ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অনন্য রেজা করিম

মনীষার ফিরে আসা

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১ জুন ২০১৭

মনীষার ফিরে আসা

দীর্ঘ সময় বিরতির পর আবার রুপালি পর্দায় ফিরছেন মনীষা কৈরালা। এ সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত নতুন ছবি ‘ডিয়ার মায়া’। যার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন একদা বলিউডে ঝড় তোলা এই নেপালী কন্যা। আগামী আগস্টে ৪৭-এ পা রাখবেন মনীষা। ‘ডিয়ার মায়া’ ছবিতে তার অভিনীত চরিত্রটি মধ্যবয়সী এক নিঃসঙ্গ নারীর। যার বিয়ে হয়নি। মায়াদেবী নামের এই মহিলা পার্বত্য শহর সিমলায় বসবাস করেন নিজের ছোট্ট বাড়িটিতে। মধ্যবয়সী এই নারী এক সময় অজ্ঞাত প্রেমিকের পাঠানো প্রেমপত্র পেয়ে অবাক হন। এই বয়সে তিনি প্রেমপত্র পাবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি। কোনভাবে তার নিঃসঙ্গ জীবন কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ পাওয়া প্রেমপত্র তার জীবনটাকে পাল্টে দিতে থাকে। অজ্ঞাত প্রেমিকের পাঠানো প্রেমপত্রগুলো তার মনে রং ধরায় নতুন করে। মধ্য বয়সে পৌঁছেও প্রেমের আবেশে ভেসে যেতে থাকেন মায়া। এক সময় প্রেমিকের খোঁজে নিজের ছোট্ট বাড়িটি বিক্রি করে অজানার উদ্দেশ্য যাত্রা করেন। পরে জানা যায়, অবিবাহিতা মধ্য বয়সী মায়াদেবীর প্রতিবেশী দুই তরুণী অনেকটা মজা করতেই প্রেমিক সেজে তার কাছে প্রেমপত্রগুলো পাঠাত। তারা ভাবতেও পারেনি স্রেফ মজা করে পাঠানো প্রেমপত্রগুলো মধ্য বয়সী এই নারীর জীবনে এতটা সিরিয়াস নাটক সৃষ্টি করবে। তেমনি ঘটনা নিয়ে আবর্তিত ‘ডিয়ার মায়া’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন নতুন নারী চিত্রনির্মাতা সুনয়না ভাটনাগর। এ ছবির মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে তার অভিষেক হচ্ছে। ব্যতিক্রমধর্মী এবং হৃদয়ছোঁয়া গল্পের সিনেমা ‘ডিয়ার মায়া’র মাধ্যমে আবার অনেক দিন পর বলিউডে ফিরলেন মনীষা কৈরালা। ২০১২ সালে জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকটা আড়ালে চলে গিয়েছিলেন বলিউডের এই সুন্দরী মেধাবী অভিনেত্রী। নেপাল, ভারত এবং অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত চিকিৎসার পর এক সময় ক্যান্সার মুক্ত হন মনীষা। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসবেন তিনি, আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন, অভিনয় করবেনÑ ভাবা যায়নি। মনীষা কৈরালা তার বর্তমান বয়সের সঙ্গে মানানসই একটি চরিত্রে রূপদানের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় ফিরছেন। ইউটিউবে তার অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ডিয়ার মায়া’র টেলার মুক্তির পর সবার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছেন। দর্শক এবং সমালোচক মহলে মনীষার কামব্যাক মুডি হিসেবে ‘ডিয়ার মায়া’ দারুণ আগ্রহের সঞ্চার করেছে। একজন ভার্সাটাইল অভিনেত্রী হিসেবে কোনভাবেই ফুরিয়ে যাননি তিনিÑ এটা মনীষা প্রমাণ করেছেন। ইতোমধ্যে ভারতীয় পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে বেশ লেখালেখি হচ্ছে। সবাই প্রিয় অভিনেত্রী মনীষাকে আবার রুপালি পর্দায় নতুন একটি সিনেমায় দেখার প্রতীক্ষায় রয়েছেন। সাধারণ গৎবাধা কোন চরিত্রে নয় তিনি তার ফিরে আসার জন্য এমন একটি অসাধারণ ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্র বেছে নিয়েছেন যা দর্শকদের আলোড়িত করবে নিঃসন্দেহে। মায়াদেবী চরিত্রের নানা বিষয় ফুটিয়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন ক্যান্সার জয়ী এই অভিনেত্রী। নেপালের বিখ্যাত এক রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা মনীষা বলিউডে পা রেখেছিলেন নব্বই দশকের শুরুতে। ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যবসা সফল ছবি ‘সত্তদাগর’-এর মাধ্যমে তার অভিষেক হয়েছিল অভিনয়ে। রাজনীতিকে ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ না করে গ্ল্যামার জগতকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। বলিউডের একজন জনপ্রিয় সেরা অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে তার বেশি সময় লাগেনি। ’১৯৪২-এ লাভ স্টোরি, ‘আকেলা হাম আকেলা তুম’, ‘অগ্নিসাফী’, ‘গুপ্ত’, ‘বোম্বে’, ‘দিল সে’, ‘মন,’ ‘লজ্জা’, ‘কোম্পানি’, ‘এসকেপ ফ্রম তালিবান’ প্রভৃতি ছবিতে তার দুর্দান্ত অভিনয় ক্রমেই একটি ভাল অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। মেধা, যোগ্যতা এবং পরিশ্রমের ফসলও তিনি ঘরে তুলেছিলেন। একটা সময়ে তিনি ছিলেন বলিউডের সেরা সুন্দরী মেধাবী জনপিয় সব নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন মনীষা। বহু পুরস্কার পেয়েছেন ভাল অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে। হিন্দী ছবির পাশাপাশি দক্ষিণী তামিল তেলেগু ছবিতেও কাজ করেছেন। আবার অনেক দিন পর হিন্দী সিনেমায় নিজের ফিরে আসা প্রসঙ্গে মনীষা কৈরালা সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে বলেন, এটা আমার দ্বিতীয় ইনিংস নয়। ‘ডিয়ার মায়া’ ছবির চিত্রনাট্য বেশ চমৎকার যা, আমার মনে ধরেছিল খুব। তাই মণপ্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছি। আমি তো বলিউড ছেড়ে চলে যাইনি। আমার জন্য ‘ডিয়ার মায়া’ দ্বিতীয় ইনিংস হতে যাবে কেন। আমি বলিউডে ছিলাম এবং আছি এখনও। তবে আগের মতো খুব বেশি বেশি ছবিতে অভিনয় করতে চাই না এখন। বছরে একটি করে সিনেমায় অভিনয় করতে চাই। সেখানে আমি আমার বয়সের সঙ্গে মানানসই চরিত্র পাব এবং যাতে অভিনয় করে আমি সন্তুষ্ট হতে পারব, তেমন ছবিতেই আমি অভিনয় করব।
×