ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড আগুন লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২ জুন ২০১৭

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড আগুন লড়াই আজ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ যেন আরেকটি বিশ্বকাপ ফাইনাল! গত ওয়ানডের বিশ্বকাপে শিরোপার জন্য লড়াই করেছিল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড। এবার আরেকটি মর্যাদার আইসিসি টুর্নামেন্টে দু’দলের লড়াই। বার্মিংহামের এজবাস্টন প্রস্তুত হয়ে আছে মঞ্চ হিসেবে। পরস্পরের মধ্যে লড়াই দিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু করবে দু’দল। টানা দুইবার এ আসরের শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া গতবার ফাইনালেই উঠতে পারেনি। এবার শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন তাদের। অপরদিকে, আইসিসির কোন ইভেন্টে একমাত্র এ আসরেই ২০০০ সালে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। ট্রান্স-তাসমান চিরশত্রু অসিদের বিরুদ্ধে আজ জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে তারা। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে মাঠে গড়ানোর কথা রয়েছে। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেবারই প্রথম কোন আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সাধারণত এই বড় ক্রিকেটীয় ইভেন্টগুলোয় বরাবরই ব্যর্থ কিউইরা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তাদের জন্য সুবাতাস বয়ে আনে ২০০০ সালের দ্বিতীয় আসরেই। ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার কোন বড় আসরের ফাইনালে ওঠা এবং শিরোপা জেতার স্বাদ নেয় তারা। এর ৯ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো পুনরাবৃত্তি করে ফাইনালে ওঠার। কিন্তু সেবারই প্রথম চরম প্রতিপক্ষ অসিদের সঙ্গে কোন আসরের ফাইনাল খেলেও জিততে পারেনি কিউইরা। সেঞ্চুরিয়ানে অসিদের কাছে ৬ উইকেটে পরাস্ত হয়ে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল। ফাঁড়া কাটানোর একটা ব্যাপার ছিল। ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত কিউইদের জন্য যেন যে কোন আসরের ফাইনাল ছিল অধরা। সেই খরা কাটানোর পর এখন তারা নিয়মিতই বড় আসরগুলোর ফাইনালে উঠছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপেরও ফাইনালে ওঠে তারা। এবারও সেই চিরশত্রু অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যাওয়াতে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি কিউইদের। যন্ত্রণাটা আছে বেশ ভালভাবেই। এবার আইসিসির কোন বড় ইভেন্টে প্রতিশোধ নেয়ার পালা তাদের। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে দুই নম্বরে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া। বড় ইভেন্টগুলোতে বরাবরই বেশ সফল অসিরা। তবে এই প্রথম কোন বড় আসরে দলকে নেতৃত্ব দেবেন স্টিভেন স্মিথ। আইসিসি ইভেন্টে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার শুরুটা অবশ্য হয়েছে গত বছরই। টি২০ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি হয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। সে ম্যাচে অবশ্য ৮ রানে জিতে গিয়েছিল কিউইরা। কিন্তু এছাড়া কিউইদের বিরুদ্ধে বরাবরই সফল অসিরা আইসিসির বড় ক্রিকেটীয় ইভেন্টগুলোয়। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শতভাগ সাফল্য অসিদের। এখন পর্যন্ত প্রথম দুই আসর (১৯৯৮ ও ২০০০) ব্যতীত সব চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড লড়াই হয়েছে। আর প্রতিবারই কিউইদের নাস্তানাবুদ করে জয় তুলে নিয়েছে অসিরা। তবে সর্বশেষবার ২০১৩ সালের আসরে তাদের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। সেই দলের অনেকখানিই পরিবর্তন এসেছে। বলতে গেলে আমূল পরিবর্তনই এসেছে। তবে পারফর্মেন্স তেমন পরিবর্তিত হয়নি। স্মিথের দল ফেবারিট হিসেবেই এ আসরে নামছে। ২০০৬ ও ২০০৯ সালের টানা দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। গত আসরে অবশ্য ফাইনালই খেলতে পারেনি। এবার নিজেদের সেরা হিসেবে ফিরে পাওয়ার মিশন। সে কারণে আজ জেতার লক্ষ্যেই নামবে অসিরা। এজবাস্টনের মাঠটি তুলনামূলকভাবে কিছুটা ছোট। বরারবরই এখানে প্রচুর রান হতে দেখা গেছে। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি ম্যাচেও দেখা গেছে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গভূমি হিসেবে অপেক্ষা করছে এজবাস্টন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৪১ রান করেও ২ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা ৩৫৬ রান করেও নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬ উইকেটে পরাজিত হয়। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও এটা বোঝা গেছে যে জেতার জন্য বোলারদের অগ্নিপরীক্ষায় পড়তে হবে আর ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে বড় ও ঝড়ো ইনিংস বেরোতে হবে। এ মাঠে একবারই মোকাবেলায় নেমেছিল দু’দল ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। সেটা বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে আর মাত্র দুইবার লড়াই হয়েছে অসি-কিউই। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে কার্ডিফে ৫ উইকেটে হারা অসিরা ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৭ উইকেটে জিতে প্রতিশোধ নিয়েছিল। আবার সেই ইংল্যান্ডের মাটিতে মুখোমুখি হচ্ছে তারা। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর এখন পর্যন্ত ৯ ওয়ানডে খেলেছে দু’দল। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড উভয় দলই ৪টি করে ম্যাচ জিতেছে। অন্যটি হয়েছে পরিত্যক্ত। অবশ্য, সার্বিকভাবে অসিরা অনেক এগিয়ে। ১৩৫ ওয়ানডের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৯০ আর নিউজিল্যান্ডের মাত্র ৩৯। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দু’দলের যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তা আরেকটি উত্তেজনাপূর্ণ উপভোগ্য ম্যাচ উপহার দেবে এজবাস্টনে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
×