হেফাজতে ইসলামের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সায় দেয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আইনজীবীদের মতামত নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। বৈঠকে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি জয়নাল আবেদীন ছাড়াও সাবেক সভাপতিদের মধ্যে ছিলেন কামাল হোসেন, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও খন্দকার মাহবুব হোসেন, বর্তমান সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক এম আমিন উদ্দিন, মাহবুব আলী ও শ ম রেজাউল করিম।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকে থাকা এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে মত আসে।
এরপর বৃহস্পতিবার রাত বারোটার দিকে তলোয়ার ও দাঁড়িপাল্লা ধরা নারীর ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শুরু হয়। ভাস্কর মৃণাল হকের তত্ত্বাবধানে ২০ জন শ্রমিক ভাস্কর্যটির ভিত ভাঙ্গার কাজ শুরু করেন। প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টার পর ভোরে সেটি সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।
দেশের সব ভাস্কর্য সরানোর দাবি হেফাজতের
দেশে স্থাপিত সব মূর্তি অপসারণ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক শুকরিয়া আদায় মিছিলে এ দাবি জানান ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী। তিনি বলেন, কোন অবস্থায় রাস্তার পাশে মূর্তি স্থাপন মেনে নেয়া চলবে না। এ দেশে মূর্তি সংস্কৃতি চলবে না। প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মূর্তি সরিয়েছেন। সেজন্য তার প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। প্রধানমন্ত্রী যেন সবসময় ইসলামের খেদমত করতে পারেন এই দোয়া করছি।
সমাবেশে হেফাজতের ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, বাংলার মাটিতে আর কোন মূর্তি স্থাপন করা যাবে না। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে তৌহিদী জনতা দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।
এছাড়া সুপ্রীমকোর্টের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে তৈরি ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ায় জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে মিছিলের আগে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত করেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
ভাস্কর্যটি পড়ে আছে এনেক্স
ভবনে
ভাস্কর্যটি সরিয়ে সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণের এ্যানেক্স ভবনের সামনে প্রতিস্থাপনের কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত সেটি পুনঃস্থাপিত হয়নি। ভাস্কর্যটি হাইকোর্টের এ্যানেক্স ভবনের ভেতর পানির পাম্পের পাশে রাখা হয়েছে। সেটিকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নীল রঙের একটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের শেষ দিকে ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল।
ভাস্কর্য সরানো নিয়ে একই কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের ও মওদুদ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গাজীপুরে এক সভায় বলেছেন, ভাস্কর্যটি সরিয়েছে সুপ্রীমকোর্ট। এক্ষেত্রে সরকারের কোন ভূমিকা নেই। আর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে একই ধরনের বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ।