ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন জেলায় মোট ৮ জনের মৃত্যু ;###;নষ্ট হয়েছে অনেক গাছপালা ও কাঁচাবাড়ি ;###;লাখ লাখ লোক সরিয়ে নেয়াসহ পূর্ব প্রস্তুতির ফলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়েনি

ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক তবে ভাটার কারণে ঘটেনি জলোচ্ছ্বাস ॥ মোরার ছোবল

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩১ মে ২০১৭

ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক তবে ভাটার কারণে ঘটেনি জলোচ্ছ্বাস ॥ মোরার ছোবল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ভাটার সময় আঘাত হানার কারণে ঘটেনি কোন জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা। সরকারী উদ্যোগে পূর্ব প্রস্তুতি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা না থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজার সদরে ১, চকরিয়ায় ৩, পেকুয়ায় ১, রাঙ্গামাটিতে ২ জন ও ভোলার মনপুরায় একটি শিশু প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। উপকূল অতিক্রম করার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থলভাগে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় একশ’ কিলোমিটারের বেশি। স্থলভাগে আসার পর প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরার শক্তি কমতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে শত শত ঘরবাড়ি ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। জনমনে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে আশ্রয় নেয় হাজার হাজার উপকূলবাসী। তবে মঙ্গলবার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে নিজ নিজ বাসা-বাড়িতে ফিরেছে লোকজন। এদিন রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে দিনভর বৃষ্টি হয়। মঙ্গলবারও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। ফেরি চলে সীমিত পরিসরে। আবহাওয়া অধিদফতরের বিকেলের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোরা স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে রাঙ্গামাটি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বৃষ্টি ঝরিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে আজ রাত নয়টা পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। বিশেষ বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোরা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি বর্তমানে ‘স্থল গভীর নিম্নচাপ’ আকারে রাঙ্গামাটি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশেই অবস্থান করছে। এটি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়, তাই আরও বৃষ্টি ঝরিয়ে এটি দুর্বল হবে। ঘূর্ণিঝড়-পূর্ববর্তী আবহাওয়ায় ফিরে যেতে আরও ১০-১২ ঘণ্টা লাগবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তাফা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রামে কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং গাছপালা ভেঙ্গে পড়ার খবর পেয়েছেন তারা। প্রতিজেলায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ ॥ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তাফা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় রাতভর ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভোর রাত পর্যন্ত তিন লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতি জেলায় ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সবসময় পরিস্থিতি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কাজ তদারক করছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ॥ চট্টগ্রাম থেকে মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির ও কক্সবাজার থেকে এইচএম এরশাদ জানান, দেশজুড়ে প্রায় দু’সপ্তাহ প্রচ- দাবদাহের পর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হল লঘুচাপ। সেই লঘুচাপ শেষ পর্যন্ত পরিণত হল ঘূর্ণিঝড়ে। তবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নিয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তা-বের মহাবিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ পর্যন্ত উপকূল এলাকার মানুষ ও তিন পার্বত্য জেলা। বৃহত্তর চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কাঁচা ও আধাপাকা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ২০ সহস্রাধিক। হাজার হাজার গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুরো কক্সবাজার এলাকা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন ছিল। ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করায় প্রাণহানি হয়েছে কম। কক্সবাজার সদরে ১, চকরিয়ায় ৩, পেকুয়ায় ১, রাঙ্গামাটিতে ২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে সাগর উপকূল সংলগ্ন এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর মহাবিপদ সঙ্কেত কেটে যায়। এরপরই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে লোকজন পুনরায় নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে যেতে শুরু করে। উপকূলজুড়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে। মঙ্গলবার সকালে ঘূর্ণিঝড় মোরা প্রথম আঘাত হানে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে টেকনাফ, উখিয়া, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া হয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে। ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন সময়ে সাগরে ভাটা থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন উপকূলবাসী। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা বাড়িঘর ও গাছপালার। দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়নই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তর ধুরং ইউনিয়নের পশ্চিমাংশে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে দুপুরের পর জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। অনুরূপভাবে বাঁশখালী, মীরসরাই, সীতাকু-, আনোয়ারা, বোয়ালখালি, সাতকানিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি এবং রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বনজ সম্পদ ও কাঁচা বাড়িঘরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টার পর চালু হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম। ঘূর্ণিঝড়টি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় আবহাওয়া দফতর থেকে বিপদ সঙ্কেত ৩-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে আগামীকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে হালকা ও ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকার আভাস দেয়া হয়েছে। সকালে ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হানার পর দুপুর ১২টা পর পরই এটি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে স্থল নিম্নচাপে রূপ নেয়। মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা প্রায় ১২টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে ল-ভ- হয়েছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় অঞ্চল। কোথাও কোথাও স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাছপালা, ঘরবাড়ি এবং ক্ষেতের ফসলের। তবে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রমকালে সাগরে ভাটার টান থাকায় আরও বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে মানুষের সম্পদ। কক্সবাজারের চকরিয়া এবং একটি আশ্রয় কেন্দ্রে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাবে আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হতে পারে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত জারি ছিল কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে মূলত কক্সবাজার জেলায়। ভোর ৬টার দিকে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার অতিক্রম করতে শুরু করে মোরা। এরপর এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১শ’ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। প্রায় ২শ’ কিলোমিটার ব্যাসের এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সতর্কবার্তা ছিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, নোয়াখালী এবং চাঁদপুর পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির প্রায় ৫৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবী এবং রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউট ও আনসার ভিডিপির সদস্যরা ছিলেন প্রস্তুত। ঝুঁকির মধ্যে থাকা জেলা-উপজেলাগুলোতে পর্যাপ্তসংখ্যক আশ্রয়ণ কেন্দ্র স্থাপন করে সেখানে লক্ষাধিক মানুষকে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর থেকে তারা ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরতে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারে ক্ষতি হয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। বিশেষ করে টেকনাফ, উখিয়া এবং মহেশখালীতে ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ্য। সেখানে ভেঙ্গে গেছে শত শত গাছপালা। উড়ে গেছে সহস্রাধিক কাঁচা ঘরের চালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ শতাধিক পানের বরজ। মহাসড়কে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ায় অনেক স্থানে ছিড়ে গেছে বিদ্যুতের তার। এতে করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুরো কক্সবাজার জেলা বিদ্যুতহীন থাকে। জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষতি তুলনামূলক কম। তবে জেলার দুটি স্থানে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তন্মধ্যে চকরিয়ায় গাছ চাপায় রহমত উল্লাহ নামের একজনের মৃত্যু হয়। মরিয়ম বেগম নামের এক বৃদ্ধা মারা যান কক্সবাজার পৌরসভার একটি আশ্রয় কেন্দ্রে। আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। ঘূর্ণিঝড় মোরায় সাগর উত্তাল থাকলেও অমাবস্যা-পূর্ণিমার তিথি না থাকায় জলোচ্ছ্বাস তেমন জোরালো হয়নি। ভাটা থাকায় বাড়তে পারেনি উজানের পানি। ফলে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, উখিয়াসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা। ভেসে যায়নি কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ঘের তথা মৎস্য সম্পদ। সোমবার বিকেল থেকেই মাইকিং করে উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিয়ে আসা হয় বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। তাদের জন্য শুকনো খাবার এবং সেহরির ব্যবস্থাও করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরের পর তারা আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে যেতে থাকেন। ভাটা থাকায় রক্ষা ॥ ঘূর্ণিঝড় মোরা যখন তীরে আঘাত হানে তখন সমুদ্রে ছিল ভাটা। ফলে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার গতিবেগে এই ঝড়ের কারণে বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারেনি। অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা অর্থাৎ প্রতিমাসে সাধারণত দুবার প্রবল জোয়ারের তিথি থাকে। সৌভাগ্য যে, মোরার সময় প্রবল জোয়ারের তিথি ছিল না। এতেও উপকূলবাসী রক্ষা পেয়েছে। সেন্টমার্টিনে ক্ষয়ক্ষতি ॥ স্থল থেকে বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ক্ষতি হয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রবল বেগে বয়ে যাওয়া বাতাস উড়িয়ে নিয়েছে অসংখ্য বসতঘর। উপড়ে গেছে গাছপালা। নোঙ্গর ছিঁড়ে ভেসে গেছে অন্তত ১৫টি ফিশিং বোট। এ দ্বীপের অনেকেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। তবে জেলা প্রশাসনের তৎপরতা এবং প্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষতি হয়নি। এ জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা। চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম চালু ॥ ঘূর্ণিঝড় মোরা অতিক্রম করায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাখার পর চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বিপদ সঙ্কেত সাত নম্বরে উন্নীত হওয়ার পর সোমবার দুপুর ১২টায় সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম অর্থাৎ জাহাজ গমনাগমন এবং জেটি ও বহিঃনোঙ্গরে পণ্য উঠানামা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বাঁশখালী ॥ বাঁশখালী থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জোবাইর চৌধুরী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তা-বে বাঁশখালীর উপকূলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাত হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও কয়েক কোটি টাকার লবণের মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতাধিক মাঝিমাল্লাসহ আটটি ফিশিং বোট নিখোঁজ রয়েছে। উপজেলার গন্ডামারা ও শেখেরখীল ইউনিয়নে অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সকালে টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানার পর দুপুর ১২টার দিকে বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেলের উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে। ঘণ্টাব্যাপী ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে বাঁশখালীর উপকূল ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বাড়িঘর বিধ্বস্ত, যোগাযোগ বন্ধ ও বিদ্যুত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে বিধ্বস্ত বাঁশখালী পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন। ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা, ছনুয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকা কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খানখানাবাদ, গন্ডামারা ও ছনুয়া। রাঙ্গামাটি ॥ জনকণ্ঠের রাঙ্গামাটির নিজস্ব সংবাদদাতা মোহাম্মদ আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে রাঙ্গামাটিতে দুজন নিহত ও কয়েক শ’ কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়ক ও বিদ্যুত ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে গাছচাপা পড়ে রাঙ্গামাটি শহরের আসামবস্তি ও ভেদভেদী এলাকায় দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এরা হলোÑ স্কুলছাত্রী জাহিদা সুলতানা (১৪) ও হাজারা বেগম (৪০)। ঘূর্ণিঝড়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় কয়েক শ’ ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেছে এবং শতাধিক ঘর একেবারে ভেঙ্গে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পুরো জেলায় বিদ্যুত ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। হাজার হাজার বনজ ও ফলদ বৃক্ষ ভেঙ্গে পড়েছে। প্রচ- ঘূণিঝড়ে বেশকিছু পুলিশের ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন। কুতুবদিয়া ॥ আমাদের কুতুবদিয়া সংবাদদাতা হাসান কুতুবী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোরা সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, কক্সবাজার হয়ে কুতুবদিয়া অতিক্রম করার সময় এর আঘাতে ছয়টি ইউনিয়নের কাঁচা বাড়িঘর ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুপুরের পর জোয়ার হওয়ায় ধুরং ইউনিয়নের ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে সাগরের লোনা পানি প্রবেশ করেছে। প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী পুরো উপজেলায় প্রায় ছয় হাজার কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উত্তর ধুরং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নে তিন সহস্রাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ২৭ মাঝিমাল্লা নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত বোট নিখোঁজ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চলাকালে সাগরে ভাটা থাকায় উপজেলার মানুষ জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেয়েছে। ছয়টি ইউনিয়ন বড়ঘোপ, কৈয়ারবিল, আলী আকবর ঢেইল, উত্তর ধুরং, দক্ষিণ ধুরংয়ের সর্বত্র গাছাপালা ও বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে দুটি জাহাজযোগে কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী প্রেরণের কথা জানানো হয়েছে। আনোয়ারা ॥ আনোয়ারা থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে আনোয়ারা উপজেলার উপকূল এলাকার বাড়িঘর ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিন বিকল হয়ে ঝড়ের আঘাতে উপজেলার পারকি উপকূলে আটকা পড়েছে ক্রিস্টাল গোল্ড নামের একটি জাহাজ। বন্দর সূত্র জানিয়েছে, জাহাজটি আদালতের নির্দেশে আটক থেকে বহিঃনোঙ্গরে নোঙ্গর করেছিল। মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রচ- বাতাসের তোড়ে জাহাজটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। অপরদিকে, আনোয়ারা উপজেলাজুড়ে গাছপালার ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তবে কোন প্রাণহানি ঘটেনি। বান্দরবান ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা বান্দরবান থেকে জানান, বানরবানের সাতটি উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় মোরার তা-বে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, ভেঙ্গে গেছে গাছপালা, ক্ষতি হয়েছে ফসলের। সোমবার রাত থেকে জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে মোরার তা-বে, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমন্তবর্তী তুমব্র, ঘুমধুম, বাইশারী, আলীকদম, লামা, রোয়াংছড়ি, রুমা ও জেলা সদরের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লামার পৌর এলাকার দেড় সহস্রাধিক কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত দুজন। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২০টি ঘরবাড়ি ল-ভ- এবং সরই ইউনিয়নে ৩০টির মতো ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায় এবং বগাইছড়ি, হারগাজা, সাফেরঘাটা ও বনপুর সড়ক এবং লামা-সুয়ালক, ক্যায়াজুপাড়া-লুলাইং ও ক্যায়াজুপাড়া-ধুইল্যাপাড়া সড়কের ওপর গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল মঙ্গলবারও বন্ধ ছিল। তবে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল অব্যাহত ছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে এখানে সকাল হতে দিনভর থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। শিমুলিয়ায় ছিল ৩ নম্বর সংকেত। তবে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল অব্যাহত ছিল। ফেরি কম চলাচল করায় দু’পারে ৪শ’ যান পারপারের অক্ষোয় আটকা পড়ে। বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন জানান, ১ নম্বর সঙ্কেত থাকাবস্থায়ই সোমবার বিকেলে সব নৌযান বন্ধ করে দেয়া হয়। শিমুলিয়ার বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ মঙ্গলবারের চিত্র বর্ণনা করে জানান, তিনটি রোরো, তিনটি কে-টাইপ, দুটি মাঝারি এবং উচ্চক্ষমতার টাগবোট দিয়ে দুটি ডাম্পসহ মোট ১০টি ফেরি সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করেছে। দু’পারে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেলে মঙ্গলবার দুপুরের পর শিমুলিয়া ঘাটের যানজট প্রায় হালকা হয়ে যায়। কক্সবাজার ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে বাড়িঘরসহ গাছপালা দুমড়ে-মুচড়ে তছনছ হয়ে গেল কক্সবাজারের দ্বীপ কুতুবদিয়ার জনজীবন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ বাড়তে থাকলেও মরাকটালের ঘোর ভাটা থাকায় জলোচ্ছ্বাসের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেয়েছে দ্বীপের পৌনে দু’লাখ মানুষ। গত ২৯ মে সন্ধ্যা হতে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ব্যাপকভাবে আবহাওয়ার খবর প্রচার করায় দুর্গম এলাকাসহ অন্যান্য গ্রামের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয় বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে। ওসব আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার বিতরণ করে উপজেলা প্রশাসন। প্রবল বাতাসে ছয় ইউনিয়নে বিধ্বস্ত হয় ৬-৭ হাজার বসতঘর এবং ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় ৫০-৬০ হাজার মানুষ। নিখোঁজ রয়েছে মাঝিমাল্লাসহ তিনটি মাছ ধরার নৌকা। তবে এ পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের কারণে উত্তর ধুরুংয়ের পশ্চিম চরধুরুং ও কাইসারপাড়া এলাকা হয়ে সরাসরি সামুদ্রিক জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে বহু বসতঘর। এদিকে মহাবিপদ সঙ্কেত প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক গ্রামীণ অপারেটরে কিছুটা কাজ করলেও সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অন্য অপারেটরগুলো। তাছাড়া রাত ১০টার পর হতে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুত সংযোগ। বিশেষ করে দ্বীপের অধিকাংশ মানুষের ব্যবহার্য রবি অপারেটর সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় জনজীবনে নেমে আসে মারাত্মক ভোগান্তি। বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনকাজে উপজেলা প্রশাসন তৎপর বলে জানিয়েছেন ইউএনও সুজন চৌধুরী। আমতলী (বরগুনা) ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী (বরগুনা) থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে সাগর ও পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমতলী ও তালতলী উপকূলীয় অঞ্চলের চর ও নিম্নাঞ্চলসহ ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই এলাকার দুই হাজার পুকুর ও ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোলা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ভোলা থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় মঙ্গলবার সকাল ৮টার পর থেকে বাতাসের গতি কিছুটা বাড়লেও বেলা ১১টার পর কমে যায়। তবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে মেঘনা নদীর ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। এ অস্থায়ও বেশকিছু ছোট জেলে নৌকা নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে। এছাড়া ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরার দুর্গম কলাতলীচরে এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্মীপুর ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা থেকে টানা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে লক্ষ্মীপুরে। জীবনযাত্রা প্রায় থমকে গেছে। তবে মানুষের মাঝে ঝড়ের আতঙ্ক বিরাজ করছে। জেলা শহর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে গেছে। তবে ‘মোরা’র আতঙ্কে যাত্রীর সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। আবার যাত্রীর অভাবে অনেক বাসের সিডিউল বাতিল করা হয়। উপকূলীয় এলাকার মানুষ বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছে। নৌ চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। দুর্যোগপরবর্তী সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি ছাড়া ঝড়ের তেমন প্রভাব পড়েনি। ঝালকাঠি ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ঝালকাঠি থেকে জানান, ঝালকাঠির মানুষ একটি রাত উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আঘাত হানতে পারে- এ আতঙ্কে মানুষ উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল। ঝালকাঠি জেলায় এ দুর্যোগ মোকাবেলায় ৪৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ও ৩৭টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। সব কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে এবং জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন হলে যাতে মানুষ আশ্রয় নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাতেই নদীতীরবর্তী প্রত্যন্ত জনপদের মানুষদের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য পার্শ্ববর্তী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আনা হয়েছিল।
×