ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়পুরহাটে মন্দিরে দুর্বৃত্তদের হামলা, ১৩টি শিবশিলা ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৮ মে ২০১৭

জয়পুরহাটে মন্দিরে দুর্বৃত্তদের হামলা, ১৩টি শিবশিলা ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ২৭ মে ॥ জয়পুরহাটের বেল আমলার বারো শিবালয় মন্দিরে শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। দুর্বৃত্তরা মন্দিরের ১৩টি শিবশিলায় ব্যাপক ভাংচুর করে। কোন কোন শিবশিলায় গানপাউডার জাতীয় পদার্থ দ্বারা অগ্নিসংযোগ করে এ ভাংচুর চালায়। তারা মূল মন্দিরের মাঝে স্থাপিত দেবতা মহাদেবের সঙ্গী গরুর স্থাপনাটিও ভেঙ্গে ফেলে। এ ছাড়া তুলসী বেদি, হনুমান মন্দির, কালী মান্দিরে তারা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মন্দিরের পুরোহিত সেতু মহন্ত জানান, তিনি শনিবার সকাল ৬টার দিকে মূল মন্দিরের গেটে অতিরিক্ত তালা ঝোলানো দেখেন। গেট দিয়ে তিনি ভেতরে দেখেন মন্দিরের ভেতরে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে দুর্বৃত্তের লাগানো তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ১৩টি শিবশিলা (শিবলিঙ্গ) ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেখতে পায়। এ ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্দিরে ভিড় করেন। অনেকে মন্দিরে এসে ধংসযজ্ঞ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মন্দির প্রাঙ্গণে মন্দির কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং সোমবার শহরের মুক্তিযোদ্ধা ওলিওজ্জামানা পৌর মার্কেটের সামনে সভা করে কর্মসূচী ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। মন্দির কমিটির শনিবারের সভায় অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার ঢাকায় জুমার নামাজ শেষে হেফাজতের সমাবেশ থেকে দেশে রাস্তার ধারে মূর্তি রাখা হবে না এমন ঘোষণার পর ঐ রাতেই এ ঘটনা প্রমাণ করে যে হামলার পেছনে হেফাজতের ভূমিকা রয়েছে। স্থানীয় হিন্দু নেতৃবৃন্দরা বলেন, ৫শ’ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ মন্দিরে ’৭১ সালেও কেউ এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায়নি। অথচ শুক্রবার রাতে এ মন্দিরে ধংসযজ্ঞ চালানো হলো। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সংসদ সদস্য এ্যাডভোকে সামছুল আলম দুদু, জেলা প্রশাসক মোঃ মোকাম্মেল হক, পুলিশ সুপার রাশিদুল হাসান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
×