ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পিজমে কাবু ইন্টারনেট দুনিয়া

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৩ জুন ২০১৭

ট্রাম্পিজমে কাবু ইন্টারনেট দুনিয়া

একটি মাত্র শব্দ যে ইন্টারনেট দুনিয়াকে মাতিয়ে তুলতে পারে, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরো দুনিয়াজুড়ে এ নিয়ে তোলপাড়- এটি কি একটা গোপন বার্তা? যদি তাই হয়, তাহলে কার জন্য ছিল সেই সিক্রেট মেসেজ? নিশ্চয় রাশিয়া। শেষ পর্যন্ত এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে হলো হোয়াইট হাউসকে। কিন্তু তাতে কি রহস্য কেটেছে, না-কি আরও ঘনীভূত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি টুইট করেছিলেন, তাতে ‘কভফেফে’ নামে একটি শব্দ লিখেন। এটি এমন একটি শব্দ, যার আভিধানিক কোন অর্থ নেই। তিনি লিখেছিলেন, ‘ডেসপাইট দ্য কনস্ট্যান্ট নেগেটিভ প্রেস কভফেফে’Ñ অর্থাৎ ‘অব্যাহত নেতিবাচক প্রেস কভফেফে সত্ত্বেও’। শুধু ওইটুকুই এরপর পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই প্রেসিডেন্ট হয়তো চলে গিয়েছিলেন বিছানায়। সারারাত টুইটটি ছিল, আর এরপর বুধবার সকালেই বলা যায় ভেঙ্গে পড়ে ইন্টারনেট। এ নিয়ে শুরু হয় নানা কৌতুক, টিক্কা-টিপ্পনী, আমোদ-হুল্লোড়Ñ মজা করতে থাকেন পুরো বিশ্বের ইন্টারনেট জগতের মানুষেরা। বুধবার হোয়াইট হাউসের নিয়মিত প্রেসব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক এ নিয়ে প্রশ্ন করেন প্রেস সচিব শন স্পাইসারকে। তিনি জানতে চান যে প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সত্যিই উদ্বেগের কিছু আছে কি না। জবাবে স্পাইসার ওই টুইট নিয়ে যা বলেন, তাতে বরং রহস্য আরও বাড়ে। স্পাইসারের উত্তর ছিল: ‘না, প্রেসিডেন্ট এবং মাত্র অল্প কয়েকজনই জানেন তিনি সত্যিকার অর্থে কী বলতে চেয়েছেন। ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় পর ট্রাম্প নিজেই টুইটটি মুছে দিয়ে আরেকটি টুইট করেনÑ ‘কভফেফের সত্যিকার মানে কে বের করতে পেরেছে? উপভোগ করুন। অর্থাৎ ট্রাম্প নিজেও রহস্য খোলাসা করেননি, বরং সবাইকে খানিকটা খোঁচা মেরেছেন বলেই মনে হয়। তবে এরই মধ্যে মাতামাতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। কেউ কেউ টি-শার্ট বানিয়ে ফেলেছেন এই শব্দ লিখে, যা আবার বিক্রিও হচ্ছে। কেউ একজন ‘কভফেফে ডট ইউএস’ এই ডোমেন নাম কিনে ফেলেন। অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী জানান যে তারা ভাল করে ঘুমাতেও পারেননি। কারণ সবারই চেষ্টা ছিল কে কার চেয়ে এক কাঠি বেশি সরেস জবাব দিতে পারে। আমেরিকার সেলিব্রিটি কমেডিয়ান জিমি কিমেল তার টুইটে লেখেন, ‘যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি বিষণœ করেছে তাহলো আমি জানি আমি কখনই কভফেফের চেয়ে হাস্যকর কিছু লিখবো না।’ এরপর ইউরোপে শুরু হয় আরেক দফা হৈচৈ। ওই শব্দ নিয়ে টুইটার এ্যাকাউন্টও তৈরি হয়।- ‘কভফেফে দ্য স্ট্রং’ নামের এক এ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয় ট্রাম্পের অদ্ভুতুড়ে শব্দ তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। শন স্পাইসার ‘কভফেফে’-এর কোন মানে করতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছে যে এটি ছিল টাইপের ভুল এবং প্রেসিডেন্ট আসলে ‘কাভারেজ’ শব্দটি লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাক্যটি শেষ না করেই তিনি টুইটটি পোস্ট করে দেন, আর কেউ হয়তো ভুলটি ধরিয়ে দেননি। খবরে বলা হয়েছে মাঝেমধ্যেই ট্রাম্প বিতর্কিত মন্তব্য করেন এসব টুইটের মাধ্যমেÑবানান ভুলও করেন হরহামেশা। কিন্তু তার কোন টুইটইÑযাকে এখন ট্রাম্পিজম বলা হচ্ছে, এতটা আলোড়ন তুলতে পারেনি, যতটা তুলেছে ‘কভফেফে’। ট্রাম্পের এই টুইট কিন্তু নজর এড়ায়নি নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের। ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ নিয়ে রীতিমতোও মজা করেন। তার মন্তব্য ছিল, আমার মনে হয়েছিল এটা রাশানদের জন্য একটা গোপন বার্তা’ ছিল। -বিবিসি
×