ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশ-সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা!

প্রকাশিত: ২২:১০, ৩১ মে ২০১৭

পুলিশ-সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশ, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও মারধর করে চাঁদা আদায়, পত্রিকায় ব্যবসায়িক ও পাত্র-পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনার নামে মানুষদের ডেকে এনে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করতো আটককৃতরা। বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানীর ডেমরা থানাধীন কোনাপাড়ায় শাহজালাল রোড আয়েশা মঞ্জিল নামের বাড়ির ৪র্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে আন্ত:জেলা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পূর্ব শাখার একটি দল । আটককৃতরা হলেন আ. হালিম, রনি, মোবারক হোসেন, মোছা. রোজিনা, মো. সেলিম ওরফে ঘটক, মো. মঞ্জু, রফিক, মো. মোস্তফা ও হান্নান মাতাব্বর। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ওয়াকিটকি ও ২ জোড়া হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়। ডেমরায় পাত্রী দেখানোর নামে দুই জনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করার সময় তাদের আটক করা হয়। জিম্মি দুজন হলেন পাত্র আব্দুল আজিজ ও ঘটক আরমান। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সদস্যরা অভিনব কায়দায় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। নিজেদের আস্তানায় মানুষদের ডেকে এনে জিম্মি করে পাশে নারী বসিয়ে ও ইয়াবা রেখে ভিডিও করে। পরে পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মারধর করে মুক্তিপণ আদায় করে। উদ্ধার হওয়া ঘটক আরমান বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে আমি একটি বিয়ের কাজ সম্পন্ন করি। তখন প্রতারক সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিয়ের জন্য পাত্র দেখতে বলে। পরে আমি তার কথা মত পাত্র নিয়ে সেলিমের দেওয়া ঠিকানায় এলে তারা আমাদের আটকে ফেলে এবং পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মারধর করে। মেয়েদের সঙ্গে ছবি তুলে আমাদের বলে ‘বাঁচতে চাইলে টাকা দে’। পরে আমাদের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। অন্য দুই ভুক্তভোগী মো. আজিজুর রহমান ও খায়রুল জামান টিপু বলেন, ‘আমরা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। আমাদের ব্যবসা বড় করার জন্য পার্টনারের খোঁজে পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দিলে ১২ মে তারা আমাদের ফোন করে তাদের অফিসে যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর তারা আমাদেরকে রুমে আটকে ফেলে। এরপর কয়েকজন যুবক এসে পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলে তোরা ইয়াবা ব্যবসায়ী। এরপর মেয়ে ও ইয়াবা সামনে রেখে ভিডিও করে বলে, জীবন বাঁচাতে হলে ১০ লাখ টাকা দে। মো. আজিজুর রহমান ও খায়রুল জামান টিপু বলেন, সেখানে কিছু টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে এসে এই ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ডিবি’র যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘এসব চক্রের সঙ্গে যদি পুলিশের কোনো সদস্যের যোগসাজশ পাওয়া যায় তবে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলা করা হবে। এই চক্রের আরও সদস্য আছে, তাদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
×