ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রবীন্দ্র সাহিত্য অনুপ্রাণিত অতঃপর মাধো মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ৩ জুন ২০১৭

রবীন্দ্র সাহিত্য অনুপ্রাণিত অতঃপর মাধো মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চনাটকে নান্দনিক উৎকর্ষ সাধনের অভিপ্রায়ে গড়ে উঠেছে নতুন নাট্যদল মেঠোপথ। নতুন এ নাট্যদলটি ঢাকার মঞ্চে নিয়ে এলো নতুন নাটক ‘অতঃপর মাধো’। কবিগুরুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ও ভাবনাতাড়িত প্রযোজনাটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন অলোক বসু। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে নাটকটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ। অতিথি হিসেবে উদ্বোধনী আলোচনায় অংশ নেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল আকতারুজ্জামান। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্রযোজনাটির নির্দেশক অলোক বসু। নাটকটি নির্মাণ ভাবনা প্রসঙ্গে অলোক বসু বলেন, রবীন্দ্রনাথের ‘ছড়ার ছবি’ শীর্ষক শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থের মাধো নামের বাড়ি পালানো এক কিশোরের গল্প উঠে এসেছে প্রযোজনাটিতে। এছাড়া আমি শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রসাহিত্যের নাট্যায়ন শীর্ষক কর্মশালায় অংগ্রহণের সুবাদে জানতে পারি কবিগুরু পাটকল শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়েও সেচ্চার ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর বাংলায় পাটকল শ্রমিকদের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। অন্যায়ভাবে শ্রমিক ছাঁটাই, কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে অতিরিক্ত শ্রমদানে বাধ্য করা, সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দেয়াসহ নানা সঙ্কটে অসন্তোষ ছড়িয়ে পাটশিল্পে। পাটকল শ্রমিকরা বাধ্য হয়েছিল ধর্মঘটে যেতে। এসব শ্রমজীবী মানুষের জীবনের করুণ ক্ষণে রবীন্দ্রনাথ নিশ্চুপ থাকতে পারেননি। তিনি বিবৃতি দিয়েছেন। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন সমস্যার আশু সমাধানে। এ নিয়ে অনেক প্রবন্ধে লিখেছেনও তিনি। আর এভাবেই রবীন্দ্র সাহিত্যকর্ম ও তার সমাজভাবনাকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে এ প্রযোজনা। নাটকের গল্পে বাড়ি পালানো কিশোর মাধো পাটকলে কাজ নেয়। পাটকলে লাগাতার ধর্মঘট, অনিশ্চিত জীবন, প্রলোভনÑ এসব কিছু পিছনে ফেলে একসময় সে পা বাড়ায় ছিঁড়ে যাওয়া শেকড়ের সন্ধানে। অতঃপর নাটকে আবির্ভূত হয় বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানো এক নস্টালজিক মানুষ। স্মৃতি-সত্তার পরিক্রমণে কিছু ইমেজ এসে সামনে দাঁড়ায়, যা কখনও প্রতিবাদী, কখনও রোমান্টিক, কখনও স্বাধীনচেতা, কখনও দুরন্ত আবার কখনও মৃত্তিকাসংলগ্ন। প্রযোজনাটিতে নাটকীয়তা বা ঘটনার ঘনঘটার পরিবর্তে আছে কথকের কথাÑ বর্ণনা ও অভিনয়ে ইমেজগুলো মূর্ত করে তোলার চেষ্টা। সব মিলিয়ে ১২টি চরিত্রে সাজানো হয়েছে প্রযোজনাটি। এই চরিত্রগুলোকে রূপ দিয়েছেন দুই শিল্পী শামীমা আক্তার মুক্তা ও শারমীন সঞ্জিতা খানম। আলোক পরিকল্পনার পাশাপাশি পোশাক পরিকল্পনা করেছেন ফয়েজ জহির। কোরিওগ্রাফি করেছেন শারমিন সোমা ও সামিউন জাহান দোলা। সঙ্গীতায়োজন করেছেন শিশির রহমান।
×