ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মঙ্গলবার শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে কোহলিদের মুখোমুখি মাশরাফিরা

এবার বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৯ মে ২০১৭

এবার বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের অপেক্ষা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শুরু হয়ে গেছে। প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে সবগুলো দল এ মর্যাদার টুর্নামেন্টের জন্য অনুশীলন করছে এখন। আগামী ১ জুন মূল লড়াই শুরুর আগে গা-গরম করার সুযোগ সবগুলো দলের। তবে বাংলাদেশ দলের অভাবনীয় হার সঙ্গী হয়েছে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেই। প্রায় সাড়ে তিন শ’ রান করেও হেরে গেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। এতে করে সøগ ওভারে বোলারদের দুর্বলতা পরিষ্কার হয়ে ফুটে উঠেছে। আর ফিল্ডিংয়েও দুর্দশা দেখা গেছে। সেসব কাটিয়ে উঠে নিজেদের ফিরে পাওয়ার সুযোগ মঙ্গলবার। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামবে এদিন বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচের ভুল শুধরানোর দিক থেকে তো বটেই, ভারতীয়দের বিরুদ্ধে ম্যাচটি আরও একটি কারণে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। এবার কেনিংটন ওভালে বিরাট কোহলিদের মোকাবেলায় নামবেন মাশরাফিরা। আর এই মাঠেই ১ জুন এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামবে বাংলাদেশ দল। সম্প্রতিই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়ার সুবাদে প্রথমবারের মতো আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছে ৬ নম্বরে। এমন উজ্জীবিত একটি দল এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দারুণ কিছু করবে সেটা সব ক্রিকেট বোদ্ধাই মনে করছেন। সেটার ছাপ দেখা গেছে শনিবার এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। প্রস্তুতি ম্যাচে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে ব্যাটসম্যানরা। দারুণ এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বরাবরই ভাল নৈপুণ্য দেখানো ইমরুল কায়েস সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়েছেন। হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক। আর মুশফিকুর রহীমের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৬ রান। বাকি ব্যাটসম্যানরাও রান করেছেন, তবে কেউ বড় কোন ইনিংস খেলতে পারেননি। উল্টো ভাল একটা অবস্থানে থেকেও পরের দিকে ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। পুরনো সেই সমস্যাটাই এ প্রস্তুতি ম্যাচে আরেকবার দেখা গেছে। সেই সমস্যা সøগ ওভার। শক্ত অবস্থানে থাকার পরও শেষদিকের ওভারগুলোতে রানের গতি বাড়াতে না পারার ব্যর্থতা আরেকবার দেখা গেছে। শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৭৩ রান করতে হারিয়েছে ৫ উইকেট। তবে এরপরও এই তিন ব্যাটসম্যানের বড় ইনিংস বাংলাদেশ দলকে ৩৪১ রানের মজবুত একটা অবস্থান দিয়েছিল। কিন্তু বোলাররাও সেই সøগ ওভারেই ব্যর্থতা দেখিয়েছে। সেই ব্যর্থতার পরিষ্কার প্রমাণ দেখা গেছে পাকরা মাত্র ৯ ওভার ৩ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলে ফেলায়। টেলএন্ডারদের কাছে বেধড়ক মার খেয়েছেন সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম ও মাশরাফি। ফলশ্রুতিতে ২৪৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা পাকরাই জিতেছে শেষ পর্যন্ত। প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও এমন হাইস্কোরিং ম্যাচে এমন পরাজয় অনেক দুর্বলতা ফুটিয়ে তুলেছে। শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়েও ব্যাটসম্যানদের দুর্দান্ত কিছু করতে না পারা এবং প্রতিপক্ষ টেলএন্ডারদের বিরুদ্ধে বোলারদের ব্যর্থতা। এ ঘাটতিগুলো কাটিয়ে ওঠার বড় সুযোগ থাকবে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে। বর্তমান সময়ে ভারত ফর্মের তুঙ্গে আছে ভারত। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়েও ৩ নম্বরে আছে তারা এই মুহূর্তে। মাত্র ১ রেটিং কম তাদের দুইয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে। এ কারণে ভারতের বিরুদ্ধেই বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা হবে। কতখানি উন্নতি হয়েছে দলের সেটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলে ৬ নম্বরে উঠে ক্রিকেট বিশ্বে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছে টাইগাররা। এখন সবার দৃষ্টি তাই মাশরাফিদের দিকে। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও দারুণ কিছু করবে দলটি এমনটাই মনে করছেন সবাই। কিন্তু সেটার প্রথম ধাপেই হোঁচট খেয়েছে বাংলাদেশ দল। টানা দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতে আসার পর র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর দল পাকিস্তানের কাছে হার দেখেছে। প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও এত বড় ইনিংস গড়েও পরাজয় অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এবার সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে ভালভাবেই পরীক্ষা দিতে হবে ভারতের বিরুদ্ধে। এর আগে কেনিংটন ওভালে মাত্র একবারই খেলেছে বাংলাদেশ দল। ২০০৫ সালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলা একমাত্র সেই ম্যাচে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাস্ত হয়েছিল হাবিবুল বাশারের দল। ঠিক ১২ বছর পর আবার সেখানে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল, এবার মাশরাফির নেতৃত্বে। ওই ম্যাচেও বর্তমান দলের শুধু মাশরাফিই খেলেছিলেন। দীর্ঘদিন পর নামা এবং অন্য ক্রিকেটারদের এই ভেন্যু সম্পর্কে জানার ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে এই ম্যাচের মাধ্যমে। কারণ এ মাঠেই স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আবারও খেলতে নামবে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে। তার আগে ভারতের মতো মহাপরাক্রমশালী দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ অনেক ফলপ্রসূই হবে মাশরাফিদের জন্য।
×