ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকারী বাহিনী ও মিলিশিয়াদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে

লিবিয়ায় মিলিশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে ২৩ সরকারী সৈন্য নিহত

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৮ মে ২০১৭

লিবিয়ায় মিলিশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে ২৩ সরকারী সৈন্য নিহত

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে শুক্রবার জাতিসংঘ সমর্থিত ঐক্য সরকারের অনুগত বাহিনী ও প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়া সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে প্রায় ১৩০ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ কথা বলা হয়েছে। খবর এএফপির। ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর কয়েক ডজন মিলিশিয়ার মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হয় ত্রিপোলিতে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনোয়ার ফ্রাজাল্লাহ প্রাথমিকভাবে বলেছেন। ২৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১২৮ জন। এদের মধ্যে কোন বেসামরিক লোক রয়েছেন কিনা এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি। গবর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল একর্ডের (জিএনএ) নিরাপত্তা কর্মকর্তা হাশেম বিমর পৃথকভাবে বলেছেন, ঐক্য সরকার অনুগত বাহিনীর ২৩ সদস্য নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ২৯ জনের বেশি। বিচার বিভাগীয় সূত্র জানায়, জিএনএ অনুগত একটি সেনাদল ত্রিপোলির দক্ষিণে একটি কারাগার দখলে নিয়েছে। এ কারাগারে বন্দী রয়েছেন গাদ্দাফি প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে সূত্র জানান, আল-হাধরা কারাগারে আক্রমণের পর নিরাপত্তারক্ষীরা আত্মসমর্পণ করে। ২ জন প্রহরী নিহত হয়। জিএনএয়ের স্বরাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয় শুক্রবার শেষের দিকে এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছে, সকল বন্দীদের তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের স্বাস্থ্য ভাল আছে। গাদ্দাফির সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী বাগদাদি আল-মাহমুদি ও তার সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আবদুল্লাহ মেনুসিসহ ক্ষমতাচ্যুত প্রশাসনের ৩০ জনের বেশি কর্মকর্তা বন্দী এখানে। বাগদাদি ও আবদুল্লাহ সেনুসি-দু’জনকেই মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে ২০১৫ সালে। শুক্রবারের লড়াই শুরু হয় পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকাগুলোতে। এএফপির সাংবাদিকরা শহরের দক্ষিণে আবু সিøম, আল-হাধবা ও সালেহউদ্দিন এলাকায় বিস্ফোরণ ও কামানের গোলাবর্ষণের শব্দ শুনেছেন। লিবিয়ায় জাতিসংঘের দূত মার্টিন কবলার লড়াই বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সহিংসতার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক লক্ষ্য আইন অবশ্য সম্ভব নয়। বেসরকারী নাগরিকদের অবশ্য রক্ষা করতে হবে। দুপুরের মধ্যে লড়াইয়ের মাত্রা কমে আসলেও রাজধানীর কয়েকটি এলাকা থেকে থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। লাক্সারি ভিলাস কমপ্লেক্সের চারদিকে লড়াই শুরু হয়। এ ভিলাস সাবেক প্রধানমন্ত্রী খলিফা গয়েইল-অনুগত মিলিশিয়াদের প্রধান দফতর ছিল মার্চ পর্যন্ত। সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবিরে মিসরের বিমান হামলা ॥ মিসরের বিমান বাহিনী লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির লক্ষ্য করে ছয়বার হামলা চালিয়েছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে জানিয়েছেন, কপটিক খ্রীস্টানদের ওপর হামলার জবাবে ‘সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ শিবির’ লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সিসি বলেছেন, কপটিক খ্রীস্টানদের ওপর হামলা চালানো বন্দুকধারীরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেরনা শহরের শিবিরে তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। হামলার পর তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের শিবিরের ওপর হামলায় তিনি কোন ধরনের দ্বিধা করবেন না। টেলিভিশন বার্তায় প্রেসিডেন্ট সিসি আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের এই হামলা মিসরীয়দের বিভক্ত করতে পারবে না। তিনি তার দেশকে রক্ষা করবেন। অপরাধীদেরও শাস্তি দেবেন। মিসরের অর্থনীতি, সামাজিক শান্তি নষ্ট করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা সবসময় একত্রিত ও সক্ষম থাকব। এটা শুধু মিসরের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা যুদ্ধে লড়াই করছি তা নয় বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য এটি করছি। এমন অশুভ শক্তিকে মোকাবেলা করার জন্য পুরো বিশ্বকে একত্রিত হওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট সিসি।
×