স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘এ যাবতকালের সর্ববৃহৎ বাজেট চার লাখ কোটি টাকা। শুনতে ভাল লাগে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই বাজেট সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা?’
বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, বড় বাজেট বাস্তবায়ন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্চ। বড় রকমের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সত্যিই কষ্টসাধ্য। এ কারণেই বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ হয়।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করব, নিশ্চয় এই বাজেট যেন বাস্তবায়ন করতে পারে। আরেকটা জিনিস দেখব, এই বাজেট জনকল্যাণমুখী কিনা? এই বাজেটে ভ্যাট ধরা হয়েছে ১৫ শতাংশ। ইতোমধ্যেই বাজারে অনেক জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, প্রায় ডবল। চালের দাম ৪০ টাকার উপর চলে গেছে। এই ভ্যাটের পর জিনিসপত্রের দাম যদি আরও বাড়ে তাহলে সকলেই বিপদের সম্মুখীন হবে।’
এরশাদ বলেছেন, ‘সরকারের কাছে আবেদন থাকবে, আপনারা বাজেট বাস্তবায়ন করবেন। যাতে করে এই বাজেটের মধ্য দিয়ে আমাদের গরিব মানুষগুলো একটু সুখের মুখ দেখেন। আমরা আশাবাদী।’
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আরও বলেছেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে রহমত চাই। ইসলাম সারাবিশ্বে বিপদে সম্মুখীন। আমাদের বানানো হচ্ছে সন্ত্রাসী। বাংলাদেশে ইসলাম যেন প্রতিষ্ঠিত হয় সে বিষয়ে আল্লাহর কাছে রহমত চাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে ইসলাম মসজিদ-মাদরাসায় সীমাবদ্ধ। ইসলাম যেন ঘরে ঘরে যায় এ জন্য সকলেই দোয়া করবেন।’
পশ্চিমা দেশগুলোকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেছেন, ‘লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আমরা দুঃখিত। কিন্তু প্রতিদিন কত হাজার মুসলমান মারা যাচ্ছে! আপনারা কেন লিবিয়া গেলেন, কেন বোম্বিং করলেন? আমাদের ধ্বংস করছেন আপনারা, গৃহহারা করছেন আপনারা। আর আমাদের কেন দোষারোপ করছেন? একটি ছেলে যদি দেখে তার বাবা-মা মারা গেছে, বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে; তাহলে তো তার প্রতিশোধের মন জাগবেই। আমাদের ইসলাম সেটা বলে না। তবুও মানুষ তো মানুষই। আমাদের দোষারোপ করবেন না। আপনি ইরাক ধ্বংস করেছেন, লিবিয়া ধ্বংস করেছেন, সিরিয়া ধ্বংস করেছেন। আপনি কী পৃথিবীর মালিক, যে কোন দেশে আপনি যাবেন, আর ধ্বংস করবেন? আর আমাদের দোষারোপ করেন আমরা সন্ত্রাসী। আমরা সন্ত্রাসী নই, মুসলমান সন্ত্রাসী হতে পারে না। আমরা আল্লাহর ধর্মে বিশ্বাসী, আমরা সন্ত্রাসী নই।’
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে ও পার্টির যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল আলম রুবেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর রাজধানীতে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। গুলশানের ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় এরশাদ ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।
আজ শনিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছে বিরোধীদল জাতীয় পার্টি। রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে ৪৮ রাষ্ট্রদূতকে দলের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
