ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রথম সমন্বয় সভা বিদ্যুত বিভাগে

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৯ মে ২০১৭

ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রথম সমন্বয় সভা বিদ্যুত বিভাগে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোন বৈঠক থাকলেও সংস্থা প্রধান বা সংস্থার প্রতিনিধিকে ছুটে আসতে হয় মন্ত্রণালয়ে। ঢাকার মধ্যে হলেও সারাদিনের যানজটে দিন শেষ। আর ঢাকার বাইরে হলে তো তিন দিনের ধাক্কা। একদিন আসা আরেক দিন যাওয়া, মাঝখানের দিন বৈঠক। এখানেই তিন দিন গেল। এর পরও পয়সা-সময় ব্যয়সহ আরও কত ঝক্কি তো আছেই। তবে প্রযুক্তি এই বাধা দূর করতে পারে। সেই পথেই মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে প্রথম হাঁটল বিদ্যুত বিভাগ। ঢাকার বিদ্যুত ভবনে বসেই রবিবার ঢাকার অন্য প্রান্তের অফিস ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনে বেশ আগে থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হচ্ছে। সম্প্রতি পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের সরকার প্রধানরা একত্রিত হন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। বিদ্যুত বিভাগের এই প্রচেষ্টা অন্য মন্ত্রণালয়গুলোও অনুসরণ করতে পারে। সব মন্ত্রণালয়ই মাসে অন্তত একটি সমন্বয় সভা ছাড়াও নানা ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন বৈঠক করে থাকে। রাজধানীর আব্দুল গনি রোডের বিদ্যুত ভবনে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের উদ্বোধন করেন। এসময় বিদ্যুত ভবন ছাড়া অন্যসব অফিসকে ভিডিওকলে সংযুক্ত করা হয়। খিলক্ষেত থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), রাজধানীর পরিবাগ থেকে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, খুলনা থেকে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন এভাবে দশটি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত ছিল। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উদ্বোধনকালে বলেন, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সভা করতে পারলে সময় বাঁচবে। বেশি সময় অফিসে দেয়া যাবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিংয়ে (ইআরপি) যাচ্ছি। ই-ফাইলিং তার প্রথম পদক্ষেপ। ই-ফাইলিং এ প্রতিষ্ঠানসমূহের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। জুনের মধ্যে পুরোপুরি ই-ফাইলিংয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে বলেন, শুধু আইটি বিভাগেরই নয়, উর্ধতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া প্রয়োজন। তিনি এ সময়, গ্রাহকদের বিতরণ সংস্থাগুলোর সমস্যা বা অবস্থা বা লোড শেয়ারিং সংক্রান্ত তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে জানানোর নির্দেশ দেন। প্রতিমন্ত্রী জানতে চাইলে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের অপর প্রান্ত থেকে আরইবি চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে এক কোটি ৯০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৭০ লাখ গ্রাহক এসএমএস পেয়ে থাকেন। আগামী মাসের মধ্যে ৭০ ভাগ আরইবি গ্রাহক এসএমএস পাবে। ডিপিডিসি’র ১০ লাখ ৭২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৭ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৩ লাখ ৭২ হাজার, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ৯ লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ২ লাখ, ডেসকোর ৮ লাখ ১৪ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৫ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক এসএমএস পায়ে থাকেন। নেসকোর ১২ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহকে এখনও কেউ সেভাবে এসএমএস পাচ্ছে না। সমন্বয় সভায় এ্যানোয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট, ই-ফাইলিং, এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা, নতুন বিদ্যুত সংযোগ, সিস্টেম লস, বকেয়া বিদ্যুত বিল আদায়, আন্তঃ সংস্থা দেনা-পাওনা, ওভারলোডেন ট্রান্সফরমার, বিদ্যুত সাশ্রয়, বিদ্যুত সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে জনমত যাচাই, অডিট আপত্তি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা হয়। বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, চট্টগ্রামে প্রি-পেমেন্ট মিটার দেয়ায় ৫ ভাগ সিস্টেম লস কমেছে। প্রি পেমেন্ট মিটার পদ্ধতি প্রতিটি বিতরণ সংস্থা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। বিদ্যুত সাশ্রয় কার্যক্রমে জনসংযোগ বাড়াতেও বিতরণ সংস্থালোকে তিনি অনুরোধ করেন। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাহক সন্তুষ্টির জন্য আমরা কাজ করছি। সেবা নিয়ে গ্রাহকদের কাছে যান, সমস্যা থাকলে তাদের জানান। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে, দুর্নীতি কমবে। যা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। নতুন সংযোগে অহেতুক হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, রাজউকের নির্দেশনা অনুসারে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ দিন। এ সময় তিনি গ্রাহক সন্তুষ্টি নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনার জন্য পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেনকে নির্দেশ প্রদান করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদসহ বিদ্যুত বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×