ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

প্রযুক্তিবিমুখ ঢাকার প্রেক্ষাগৃহ, ভোগান্তির শিকার দর্শক

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ জুন ২০১৭

প্রযুক্তিবিমুখ ঢাকার প্রেক্ষাগৃহ, ভোগান্তির শিকার দর্শক

মনোয়ার হোসেন ॥ ছুটির দিনে সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নিলেন সপ্তাহের বাকি দিনগুলোয় কর্মব্যস্ত থাকা সাঈদ আহমেদ। বাড়ির আশপাশের প্রেক্ষাগৃহে চলমান চলচ্চিত্রের খবর জানতে আশ্রয় নিলেন তথ্যপ্রযুক্তির। এই সূত্রাপুরবাসী প্রথমেই বাড়ির কাছাকাছি দূরত্বের স্বনামধন্য প্রেক্ষাগৃহ মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমা হলে চলতি সপ্তাহে চলমান ছবিটির খোঁজ নিতে চাইলেন ইন্টারনেটে। গুগলসহ কোন সার্চ ইঞ্জিনেই পাওয়া গেল না শহরের ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হলটির ওয়েবসাইট। এরপর তিনি একইভাবে বাসার নিকটবর্তী অন্য প্রেক্ষাগৃহে চলমান চলচ্চিত্রের খোঁজখবর নিলেন। সে আশায়ও গুড়েবালি। বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স, শ্যামলী এলাকার শ্যামলী সিনেমা হল ও যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ছাড়া আর কোন প্রেক্ষাগৃহের তথ্যই পাওয়া গেল না। নিউমার্কেট এলাকার বলাকা সিনেওয়ার্ল্ডের নামমাত্র একটি ওয়েবসাইট থাকলেও তাতে পুরনো একটি ছবির পোস্টার ছাড়া আর কিছুই পড়ে না নজরে। সেখানে নেই চলতি সপ্তাহে চলমান ছবি, সময়সূচী কিংবা টিকেটের মূল্য। অবশেষে সেদিনের মতো সিনেমা দেখে বিনোদন প্রাপ্তির পরিকল্পনা থেকে সরে এলেন সাঈদ আহমেদ। এই ঘটনায়ই স্পষ্ট হয় ঢাকাই সিনেমার দুর্দশার সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহের করুণ চিত্র। মৌলিক গল্পের অভাব, নির্মাণশৈলীর দুর্বলতা, কারিগরি অদক্ষতাসহ নানা সঙ্কটে ভুগছে ঢাকাই সিনেমা। চলচ্চিত্রের দুর্বল দশায় একে একে বন্ধ হচ্ছে সিনেমা হল। মধ্যবিত্ত হল বিমুখ হওয়া সিনেমায় লগ্নিকারকেরও অভাব তীব্র। ঢাকাই সিনেমার পড়তি দশার জন্য এমন অনেক নেতিবাচক কারণের সঙ্গে রয়েছে সিনেমা হলের পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা। দর্শকদের জন্য সিনেমা হলের পরিবেশ ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মধুমিতা-বলাকার মতো স্বনামধন্য সিনেমা হলগুলোর প্রযুক্তি বিমুখতা এই সঙ্কটকেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। প্রেক্ষাগৃহের সঙ্গে প্রযুক্তির এই দূরত্বে বিস্ময় প্রকাশ করেন সাঈদ আহমেদ। জনকণ্ঠের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, দেশে এখন অনলাইন শপিং থেকে শুরু করে গাড়ি ভাড়া করা, পানি কিংবা বিদ্যুত বিলসহ বহুমুখী কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে ইন্টারনেট সেবার আওতায়। এমন প্রেক্ষাপটে দর্শকের সুবিধার্থে সিনেমা হলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্রগুলো চূড়ান্তভাবে পিছিয়ে আছে প্রযুক্তির ব্যবহারে। এই পিছিয়ে থাকার জন্য হল মালিকদের উদাসীনতার সঙ্গে রয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) উদ্যোগহীনতা।
×