ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে আত্মবিশ্বাসী এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান

পরিশ্রমের বিকল্প নেই ॥ ইমরুল

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২৯ মে ২০১৭

পরিশ্রমের বিকল্প নেই ॥ ইমরুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের একেবারে শেষ ওয়ানডেটি খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে অন্তরঙ্গ ও সবচেয়ে ভাল সঙ্গী তামিম ইকবালের সঙ্গে দারুণ এক জুটিও উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর শ্রীলঙ্কা সফর এবং এবার আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি ইমরুল কায়েস। প্রতিটি সফরের প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে ঠিকই খেলছেন এবং পারফর্ম করছেন তিনি। ইংল্যান্ড এ ওপেনারের প্রিয় প্রতিপক্ষ। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বাধিক রানও করেছেন তিনিই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেই ব্যাট হাতে নামলেন তিনি। ওয়ানডাউনে নেমে খেললেন ৬১ রানের দারুণ ইনিংস। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা ওপেনিং জুটি তামিম-ইমরুল। কারণ সর্বাধিক রান করেছেন তারা। সেই তামিম দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তার ভূয়সী প্রশংসা করলেন ৩০ বছর বয়সী ইমরুল। তবে বিশাল সংগ্রহ গড়েও হারের পর এ ওপেনার উপলব্ধি করছেন কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ক্রিকেটারদের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল দারুণ ব্যাটিং করে প্রথমে নেমে। বিশেষ করে ওপেনার তামিম ইকবাল দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এজবাস্টনের ছোট ভেন্যুতে। তার বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘তামিম খুবই ভাল খেলছে এবং সম্প্রতিই ত্রিদেশীয় সিরিজে অনেক ভাল ব্যাটিং করেছে। সে দুর্দান্ত ফর্মে আছে এবং এই সেঞ্চুরি অবশ্যই তার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেবে।’ তামিম মাত্র ৯৩ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ১০২ রানের ইনিংস উপহার দেন। ইনিংস উদ্বোধন তার সঙ্গে সৌম্য সরকারই করেছিলেন। কিন্তু সৌম্য দ্রুত সাজঘরে ফেরার পর পুরনো ও সবচেয়ে ভাল সঙ্গী তামিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে উইকেটে থাকতে পেরেছেন ইমরুল। ১৪২ রানের দীর্ঘ জুটি গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। বরাবরই তামিমের সঙ্গে রসায়নটা বেশ ভাল। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে আর কোন জুটিই তাদের চেয়ে বেশি ম্যাচে খেলেনি। তামিম-ইমরুল জুটি বেঁধেছেন ৫৮ ওয়ানডেতে। ওপেনার হিসেবে তারাই সেরা, করেছেন ৩১.৪৮ গড়ে ১৮২৬ রান। তবে সম্প্রতিই তাদের ছাড়িয়ে গেছেন মুশফিকুর রহীম ও সাকিব আল হাসান জুটি। তারা ৫৭ ম্যাচ জুটি বেঁধে ৩৫.৭২ গড়ে করেছেন ১৯২৯ রান। তামিম-ইমরুল জুটি দীর্ঘদিন ধরেই আর নিয়মিত নেই। তামিম প্রতিনিয়তই খেলছেন, কিন্তু ফর্মের কারণে ইমরুল অনিয়মিত হয়ে গেছেন। সেই সুযোগে সৌম্য তামিমের সঙ্গী হয়ে গেছেন। এ তরুণ নিজের যোগ্যতাও প্রমাণ করেছেন আরও বেশি আগ্রাসী ও তেজোদীপ্ত মনোভাব দেখিয়ে। তাই ইমরুল ভাল করলেও কম্বিনেশনের কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না একাদশে। তবে যখনই নামছেন নিজেকে প্রমাণ করছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড বলেই ইমরুলকে যেন প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে এ কারণেই তিনি সুযোগ পেলেন। কারণ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান ইমরুল। তিনি ১১ ম্যাচ খেলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছেন ১ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৮.১৮ গড়ে ৪২০ রান। সে কারণেই হয়তো তাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তামিম-ইমরুলের দুর্দান্ত ইনিংস দুটোই বিফলে গেছে পাকদের বিরুদ্ধে। জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ৩৪১ রানের পাহাড় টপকে পাকরা জিতেছে। এ বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘আমরা যেহেতু খেলায় সবসময় সেরা অবস্থানে ছিলাম তাই হেরে যাওয়াটা সত্যিই হতাশার। আমরা ভাল ব্যাটিং করেছি, ভাল বোলিং করেছি। কিন্তু আমরা কিছু ক্যাচ ছেড়েছি। আর সেগুলোই আমাদের নিচে নামিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি এ সবই খেলার অংশ।‘ ইমরুল মনে করেন এসব ভুলে এখন পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আবার পাকদের বিরুদ্ধে অনুশীলন ম্যাচের মধ্যে দিয়ে আরও কিছু শিক্ষাও পেয়েছেন ইমরুল। তিনি উপলব্ধি করছেন ক্রিকেটারদের আরও পরিশ্রমী হতে হবে। কারণ মেহেদি হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন। এ বিষয়ে এ টপঅর্ডার বলেন, ‘অবশ্যই ফিল্ডারদের বাজে ফিল্ডিংয়ে কিছু ক্যাচ হাতছাড়া হওয়াতেই আমাদের পরাজয় এনেছে। তবে অনেক ইতিবাচক বিষয়ও আমরা এ ম্যাচ থেকে নিতে পারি। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে আমাদের আরও পরিশ্রমী হতে হবে। আরও বেশিক্ষণ ফিল্ডিং সেশন করা অতীব প্রয়োজন। আশা করছি আমরা এ সবই কাটিয়ে উঠব এবং ভাল ক্রিকেট খেলব।’
×