ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সফল পরীক্ষায় মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামর্থ্য ব্যাপক বৃদ্ধি

এ্যান্টি আইসিবিএম পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১ জুন ২০১৭

এ্যান্টি আইসিবিএম পরীক্ষা

যুক্তরাষ্ট্র আইসিবিএম (ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল) প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। মার্কিন মিসাইল ডিফেন্স এজেন্সি মঙ্গলবার এ খবর দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া আইসিবিএম তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলে দাবি করার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর এ দাবি করল। খবর এএফফি ও সিএনএনের। ক্যালিফোর্নিয়ার ভান্ডেনবার্গ বিমান ঘাঁটি থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ইন্টারসেপ্টরটি লঞ্চ করা হয়। মার্কিন সেনাবাহিনীর দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার ওই বিমান ঘাঁটি থেকে উৎক্ষেপিত আইসিবিএম ইন্টারসেপ্টরটি একই সময় মার্শাল আইল্যান্ডসের রিগ্যান টেস্ট সেন্টার থেকে ছোড়া আইসিবিএমের ডামি মধ্য আকাশে প্রতিরোধ করে। প্রথমে ভূমি থেকে একটি রকেট ছোঁড়া হয়। গ্রাউন্ড বেজড মিডকোর্স ডিফেন্স (জিএমডি) পদ্ধতি ব্যবহার করে এটি শূন্যে নিক্ষেপ করা হয়। এরপর ‘এক্সো এ্যাটমোস্ফেরিক কিল ভিয়েকল’ দিয়ে আইসিবিএমের ডামি শূন্যে ধ্বংস করে দেয়া হয়। মার্কিন মিসাইল ডিফেন্স এজেন্সির পরিচালক ভাইস এডমির‌্যাল জিম সাইরিং বলেন, ‘দেশ রক্ষায় প্রযুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের প্রতিরক্ষা সামর্থ্য প্রমাণ করেন। যে কোন ধরনের বাস্তব হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সামর্থ্য আমাদের আছে।’ জিএমডি নিয়ে এর আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এত ভাল ফল পাওয়া যায়নি। এর আগে ২০১৪ সালের পরীক্ষা ধীরগতির জন্য ব্যর্থ হয়েছিল। তখন জিএমডি পরীক্ষার জন্য আইসিএম ছাড়া সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের ডামি ব্যবহার করা হয়েছিল। আইসিবিএম ব্যবহার করে জিএমডি পরীক্ষা প্রযুক্তিটির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে সাইরিং মনে করেন। ভূমি থেকে ইন্টারসেপ্টর ছুঁড়ে মাঝপথে আইসিবিএম ঠেকিয়ে দেয়ার মতো সক্ষমতা অর্জন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও আসল আইসিবিএম দিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি। তা সত্ত্বেও এ ঘটনাকে মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগাতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার একদিন পর মাকিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এই সাফল্য দেখাল। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোারিয়া নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চাালিয়ে যাচ্ছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জেফ ডেভিস বলেছেন, মঙ্গলবারের পরীক্ষাটি অবশ্য উত্তর কোরিয়াকে মাথায় রেখে করা হয়নি। সার্বিক বিষয় বিবেচনা পরীক্ষাটি চালান হয়েছে। এর মধ্যে পিয়ংইয়ংও একটি কারণ। দেশটি একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ভূখ-েও আঘাত হানার হুমকি দিচ্ছে তারা। তাই বাস্তব কারণে আমাদেরও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র সামর্থ্য বাড়িয়ে চলেছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানতে পারে। ২০০৮ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র এ নিয়ে ১৮ বার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ইন্টারসেপ্ট পরীক্ষা করল। এর মধ্যে প্রথম পরীক্ষাটি সফল হওয়ার পর সর্বশেষ এই পরীক্ষা সফল হলো। তবে একে প্রাথমিকভাবে সফল ধরা হলেও এর বিস্তারিত তথ্য যাচাইয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ২০০২ সালে কর্মসূচীটি শুরুর পর এ পর্যন্ত এ খাতে চার হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। আলাস্কা ও ক্যালিফোর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি ইন্টারসেপ্টর বসানো রয়েছে। দেশটি প্রতি বছর সাধারণত দুবার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা পরীক্ষা চালিয়ে থাকে। মে মাসের শুরুর দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার ভান্ডেনবার্গ বিমানঘাঁটিতে একবার পরীক্ষা চাালিয়েছিল।
×