ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অতিষ্ঠ জীবন

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১ জুন ২০১৭

অতিষ্ঠ জীবন

বাংলাদেশ হলো ষড়ঋতুর দেশ। ষড় ঋতুর একটি হলো গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকাল বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ- এ দুই মাস নিয়ে গঠিত। এ সময় সারাদেশ শুষ্কতা আর গরমে ভরপুর থাকে। মাঝে মাঝে বৃষ্টির দেখা মেলে। বৈশাখী ঝড়েরও দেখা মেলে। কিন্তু মাঝে মধ্যে এর ব্যতিক্রমও ঘটতে দেখা যায়। প্রচ- গরমে চরম অস্বস্তিতে পড়ে যায় মানুষ। গরমে হাঁসফাঁস করে জনজীবন। তীব্র দাবদাহে দেশজুড়ে এক প্রকার অশান্তি বিরাজ করে। গ্রামাঞ্চলে এর প্রভাব তেমন না পড়লেও শহরের মানুষ গরমের কারণে বেশি অস্বস্তিতে পড়ে। রাজধানী ঢাকায় উঁচু উঁচু ভবন, গাছপালার অপ্রতুলতা, গিঞ্জি পরিবেশ আবহাওয়াকে আরও প্রতিকূল করে তোলে। গ্রীষ্মের এই গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় শহরের শ্রমজীবী মানুষরা। ঢাকার অলিতে-গলিতে, রাজপথের রিক্সাচালকদের কষ্ট চোখে পড়ার মতো। তাদের মাথার ওপর থাকে না কোন ছাতা বা মাথাল। সড়কে থাকে না কোন বৃক্ষের ছায়া, যেখানে তারা একটু বিশ্রাম করতে পারে। কেবল গামছা, তোয়ালে দিয়ে মাথাটুকু ঢেকে তারা রিক্সা চালায়। প্রচ- এ গরমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ফুটপাথের হকারদের অনেক দুর্ভোগ সহ্য করতে হয়। তারা মালামালের ওপর বসে মাথায় সামান্য গামছা দিয়ে রোদ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে। অপরদিকে রিক্সাচালকও গরম সহ্য না করতে পেরে অতিষ্ঠ হয়ে খালি গায়েই রিক্সা চালানো শুরু করে। একটু ঠা-া পরশের জন্য, তারা সুযোগ পেলে কাজের ফাঁকে কোন স্থাপনা বা পার্কের বৃক্ষের ছায়া খুঁজে জিরিয়ে নেয়। প্রাইভেট গাড়ি চালকরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কখনও কখনও গায়ের জামা খুলে গাড়িতে পিঠ ঠেকিয়ে শুয়ে বিশ্রাম নেয়। কেউ কেউ একটু অবসরে গরম থেকে বাঁচতে কিংবা একটু ঠা-া পরশ পেতে ঠা-া কোমল পানীয় পান করে। রাজধানীর বস্তি-মহল্লা ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা গরম থেকে বাঁচতে আশপাশের পকুর-ডোবায় গোসল করতে নামে, শিশুসহ আরও অনেকে এই প্রয়াস চালায়। একমাত্র গরম থেকে বাঁচতে বেশিক্ষণ পানিতে সাঁতার কেটে সময় কাটায়। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কুকুর ও পাখিরাও খোঁজে শীতল ছায়া। কারণ, তাই তো রাস্তায় জমে থাকা পানিতে গা ভেজায়, কখনও কখনও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে একটু শান্তির শীতল ছোঁয়া পেতে কুকুর ও পাখিরা দীর্ঘ সময় ধরে পানি পান করে। রোজ বিকেলে আমি যখন হাঁটাহাঁটি করি, এমন দৃশ্য আমার চোখে পড়ে। ভাবি, তারাও আমার মতো গরম থেকে বাঁচতেই হাঁটছেন। বিদ্যুত থাকে না বলে ঘরে থাকা কষ্টকর। অনেকে গাড়ির অসহ্য জ্যাম এবং বিরক্তিকর হর্ণ-ধোয়ায় ধূলা-বালিতে ক্লান্ত ঘর্মাক্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তির পর একটু আশ্রয় খোঁজে কোন স্থাপনার আড়ালে কিংবা বৃক্ষের ছায়াতলে। ঢাকা থেকে
×