ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মণীশ রায়

গল্প ॥ মান্যবর

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২ জুন ২০১৭

গল্প ॥ মান্যবর

উৎরাইল বাজারে ওসি আকরাম সচরাচর আসেন না। যারা আসেন তাদের পদবি নিচের দিকে; কনস্টেবল বা বড়জোর এএসআই। কিন্তু দুদিন ধরে ওসি সাহেব স্বয়ং সকাল-বিকেল এখানকার রূপা গেস্ট হাউজে এসে চা পান করছেন আর পাওনাদারের মতো অনুযোগভরা কণ্ঠে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, ‘কুন ব্যত্যয় য্যান না হয়। নইলে পুরান কেইস আবার থইল্যার ভিত্রে থেইকা বাইর অইব। বুঝলেন দাদা-বৌদি?’ কথাগুলো হাস্যরসের অংশ হলেও ফাঁপা বেলুনে গ্যাস ভরার মতো দাদা-বৌদির অন্তর নিমিষে শিউরে ওঠে; শঙ্কা আর হতাশায় যষ্টি মধুর চিমসানো শেকড়ের মতো খরখরে ও শুকনো লাগে সবকিছু। দাদা মানে জ্যাকব সাংমা আর বৌদি হলো সুলতা দাওয়া। হাসিখুশি দিলদার টাইপ নিঃসন্তান দম্পতি। কদিন আগেও রূপা গেস্ট হাউজের দিনরাত অবিরাম হৈহুল্লোড়ের ভেতরে নিজেদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে; এখন নষ্ট টিউবলাইট; সমস্ত চাকচিক্য আর জৌলুশ বহু আগে অপহৃত। বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে ওদের দোতলা গেস্ট হাউজ। উপরে মোট দশখানা কামরা আর নিচতলায় খাওয়ার হোটেল। যারা এখানে বেড়াতে আসে তারা সরকারী কোনো বাংলোয় ঠাঁই না পেলে, সাধ্যের ভেতর খাওয়া-থাকা আর রুচিসম্মত পরিবেশের কারণে, চোখ বুঁজে রূপা গেস্ট-হাউজের কামরা দখল করে নেয়। এ বাড়িটা সুলতা দাওয়ার মায়ের সম্পত্তি। বাড়িটা আগে একতলা ছিল; পরিবারের সবাই মিলে এখানেই বসবাস করত। বিরিশিরির আদিবাসী একাডেমিতে জ্যাকব কিছু দিন কেয়ারটেকারের কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়লে সুলতাই ওকে এখানে গেস্ট হাউজ খোলার পরামর্শ দেয়; নিজেরা বাড়ির পেছনে ঢেউটিনের লম্বা দোচালা ঘর বানিয়ে সরে আসে। আদি একতলাকে দোতলা বানিয়ে ব্যবসা শুরু করতে বেশ কবছর সময় লাগে ওদের; প্রথমে ওরা এক দরজার একটি ভাত-মাছের দোকান খুলে বসে। কাস্টমারদের খুশি করবার জন্য প্রতিদিন যীশুর নাম জপে সুলতা নিজ হাতে তখন চুলা ধরাত। বাড়তি কোনো আয়োজন নেই; যেভাবে ঘরদোরে খাওয়া-দাওয়া হয় ঠিক সেরকম; শাক-ভাত-ভর্তা আর সোমেশ্বরীর মাছ। সবই তরতাজাÑ সকালে জ্যাকব কাছের বাজার থেকে সব কেনাকাটা করে নিয়ে আসে। দেখতে দেখতে ওদের রেস্টুরেন্টটি জমে ওঠে। একদরজা থেকে দুই দরজা, একতলা হলো দোতলা। বছর দুয়েকের মাথায় গেস্ট হাউজটি উদ্বোধন করলেন দুর্গাপুরের ইউএনও সাহেব। কর্মকর্তা মহাশয় সংস্কৃতি-ঘেঁষা নরোম দিলের মানুষ; বইর ভাষা ধার করে একখানা গদগদ গেরস্থালি ভাষণ দিয়ে শেষমেষ ঘোষণা দেন, ‘এখন থেকে দুর্গাপুরে সরকারী সব অনুষ্ঠানের খাবার সরবরাহ করবে এই রূপা গেস্ট হাউজ। কারণ, তাদের পরিচ্ছন্ন ও সুস্বাদু খাওয়ার মান ও পরিবেশনায় আমি মুগ্ধ।’ বলা বাহুল্য, বৈকালিক ভাষণের আগেভাগে পরিবারসহ ইউএনও সাহেব ও তার সভাসদগণের জন্য একখানা ভোজসভার আয়োজন করেছিল সুলতা-জ্যাকব দম্পতি। হয়তো এরই ঢেঁকুর তুলছেন মান্যবর! এ আয়োজনের পর থেকেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ গেস্ট হাউজ; তরতর করে এগিয়ে চলে জ্যাকব আর সুলতার থাকা-খাওয়ার এ ব্যবসা। এতটা যে জমে যাবে ওরা তা ভাবেনি। সামাল দিতে রীতিমতো হিসশিম খেতে হয় প্রতিদিন। সব সেরে গভীর রাতে গেস্ট হাউজের পেছনে ঢেউটিনের লম্বা দোচালা ঘরটায় ওরা সুখ-সুখ মন নিয়ে শুতে আসে। স্ত্রীর দিতে তাকিয়ে মাঝে মাঝে জ্যাকব এ সময় হাসিমুখে ফোঁড়ন কাটে, ‘ম্যাডাম, এইবার এই বাড়িটা কিনি নেও। তুমার বেবছা তো ছফল।’ ‘একদম চুপ। আমি কিনুম ক্যানু? আমি মাইয়া না? এমনেই পামু। কিনুম ক্যান? তুমি আছলেই একটা বেকুব।’ আদুরে ধমক লাগায় সুলতা। ‘বসের ছুখই তো আমার ছুখ।’ ধমকটি গায়ে না মেখে সুখী বেড়ালের মতো চোখ বুঁজে ফেলে ও। অর্থহীন নানা কথা বলতে গিয়ে ওরা এ সময় এক স্বপ্নের ভেতর সেঁধিয়ে যায়। আতশবাজির মতো সেই স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়; কল্পচোখে বিশাল আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্ররাজির দিকে তাকিয়ে ভাবে, কোনটা ওদের। অথচ এরকম এক রোদ-মাখানো সুখের সময় গেস্ট হাউজের সামনে খোলা জায়গায় এক খ্রিস্টান যুবকের লাশ পাওয়া গেল। মদ্যপ অবস্থায় স্ট্রোক হয়ে যুবকের মৃত্যু হলেও অসামাজিক কার্যকলাপের ধোঁয়া তুলে এর দায় চাপল রূপা গেস্ট হাউজের উপর। ব্যস, এদিনে যা কিছু লাভ হয়েছিল, সব পুলিশ আর উকিলদের পিছু ছুটতে ছুটতে নিঃশেষ হয়ে এলো। নানা চড়াই-উৎরাইর পর মাত্র কদিন হলো ফের রূপা গেস্ট হাউজটির দরজা খুলেছে। আগের মতো সেরকম পর্যটক আর এখন নেই। হুজ্জুতির আশঙ্কায় রূপায় কেউ ভিড়তেই চাইছে না। রোজ সুলতা-জ্যাকব দম্পতি গেস্ট হাউজের দুয়ার খুলে পাশাপাশি দুটো চেয়ার পেতে বসে থাকে। স্থানীয় এক-দুজন দুপুরের খাওয়া খেতে আসে বটে; তবে তাও বেশির ভাগ বাকির খাতায় লিখে রাখতে হয়। আর রাতের বেলায় এটি একেবারেই নিঝুম পড়ে থাকে; আগ বাড়িয়ে কেউ আসতে চাইলেও রিক্সাওলা পর্যন্ত সতর্ক করে দেয়, ‘স্যর, এইডার উপর পুলিশের নজর আছে। অন্য গেস্ট হাউজে চলেন।’ সুলতার চোখের সামনে এখন অন্ধকার; যখন তখন ইচ্ছেমতন জ্যাকবের উপর মেজাজ-মর্জি ফলায়। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গেও বাঁধন আলগা; আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় বাজারে বাকি-বক্কার পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত ব্যবসাটা ছেড়েই দেবে কিনা তা-ই ওদের ভাবনার বিষয় এখন। এ রকম যখন অবস্থা তখনি ওসি আকরাম এসে জানালেনÑ দুজন ভিআইপি ও তাদের পরিবার একুশে ফেব্রুয়ারির ছুটি উপলক্ষে আদিবাসী একাডেমিতে এসে উঠবেন। তারপর সারাদিন ঘোরাঘুরি করে রূপায় লাঞ্চ সারবেন। ওসি সাহেবের উপর এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বর্তেছে। তাই, এ কদিন প্রাত্যহিক সব কাজকর্ম কাটছাঁট করে ভিআইপি পরিচর্যায় মগ্ন রয়েছেন তিনি। অভ্যাগতদের আসবার চারদিন আগে থেকে তাদের সকালবেলার বেড-টি থেকে শুরু করে দুপুরে খাওয়ার মেন্যু পর্যন্ত ওর ঠোঁটস্থ । থানার একমাত্র টহল-গাড়িটিও তিনি দান করেছেন এ খাতে। নিজে চড়ছেন অধীনস্থ এক এসআইর মোটরসাইকেলে; তবু শেষ রক্ষা যেন হয়Ñ একটা ট্রেনিং, বিদেশে কাজের সুযোগ কিংবা নিদেনপক্ষে এখানকার নিরুত্তাপ একাকিত্ব থেকে ঢাকায় স্থানান্তরের ব্যবস্থাÑ যে কোন একটি তো অন্তত আলোর মুখ দেখুক! দুপুর বেলায় একটি ঝকঝকে মাইক্রোবাস থেকে অভ্যাগতরা গেস্ট হাউজের সামনে এসে নামলেন। প্রথমজন পুলিশের বড় কর্মকর্তা নুরুল হক। পাতলা-সাতলা বেঁটেখাটো গড়ন; দ্বিতীয়জন সরকারী আমলা আমিনুল ইসলাম। উঁচু-লম্বা ঢ্যাঙামতন দেখতে। দুজন একে অপরের বন্ধু। ছুটি উপলক্ষে এখানে বেড়াতে আসা। আয়োজক উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা স্বয়ং। সবার চেহারাই পান খাওয়া জিহ্বার মতো হাসি-খুশি। মন ভরতি অফুরান কৌতূহল। গারো সমাজের ইতিবৃত্ত সম্পর্কে কে কত ভালো জ্ঞান রাখেন তা নিয়ে খাওয়ার টেবিলে চলছে মল্লযুদ্ধ। এ রকম শিকারি হিং¯্র এক আদিবাসী গোষ্ঠী কীভাবে পুতু-পুতু বাঙালী খ্রিস্টান বনে গেল তা নিয়ে নিজেদের ভেতর চুলছেঁড়া বিশ্লেষণের অন্ত নেই। ওসি সাহেব এক কোণে দাঁড়িয়ে সজাগ দৃষ্টি ফেলে রেখেছেন খাওয়ার টেবিলে। কোথাও যেন কোন কমতি না থাকে। নুরুল হক যদি অসন্তুষ্ট হন তো সব গুড়ে বালি। ওসির স্বপ্নসাধ সব একেবারে ধূলিসাৎ! এ সময় আমিনুল ইসলাম মনের আনন্দে গুন গুন করে উঠলেন, ‘মোদের গরব মোদের আশা আ-মরি বাংলা ভাষা...’ চারপাশজুড়ে তখন দাঁত-জিহ্বায় নিরলস খাদ্রগ্রহণের অবিরাম চপাচপ শব্দ। গান শোনার সময় নেই কারো। নুরুল হক চোখ পাকালেন, ‘দোস্তো, খেতে বসে এসব গান গাইতে নেই। ঠিক না।’ গম্ভীরভাবে বারকয় মাথা দোলান ডানে-বাঁয়ে। আমিনুল লজ্জা পেয়ে বেসুরো গান থামিয়ে পরক্ষণেই চাপা কণ্ঠের দুর্বার আঁতেল-আলোচনায় ডুব দেন। এক সময় ইশারায় জ্যাকব আর সুলতাকে ডেকে পাশে বসান ওরা। তারপর আকনাগাড়ে ওদের ছোটো ছোটো কৌতূহলী প্রশ্ন করতে শুরু করেন। মনে হচ্ছে, ঢাকায় ফিরে দুজন একখানা একখানা করে মোট দুখানা কেতাব লিখবেন এদের জীবনী ঘিরে! অভ্যাগতদের স্ত্রী-সন্তানেরা তখন ষোলো পদের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ; কোনটা খাবে আর কোনটা ফেলবে তা নিয়ে টেবিলজুড়ে রীতিমতো চেঁচামেচি- হৈচৈ। শুধু নুরুল হক আর আমিনুল ইসলাম এ জগতে নেই; তারা তখন ব্যস্ত রয়েছেন স্বামী-স্ত্রী হিসাবে সুলতা-জ্যাকবের ভূমিকা নিয়ে! নুরুল হক জ্যাকবকে প্রশ্ন করলেন, ‘বউকে ভয় পান খুব? মাতৃতান্ত্রিক পরিবার তো আপনাদের, তাই। ’ জ্যাকব মাথা নুইয়ে সলজ্জভাবে একগাল হাসল কেবল। কোনো উত্তর দিল না। জয়েন্ট সেক্রেটারি আমিনুল মুচকি হেসে সুলতাকে প্রশ্ন করলেন, ‘খুব চোটপাট করেন নাকি ম্যানেজার সাহেবের উপর?’ বলে ইশারায় অদূরে রাখা জ্যাকব ব্যবহৃত টেবিল আর চেয়ারটিকে দেখিয়ে দেন। মধ্যবয়স্ক সুলতা হাসিমুখে সব সামাল দিচ্ছিল; প্রশ্নটি কানে যেতেই ঘাড় ঘুরিয়ে সে নির্দ্বিধায় উত্তর দিল, ‘আমরা তো ছামি-স্ত্রী। ভালোবাছি দুজন দুজনেক।’ বলে মুখ ঘুরিয়ে নিলো একপাশে; মুখাবয়বজুড়ে প্রচ্ছন্ন বিরক্তিবোধ। খাওয়া-দাওয়া শেষ হবার পর জ্যাকব চটজলদি একটি বিল তৈরি করে সেটি হাতে নিয়ে একপাশে কাঁচুমাচু দারোয়ানের মতো দাঁড়িয়ে রইল। এটি এখানে এভাবে পেশ করা নিয়ে সে কিছুটা মানসিক দোলাচলে ভুগছে। টেনশনে মাঝে মাঝে কোটের পকেটে একবার হাত ঢুকাচ্ছে আর বের করছে। সবাই যখন মাইক্রোবাসে উঠতে যাবেন তখন মরিয়া জ্যাকব অনেকটা নির্লজ্জ ভঙ্গিমায় বিলটি ওসি সাহেবের দৃষ্টি-সীমানায় নিয়ে এলো। সেদিকে আকরাম একঝলক তাকালেন মাত্র। তারপর তাচ্ছিল্য ও অবহেলার সুরে বলে উঠলেন, ‘এসব পরে দেখা যাবে। দেখছেন না কীরকম ব্যস্ত? স্যররা যাক।’ চাপা গলা ওসির। সঙ্গে সঙ্গে জ্যাকবের দৃষ্টি থেকে উজ্জ্বল জোনাক পোকা দুটো দপ দপ করে নিভে গেল। পাশে দাঁড়ানো সুলতা সব লক্ষ্য করছিল; ওরও বুকের ভেতরটা হু-হু করে ওঠে এ সময়। ভিআইপি বহনকারী মাইক্রোবাস ও ওসি সাহেবের মোটরসাইকেল চলতে শুরু করলে হতাশায় ওরা একেবারে ভেঙে পড়ে। সুলতা ভেজা চোখে প্রশ্ন করে, ‘তুমি কি টাকাটা ধার নিছিলা?’ জ্যাকব মাথা নুইয়ে ফেলে। দুর্মূল্যের বাজারে মাছ-মুরগি-হাঁস-গরু-সবজি কিনতেই নগদ হাজার পাঁচ হাত গলিয়ে বেরিয়ে গেছে। পুরোটাই ধার নেয়া । সুলতা চিৎকার দিয়ে ওঠে, ‘তুমি একটা গাধা।’ বলতে বলতে ফুঁপিয়ে ওঠে ও। ওর চোখের সামনে দলা দলা অন্ধকার। একটু বাদে ওদের চমকে দিয়ে মাইক্রোবাসটি গেস্ট হাউজের সামনে এসে দাঁড়ায়। ছোটোখাটো গড়নের নুরুল হক গাড়ি থেকে নেমে জ্যাকবকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনাদের বিলটা বোধ করি পরিশোধ হয়নি, না? ’ জ্যাকব ভাবলেশহীন ভালোমানুষী দেখাতে গিয়ে উত্তর দেয়, ‘ওসি স্যর দিবে। কুন অছুবিদা তো নাই। ’ ‘ও কেন দেবে ? আচ্ছা, কত হয়েছে বলুন তো?’ তাড়া দেন তিনি। সুলতা জ্যাকবের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে এক লহমায় বলে ওঠে, ‘ছ হাজার পাঁচছত কুড়ি টাকা।’ নুরুল হক সঙ্গে সঙ্গে টাকাটা পরিশোধ করলেন। তারপর জ্যাকবের দিকে তাকিয়ে কৌতুকভরা সুরে বলে উঠলেন, ‘খুব চাপে থাকেন, না?’ জ্যাকব এবারও কোন উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করে রইলো। এ প্রশ্নের কী উত্তর হতে পারে তা ওর জানা নেই। এবার তিনি সরস গলায় ওকে পরামর্শ দেন, ‘আন্দোলন করেন। আমাদের নারীরা তো এটা খুব করছে। ওরা আর আপনাদের ভেতর কি তফাত আছে কিছু?’ বলেই খিক খিক করে হেসে উঠলেন। যেন মনোরম এক হাস্যরস উপহার দিলেন তিনি। পাশে দাঁড়ানো ঠোঁটকাটা সুলতা কিছুই বলল না। কারণ, হারিয়ে যাওয়া টাকা নিজের পকেটে ফেরত আসায় ও বেজায় খুশি। দু-চারটা উল্টাপাল্টা কথায় কি-ই বা যায় আসে; টাকার কাছে সব অতি তুচ্ছ।
×