ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শীতলক্ষ্যায় ঝুঁকিপূর্ণ ফেরি ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ৩০ মে ২০১৭

শীতলক্ষ্যায় ঝুঁকিপূর্ণ ফেরি ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ ২৯ মে ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মুড়াপাড়া-রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ফেরিযোগে চলাচলরত যানবাহন ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অদক্ষ চালক দিয়ে ফেরি চলাচলের কারণে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। ক্ষতি হচ্ছে যানবাহনের। দুটি ফেরির মধ্যে একটি পুরোই বিকল ও আরেকটি লক্কড়ঝক্কড় অবস্থায় চলছে। প্রায় সময়ই ফেরিটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ছে। এ সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে থাকতে হয় যাত্রী সাধারণের। প্রতিদিন দেশের পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১৭টি জেলা থেকে আগত যাত্রীরা শীতলক্ষ্যা নদীর এ ফেরি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা। জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কযোগে আসা প্রায় ১৭টি জেলার সাধারণ যাত্রীরা মুড়াপাড়া-রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর দিয়ে ফেরি যোগে পারাপার হয়ে এয়ারপোর্টসহ রাজধানীতে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে কুমিল্লা, দাউদকান্দি, চাঁদপুর, মতলব, নোয়াখালী, ফেনি, চট্টগাম, হবিগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, মৌলিবাজার, আশুগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ ১৭ জেলার যাত্রীরা এ পথ ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া ভুলতা ফ্লাইওভারের কাজ চলাচলের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে ফেরি পথ ব্যবহার করছে অনেক যানবাহন। অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানীতে প্রবেশ পথ হিসেবে যাত্রীসাধারণ শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর দিয়ে ফেরিযোগে চলাচল করে থাকেন। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে এ পথ দিয়ে। এ কারণেই সড়ক ও জনপদ বিভাগ মুড়াপাড়া-রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ওই ফেরি প্রতিবছর ইজারা দিয়ে থাকেন বিভিন্ন ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানকে। ফেরি দুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এ বছর ৫৭ লাখ ৭২ হাজার ৫শ’ টাকায় ইজারা নিয়েছেন সুমন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মুড়াপাড়া-রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পারের রাস্তাটি প্রশস্ত অনেকটা কম। প্রশস্ত কম থাকায় রাস্তাটি দিয়ে বড় ধরনের যানবাহন আসতে পারে না। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ফেরি দিয়ে এসব যানবাহন সময়মতো পারাপার করতে না পারায় বেশিরভাগ সময়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। নদীর দুই পারের ফেরি লাগানো গ্যাংওয়ে ও পল্টুনের বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। স্টিলের সিটগুলো খসে পড়ছে। পল্টুনের তলায় পানি প্রবেশ করে ডুবে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচেও পানি কমাতে পারছেন না। এছাড়া বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তার সঙ্গে লাগানো গ্যাংওয়ে বেশির ভাগ অংশটুকু ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া অংশ ও ভাঙ্গা স্থান দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনগুলোর। ফেরির ওপরের পিচ উঠে গিয়ে স্টিলের সিট বের হয়ে গেছে। এতে যানবাহনগুলো স্লিপ করে। দুটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরি প্রায় ২৮ বছর আগের, অপরটিও একই সময়ের। ইঞ্জিন ও ফেরির বডি মেরামত করে এখন পর্যন্ত চালানো হচ্ছে ওই দুটি ফেরি। দুটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরি সব সময় নষ্ট বা বিকল অবস্থায় থাকে। ওই ফেরিতে ইঞ্জিন পাল্টানো হলেও কোন কাজে আসছে না। যানবাহন নিয়ে ফেরি ছাড়লে সময়মতো ওই পার না পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রবল স্রোতে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। পড়ে অপর ফেরির সহযোগিতা নিয়ে টেনে আনতে হয়। অপর যেই ফেরিটি রয়েছে, সেটির তলার অংশ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বেশ কয়েক স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে। অতিরিক্ত পানি ঢুকে ফেরি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা হয়ে যায়। যাত্রীরা সব সময় আতঙ্কে থাকেন।
×