ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও- এ দৃশ্য আর চোখে পড়ে না

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ২৭ মে ২০১৭

বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও- এ দৃশ্য আর চোখে পড়ে না

যেখানে চলে না রিক্সা গাড়িÑ তার নাম খালিয়াজুরী। কিছুদিন আগেও বিচ্ছিন্ন হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরীর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এভাবেই ছড়া কেটে বর্ণনা করা হতো। আবার গোটা হাওড়াঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে বলা হতোÑ ‘বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও’। হ্যাঁ এক সময় এমনই ছিল হাওড়ের যাতায়াত ব্যবস্থা। শুকনো মৌসুমে হাওড়ের যাতায়াত মানেই ছিল ‘পায়ে হাঁটা’। আর বর্ষায় যাতায়াত কিছুটা সহজ হতো নৌ-চলাচলের কারণে। বিচ্ছিন্ন হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলায় এক দশক আগেও কোন ভারি যানবাহন তো দূরের কথাÑ রিক্সা পর্যন্ত চলত না। কিন্তু গত এক দশকে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বেশ পরিবর্তন এসেছে। কিছু কিছু এলাকায় এখন হরদম চলছে রিক্সা, অটো রিক্সা, লেগুনা, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন। যাতায়াত সহজ হয়ে ওঠায় গহীন গ্রামও পাচ্ছে নগরের ছোঁয়া। নেত্রকোনা জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলার বলরামপুর গ্রামে বাড়ি শ্যামল সরকারের। তাঁর দুই ছেলে অঞ্জন সরকার ও উজ্জ্বল সরকার নেত্রকোনা শহরে থেকে কলেজে পড়াশোনা করে। টাকা-পয়সা বা অন্যান্য প্রয়োজনে দুই শিক্ষার্থী এখন সহজেই গ্রামের বাড়িতে যেতে পারে। আবার শ্যামল সরকারও প্রয়োজনে ছেলেদের কাছে আসা-যাওয়া করতে পারেন অনায়াসে। দিন গিয়ে দিনের মধ্যেই ফিরতে পারে তারা। বাস, ট্রেন বা সিএনজিতে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু এক দশক আগেও এটি সম্ভব ছিল না। অন্তত দু’দিন সময় লাগতো। শুকনো মৌসুমে বাড়ি থেকে হেঁটে বা বর্ষায় ট্রলারের সাহায্যে আসতে হতো মোহনগঞ্জের ছেছড়খালি (আদর্শ নগর) বাজারে। এরপর আবার রিকশায় আসতে হতো মোহনগঞ্জ উপজেলা সদর পর্যন্ত। মোহনগঞ্জ থেকে ট্রেন বা বাসে করে পৌঁছতে হতো নেত্রকোনায়। বলাবাহুল্য মোহনগঞ্জ-বোয়ালী সড়কের মাঝে অবস্থিত সাতগাঁও বাজার থেকে শ্যামল সরকারের বাড়ির সামনে দিয়ে খলাপাড়া বাজার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এলজিইডির মসৃণ পাকা সড়ক। এ কারণে বাড়ি থেকেই অটোরিক্সা বা সিএনজিতে চড়তে পারেন শ্যামল সরকার। এখন আর এক কিলোমিটার পথও হাঁটতে হয় না। শ্যামল সরকার জনকণ্ঠকে বললেন, আমাদের গ্রামে পাকা সড়ক আসবেÑ এটা একসময় কল্পনাও করিনি। এখন শুধু পাকা সড়কই না, বাড়িতে বাড়িতে জ্বলছে বিদ্যুৎ বাতি। চলছে যান্ত্রিক বাহন। ৮০’র দশকে হাওড়াঞ্চলে যখন শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের প্রচলন শুরু হয়Ñ তখন থেকেই এখানকার যাতায়াতে পরিবর্তন আসতে থাকে। দাঁড়-বৈঠাচালিত নৌকার যাতায়াতকে সহজ করে দেয় শ্যালো ইঞ্জিন। বর্ষা মৌসুমে এখনও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে হাওড়ের মাঝ দিয়ে চলে মোটরসাইকেল, অটো রিক্সা, মোটরসাইকেল, ভটভটি প্রভৃতি যানবাহন। এ জন্য হাওড়ের অনেক জায়গায় নির্মিত হয়েছে সাব-মার্জিবল (ডুবন্ত) সড়ক। বর্ষায় এ সড়ক পানিতে ডুবে যায়। আবার শুকনো মৌসুমে জেগে ওঠে। সঞ্জয় সরকার নেত্রকোনা থেকে
×