ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে যায় বাংলাদেশ

স্বপ্ন যদি সত্যি হয়

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৩১ মে ২০১৭

স্বপ্ন যদি সত্যি হয়

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে বলা হয় ক্রিকেটের ‘মিনি বিশ্বকাপ’। অনেকে আবার প্রাক-বিশ্বকাপও বলেন। ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দ্বাদশ আসর বসছে। সেটাও এই ইংল্যান্ডে। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করার একটা মোক্ষম সুযোগ পাওয়া যায়। নিজেদের একটু ঝালিয়ে নেয়া যায়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসর বসছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে। ১ জুন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের পর্দা উঠবে। উদ্বোধনী ম্যাচে লন্ডনের কিংস্টন ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে ক্রিকেটের নতুন শক্তি বাংলাদেশ। একই মাঠে ফাইনালের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামবে ১৮ জুন। এবারের টুর্নামেন্টে মোট ৮টি দল অংশ নেবে। এই ৮টি দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল ৩টি করে ম্যাচ খেলবে। গ্রুপ পর্বের ১২টি ম্যাচের পর সরাসরি দুই সেমিফাইনাল এবং এরপর একই মাঠে অর্থাৎ যেখানে উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সেই কিংস্টন ওভালে আয়োজিত হবে স্বপ্নের ফাইনাল। ইংল্যান্ডের ৩টি মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। মাঠগুলো হচ্ছেÑ লন্ডনের কিংস্টন ওভাল, বার্মিহামের এজবাস্টন ও কার্ডিফের সাফিনা গার্ডেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেহেতু ৮টি দল অংশগ্রহণ করছে সে কারণে টেস্টভুক্ত ২টি দলকে বাদ পড়তে হয়েছে। বাদের তালিকায় রয়েছে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ে। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম আসর বসে ঢাকায়। দুঃখের বিষয় হলো সেবার আয়োজক খোদ বাংলাদেশই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। কেননা সেবার কেবলমাত্র টেস্ট পরিবারের সদস্য ৯ দেশ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, দ. আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন করা হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম শিরোপা জেতে দ. আফ্রিকা। রানার্স আপ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০০ সালে নতুন শতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসর বসে নন-টেস্ট প্লেয়িং দেশ কেনিয়ায়। এবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পায়। বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। মাত্র ১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। ৮ উইকেটে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ পুল-১-এ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে আবার শূন্য হাতে বিদায় নেয়। ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অবস্থা তথৈবচ। আবার হারতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দ. আফ্রিকার বিপক্ষে। সুতরাং আবার পত্রপাঠ বিদায়। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১০টি দল খেললেও মূল পর্বে খেলে ৮টি। কোয়ালিফাইং রাউন্ডে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেললেও একমাত্র জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়পুরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ও একমাত্র জয় পায়। ২০০৯ ও ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কোয়ালিফাই করতে পারেনি। এবারে কোন দুর্বল দল হিসেবে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলছে না। বরং একটি শক্তিশালী দল হিসেবে খেলছে। ২০১৫ সালে একাদশ বিশ্বকাপের আগে ও পরে নিউজিল্যান্ডকে ৩-০, জিম্বাবুয়েকে ৫-০, পাকিস্তানকে ৩-০, ভারতকে ২-১, দ. আফ্রিকাকে ২-১, ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়ে এবং সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ তিন ক্যাটাগরিতেই ১-১-এ সিরিজ ড্র করায় বাংলাদেশ এখন একটি অন্যরকম দল। এখন বাংলাদেশ যে কোন দলকে যে কোন মাঠে হারানোর ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশকে হারানোর কথা ভাববার আগে এখন যে কোন দলকে দশবার ভাবতে হয়। আর এখন তাই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা। আর তাই বাংলাদেশ যদি এবারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠে এবং শিরোপাও জয় করে আর কেউ অবাক হলেও আমি হব না। কেননা বাংলাদেশ এখন একটি ব্যালান্সড দল। তার সঙ্গে রয়েছে মাশরাফির অসাধারণ ক্যাপ্টেন্সি। আর তাই যে কোন স্বপ্নপূরণের শক্তি ও সামর্থ্য আমাদের দলের আছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ২ বার করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দ. আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা জিতেছে ১ বার করে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, দ. আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবগুলো আসরে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সর্বাধিক তিন বার করে ফাইনাল খেলার গৌরব অর্জন করেছে। দুইবার করে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ১৭ ইনিংসে ৫২.৭৩ গড়ে সর্বাধিক ৭৯১ রান করেছেন। এবং নিউজিল্যান্ডের কাই মিলস ১৫ ম্যাচে ১৭.২৫ গড়ে সর্বাধিক ১৫টি উইকেট নিয়েছেন। সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ লেখক পরিষদ
×