সুনাম অর্জন করবে।
×