ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আর্থিক নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়া হবে ॥ জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন শেষে যৌথ বিবৃতি

সন্ত্রাস দমনে মতৈক্য

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ২৮ মে ২০১৭

সন্ত্রাস দমনে মতৈক্য

সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ একমত হয়েছেন। ম্যানচেস্টার বোমা হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এ বিষয়ে পারষ্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। শুক্রবার ইতালির সিসিলি দ্বীপের তাওরমিনা শহরে জি-৭ সম্মেলনের শেষে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে কঠোর ভাষায় সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ উগ্রপন্থার প্রসার প্রতিরোধে তাদের আর্থিক নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। খবর গার্ডিয়ান ও এএফপির। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জি-৭ নেতৃবৃন্দের উদ্বেগ এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি। সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনায় তারা বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম সফরের শেষ পর্যায়ে তিনি ইতালির সিসিলিতে শিল্পোন্নত সাত জাতি সম্মেলনে যোগ দেন। জি-৭ এর আগের শীর্ষ বৈঠকটি হয়েছিল জাপানে। বৈঠক শেষে দেয়া দীর্ঘ বিবৃতি সংরক্ষণবাদের পরিবর্তে মুক্ত বাণিজ্য বিস্তার, অভিবাসীদের সহায়তা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুগুলোতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার হওয়ার পর এটি তার প্রথম জি-৭ সম্মেলনে অংশগ্রহণ। এবারের সম্মেলনে সন্ত্রাস মোকাবেলায় নতুন কর্মপন্থা নির্ধারণের ব্যাপারে একমত হয়েছেন জি-৭ নেতৃবৃন্দ। সন্ত্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন ছিল এবারের সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয়। অনলাইনে উগ্রবাদী বিষয়বস্তু মোকাবেলা এবং তা সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব রয়েছে, এই মর্মে একটি নথিতে শুক্রবার জি-৭ নেতৃবৃন্দ সই করেছেন। এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ব্রিটেন। দেশটির দাবি ছিল অনলাইন থেকে জিহাদী আইটেম সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর চাপ সৃষ্টির বিষয়ে সবাই একমত হোন। কিন্তু এবারে সবগুলো দেশ একমত হয়নি। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে নেতৃবৃন্দ মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেননি। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় থেকে ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন। তিনি ইইউ এবং ন্যাটোর বিষয়ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প অবশ্য আগের অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে আসেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ইতালি ও জাপানের নেতারা দুদিনের এই সম্মেলনে যোগ দেন। ট্রাম্প, টেরেসা মে, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলানি জোটের এই চার নেতা প্রথমবারের মতো আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হন। ইইউ কাউন্সিল প্রধান ডোনাল্ড টাস্কও সম্মেলনে যোগ দেন। ইইউর প্রতি ট্রাম্পের সমর্থনকে তিনি ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন। সম্মেলন শুরুর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে পার্শ্ব বৈঠকে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়া সমস্যার সমাধান হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন। উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার বিষয়টি এবারের সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার এমন কর্মকা-ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান উদ্বিগ্ন। গত বছর সম্মেলন শেষে দেয়া ঘোষণা পত্রটি ছিল ৩২ পৃষ্ঠার সেটি এবার ৬ পৃষ্ঠায় নেমে আসে। জি-৭ এর এবারের ঘোষণাপত্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে স্বাগত জানায়।
×