প্রতিবার সফল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল তিনটি মানুষের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। কোন ছবিতে তাদের কোলাকুলি কিংবা ধূমপানও করতে দেখা যায়। আন্তর্জাতিক ও কোরিয়ার গণমাধ্যমে বারবার ছবি আসা এ তিন ব্যক্তিকে নিয়ে মার্কিন ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আগ্রহের শেষ নেই। কারণ দেশটির দ্রুত চলমান পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কর্মসূচী পরিচালনার শীর্ষ ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন এ তিনজন। খবর ইয়াহু নিউজের।
এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন রি পিয়ং চোল। তিনি হলেন বিমানবাহিনীর সাবেক জেনারেল। দ্বিতীয়জন হলেন কিম জং সিক। পেশায় তিনি রকেট বিজ্ঞানী। আর তৃতীয়জন হচ্ছেন জাং চ্যান হান। তিনি হচ্ছেন সমরাস্ত্র উন্নয়ন ও সংগ্রহ কেন্দ্রের প্রধান। ছবি ও টেলিভিশন ফুটেজ অনুযায়ী বোঝা যায়, এ তিনজন কিম জং উনের পছন্দের মানুষ। অন্য সরকারী কর্মকর্তাদের চেয়ে তাদের সঙ্গে কিমের ব্যবহার যে অন্যরকম তা স্পষ্টই বোঝা যায়। এদের মধ্যে দুজন আবার কিমের ব্যক্তিগত বিমান গোসহক-ওয়ানে ভ্রমণও করেছেন। উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান সমরাস্ত্র কর্মসূচীতে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি, সেনাবাহিনী ও বিজ্ঞানীদের মতো এ তিন অপরিহার্য ব্যক্তিত্ব। কিম জং সিক ও জ্যাং কোন অভিজাত পরিবার থেকে উঠে আসেননি। আর বিমানবাহিনীর সাবেক কমান্ডার রি ছিলেন উত্তর কোরিয়ার এক সময়কার সেরা স্কুলের ছাত্র। এদের মধ্যে তিনিই বেশি পরিচিত। ক্যামেরার সামনে সব সময় হাসিমুখে আসা রি এখন ওয়ার্কার্স পার্টির সমরাস্ত্র ভা-ার শিল্প বিভাগের প্রধান। এ বিভাগটিই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী দেখভাল করে। উত্তর কোরিয়ার শাসকদের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, এ তিনজনের মধ্যে প্রধান হচ্ছেন রি পিয়ং চোল। কিম জং উন যখন কোন গুরুত্বপূর্ণ আলাপ করেন, সেখানেও তার উপস্থিতি থাকে।
১৯৪৮ সালে জন্ম নেয়া রি রাশিয়াতেও পড়াশোনা করেছেন। ২০০০ সালের পর কিম জং উনের যখন র্যাঙ্ক বাড়ছিল তখন রিকে পদোন্নতি দেয়া হয়। রি একবার চীন ও দুবার রাশিয়া সফর করেছেন। কিম জং সিক পেশায় রকেট বিজ্ঞানী। সরকারী বিমান প্রকৌশলী হিসেবে তার কর্মজীবনের শুরু। তবে এখন তিনি জেনারেলের পোশাক পরেন। ২০১২ সালে উত্তর কোরিয়ার প্রথম রকেট উৎক্ষেপণের সফলতার পেছনে কাজ করেছেন সমরাস্ত্র ভা-ার বিভাগের প্রধান সিক। তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় হচ্ছেন জ্যাং চ্যাং হা। জাতীয় প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান একাডেমির প্রধান তিনি। সমরাস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার গোপন গবেষণা ও উন্নয়নের দেখভাল করেন তিনি। এর মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রও রয়েছে। জ্যাংয়ের নেতৃত্বে একাডেমিতে কাজ করছেন ১৫ হাজার কর্মকর্তা ও তিন হাজার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকৌশলী।
