ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার নিরাপত্তায় উদ্যোগ নেই

রেসপন্স টিম গঠন করেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৯ মে ২০১৭

রেসপন্স টিম গঠন করেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি কাটেনি। যে কোন সময় আর্থিক খাতসহ সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন সাইটে হামলা হতে পারে বলে তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে গত মার্চে আন্তর্জাতিক সাইবার সিকিউরিটি সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছিল। তখন দেশী বিদেশী তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন। সাইবার জগতকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ নিরাপদ রাখার কথা গত দুই বছর ধরে বলে আসছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোন কাজ হয়নি। দেশে যে হারে ইন্টারনেট প্রবাহ বেড়েছে-সেই হারে সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি বাড়েনি। মন্ত্রণালয় একটি রেসপন্স টিম গঠন করেই দায়িত্ব শেষ করেছে। নিরাপত্তার জন্য যা কিছু প্রয়োজন এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেয়নি। সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে সাইবার আক্রমণের বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের ১৫০টি দেশ এই আক্রমণের শিকার হলেও বাংলাদেশ নিরাপদেই ছিল। আমরা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। কারণ ততক্ষণে ম্যালওয়্যারটি অনেকটাই চিহ্নিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সাইবার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট) কাজ করেছে। মার্চে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বলা হয়েছিল সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখার জন্য উন্নত দেশগুলোর সহযোগিতা নেয়া হবে। এ জন্য গঠন করা হয় বাংলাদেশ গবর্মেন্ট সাইবার সিকিউরিটি রেসপন্স টিম (বিডিজি সার্ট)। এরপর সরকারের আর কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার বলেন, গোটা বিশ্বই এখন সাইবার ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার ঘটনাটি কত বড় ভয়ঙ্কর যে, এটা ভাবাই যায় না। হামলাকারীরা ম্যালওয়্যারটি দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে। কেউ যদি এই ম্যালওয়্যারটিতে ক্লিক করে তাহলে তার কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে হামলাকারীরা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, স্পেন, ইতালি ও তাইওয়ানের মতো দেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাহলে বুঝতে হবে আক্রমণটি কত বড়। দেশের জাতীয় ওয়েব পোর্টালে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট রয়েছে। একবার যদি এখানে হামলা ঘটে তাহলে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট বিকল হয়ে যাবে। তথ্য চলে যাবে হামলাকারীদের হাতে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ঠিক আক্রমণের শিকার কিনা এখনও জানা যায়নি। তবে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে ছড়ানো হামলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই বেশি আক্রান্ত হয়েছে। যে ম্যালওয়্যারটি ছাড়া হয়েছে তা আসলে র‌্যানসমওয়্যারের মধ্যে পড়ে। যেখানে নেটওয়ার্ক পাবে সেখানেই এটা ছড়াতে পারে। বেশির ভাগ সময় যারা অনলাইনে থাকবেন তাদের কম্পিউটার আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। র‌্যানসমওয়্যার হচ্ছে পরিচিত ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার, মোবাইল ও ট্যাবের মতো যন্ত্রের মধ্যে র‌্যানসমওয়্যার সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দিতে পারলে যন্ত্রটির নিয়ন্ত্রণ হামলাকারীদের হাতে চলে যায়।
×