ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেহরি ও ইফতারে করণীয়

প্রকাশিত: ০৭:০২, ২৯ মে ২০১৭

সেহরি ও ইফতারে করণীয়

শুরু হয়ে গেল রমজান মাস। এই পবিত্র রমজানে প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর রোজা রাখার দায়িত্ব। কোন সঙ্গত কারণ ছাড়া রোজা পালন না করার কোন যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। বহু মুসলিম নর-নারী আছেন যারা অসুস্থ অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নানাবিধ ওষুধ সেবন করতে হচ্ছে। এসব নিয়ে আমাদের হেলথ টিপসে রমজানজুড়ে থাকবে নানা পরামর্শ। আজ শুধু রমজানে সুস্থ থেকে কিভাবে রোজা পালন করবেন তা নিয়ে আলোকপাত করতে চাই। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ওষুধ খানিকটা এ্যাডজাস্ট বা সমন্বয় করতে হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এখন গ্রীষ্মকাল। ইফতার ও সেহরির সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করতে পারেন। তবে রোজাদারগণের খাবার হতে হবে পুষ্টিকর। সেহরি প্রোটিন জাতীয় খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়ায়। সারাদিন খাওয়া হবে না ভেবে অনেকে সেহরিতে ভুঁড়িভোজ করেন। তাদের খাবারের তালিকায় থাকে মাছ মাংসসহ হরেক পদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু মাছ-মাংস অর্থাৎ প্রোটিন জাতীয় খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়ায়, যা রোজাদারের কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই এই গরমে সারাদিন তৃষ্ণাহীন ঝরঝরে অনুভূতি পেতে সেহরিতে ভাতের সঙ্গে শুধু সবজি (ভাজি বা ঝোল করে) খান। সেহরিতে অল্প হলেও খান। প্রয়োজনে খেজুর-কলা বা দই-চিড়াও খেতে পারেন। ইফতার ইফতারে ভাজা- পোড়া, গুরুপাক ও অতিরিক্ত মসলাদার, রকমারি অস্বাস্থ্যকর খাবার যত কম খাওয়া যায় তত ভাল। বাজার থেকে কেনা ইফতারির চেয়ে ঘরে তৈরি খাবার তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ। এই গরমে সুস্থ থাকতে ইফতারে চিড়ার শরবত হতে পারে অনন্য পানীয়। ইফতারের আগে চিড়া ভিজিয়ে রাখুন। বাদামী চিনি (আখের) অথবা আখের গুড় মিশিয়ে তা ইফতারিতে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া বোতলজাত জুস কিংবা শরবতের পরিবর্তে দুই/ তিনটি খেজুর খেয়ে পানি পান করতে পারেন। খেজুরে আছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শর্করা, চিনি, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, সালফার, ম্যাঙ্গানিজসহ নানা উপাদান। খেজুর ও পানি মিলে গ্লুকোজ তৈরি করে, যা তাৎক্ষণিক প্রাণশক্তি এনে দেয়। তাই ইফতারে ভাজা-পোড়া খাবারের পরিবর্তে খেজুর, পানি, ডিম ও কলা ও ফলমূল খান। রাতের খাবার রাতের খাবারে শাক-সবজি, মাছ-মাংস, ডিম, ডালসহ অন্যান্য সুষম খাবার দিয়ে সেরে নিতে পারেন। ইফতারির পর থেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বার বার পানি পান অভ্যাস গড়ে তুলুন। পুরো রোজায় সুস্থ থাকতে করণীয়- বেশি ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলো বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া, ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। -যেসব খাবারে অতিরিক্ত চিনি থাকে এগুলো এড়িয়ে চলুন। - সেহরি ও ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। - সেহরিতে ভাত, রুটি, মসুর ডাল, শাকসবজি বেশি পরিমাণে খান। এ খাবারগুলো পাকস্থলীতে পরিপাক হতে অনেক সময় লাগে। - সেহরি ও ইফতারের মাঝে প্রচুর পানি পান করুন। - প্রতিদিনের ইফতারে কয়েক পদের ফল রাখার চেষ্টা করুন। - রোজা রেখে রাতের খাবারে ভুনা মাংস, পোলাও জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল, এগুলো খেলে বেশি পানির তেষ্টা পায়। - অতিরিক্ত চা ও কফি খাওয়া ঠিক নয়। - অনেকেই ঘুম থেকে জেগে সেহরি খেতে চান না, সেহরি না খেয়ে রোজা রাখলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যায়। তাই একটু কষ্ট হলেও সেহরি খাওয়ার চেষ্টা করুন। শুধু খাবার নয়, রোজায় ক্লান্তিহীন থাকতে আরও কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরী। রোদে বাইরে গেলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করুন। চাইলে দিনে দুবার গোসল করতে পারেন। আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য অজুু করা ছাড়াও বার বার ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোন অসুখ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে, রোজা রেখে নিয়মিত ওযুধ খাওয়ার সময় ঠিক করে নিন। এতে রমজানে রোজা রেখেও আপনি থাকবেন একেবারেই সুস্থ।
×