ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ আসামির মামলার রায় শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৮ মে ২০১৭

ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ আসামির মামলার রায় শীঘ্রই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধার সাবেক সাংসদ জামায়াত নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামির মামলার রায় শীঘ্রই ঘোষণা করা হতে পারে। এটি হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২৯তম মামলার রায়। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতেও বেশকিছু মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামির মামলাটি চলতি বছরের ৯ মে প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হয়। অর্থাৎ যে কোন দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। গাইবান্ধার ছয় আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, আটক, অপহরণ, লুণ্ঠন ও নির্যাতনের তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের পর এটি হবে ২৯তম রায়। আজিজ ছাড়া বাকি আসামিরা হলেনÑ মোঃ রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মোঃ আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মোঃ নাজমুল হুদা (৬০) ও মোঃ আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গত বছরের ২৮ জুন এ ছয় আসামির বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে লতিফ ছাড়া সবাই পলাতক। প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্কের শুনানি করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ও সৈয়দ হায়দার আলী। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর শেখ মুশফিক কবির। অন্যদিকে আসামিদের মধ্যে লতিফের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার রেজাউল এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক শেষে প্রসিকিউটর সায়েদুল হক সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে।’ আশার করছি এ মামলার রায়টি শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। আজিজসহ গাইবান্ধার এ ছয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর। এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর ছয় খ-ে ৮৭৮ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা, যাতে ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়। তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করলে প্রসিকিউশন শাখা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। এর ওপর শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গত বছরের জুনে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। এর আগে ছয় আসামিকে গ্রেফতারের জন্য ২০১৫ সালের ২৬ নবেম্বর পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু পাঁচজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের পলাতক দেখিয়েই এ মামলার কার্যক্রম চলে। তদন্ত সংস্থা বলছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর বর্তমান গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান আসামিরা। হাইকোর্টে মামলাসমূহ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। কিছু মামলার রায় ঘোষণা হবে। সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি থাকবে সুপ্রীমকোর্টের দিকে। এদিকে, সুপ্রীমকোর্ট অবকাশের আগে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির মৃত্যুদ-ের অনুমোদন ও আসামিদের আপীলের শুনানি শেষ হয়েছে। রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দিন রায় ঘোষণা করা হবে। নিম্ন আদালতে বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা বিধিমালা, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আপীল শুনানি চলছে, রমনায় বোমা হামলা মামলা, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপীল শুনানি হাইকোর্টে শুরু হয়েছে। সাত খুন মামলায় নিম্ন আদালতের মৃত্যুদ-ের রায় অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে নথি। এছাড়া এ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১৬ আসামির নিয়মিত ও জেল আপীল শুনানির জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রহণ করে হাইকোর্ট। সাত খুন মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন, মাসুদ রানা, এমদাদুল হক (হাবিলদার), বেলাল হোসেন, আবু তৈয়ব, শিহাব উদ্দিন, এসআই সুনেন্দু বালা, পূর্ণেন্দু বালা, আসাদুজ্জামান নূর, মুর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান বিপু, আবুল বাশার ও রহম আলী হাইকোর্টে নিয়মিত আপীল ও জেল আপীল দায়ের করেন।
×