ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রেইন ট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৯ জুন

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩০ মে ২০১৭

রেইন ট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৯ জুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৯ জুন দিন ধার্য করেছে আদালত। এদিকে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমে ৮৫ গ্রাহককে প্রায় আড়াই কেজি স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর বনানীতে দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দিতে সময় পেয়েছে পুলিশের উইমেন ভিকটিম সাপোর্ট এ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হন। পরে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৯ জুন দিন ঠিক করে দেন ঢাকা মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা ও উপ-পরিদর্শক আব্দুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সোমবার সকালে বনানী রেইন ট্রি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণ মামলার পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিরা হচ্ছে, আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী। আসামিরা সবাই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। বনানীর চার তারকা রেইন ট্রি হোটেলে গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৬ মে থানায় একটি মামলা হয়। আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার দুই বন্ধুসহ পাঁচজনকে তাতে আসামি করা হয়। বনানী থানা পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ করেন ধর্ষিতাদের একজন। এরপর আসামি ধরতেও পুলিশের অনীহার অভিযোগের মুখে মামলার তদন্তভার পুলিশের উইমেন ভিকটিম সাপোর্ট এ্যান্ড ইনভেস্টিগেশনকে দেয়া হয়। ৮৫ গ্রাহকের স্বর্ণালঙ্কার ফেরত আপন জুয়েলার্সের ৮৫ গ্রাহককে প্রায় আড়াই কেজি স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত আপন জুয়েলার্সের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জুয়েলার্স সমিতির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের কর্মকর্তারা রাজধানীর পাঁচটি শো-রুম থেকে এসব স্বর্ণ ফেরত দেন। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানান, আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুমের ১৮২ জন গ্রাহকের মধ্যে ৮৫ জন গ্রাহককে ২ দশমিক ৩৩ কেজি স্বর্ণ ফেরত দেয়া হয়েছে। অন্য গ্রাহকরা উপস্থিত না হওয়ায় তাদের স্বর্ণ ফেরত দেয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে একযোগে পাঁচটি শাখা থেকেই শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা গ্রাহকদের কাগজপত্র দেখে স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়া শুরু করে। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ জাকারিয়া জানান, রসিদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা নিয়ে স্বর্ণ ফেরত দেয়া হচ্ছে। আপন জুয়েলার্সের সীমান্ত স্কয়ার শো-রুমের ম্যানেজার ইফতেখার আহমেদ জানান, ‘শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রাহকদের স্বর্ণ ফেরত দিচ্ছি। যেসব গ্রাহক স্বর্ণ কেনার জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েছিলেন। সেগুলো কিভাবে ফেরত দেবেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যাপারে শুল্ক গোয়েন্দা অধিতফতরে মঙ্গলবার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। শুনানিতে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সে অনুযায়ী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। এদিকে এদিন সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলশান-১ এর ডিসিসি মার্কেট শাখায় আপন জুয়েলার্সে মেরামত করতে দেয়া মোট ৩৮ গ্রাহকের মধ্যে ১০ জনের স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দিয়েছেন আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বনানীর হোটেল রেইন টিতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। ওই ঘটনার পর শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শাখায় অভিযান চালায়। ১৪ ও ১৫ মে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্স থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরা আটক করেন। এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষ এসব স্বর্ণ ও হীরার কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। শুল্ক গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, চোরাচালানের মাধ্যমে আপন জুয়েলার্স এসব স্বর্ণ সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে মঙ্গলবার আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে হাজির হতে বলা হয়েছে। এদিন শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য শুনে ও কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন।
×