ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমি এখনও নাম্বার ওয়ান’

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৬ মে ২০১৭

‘আমি এখনও নাম্বার ওয়ান’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান বিশ্বের সেরা কোচদের তালিকা করলে নামটা শীর্ষেই থাকবে জোশে মরিনহোর। পর্তুগালের এই কোচ যে দলেরই হাল ধরেছেন, তাদের নিয়ে গেছেন সাফল্যের চূড়ায়। ইংলিশ পরাশক্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও এ আশায় তাকে দায়িত্ব দিয়েছে। হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছেন ওল্ডট্র্যাফোর্ডে। সেই লক্ষ্য অর্জনে কক্ষপথেই আছে ম্যানইউ। উয়েফা ইউরোপা লীগ জিতে সে স্বাক্ষরও রেখেছেন পর্তুগীজ লৌহমানব। এই ট্রফি জিতে উচ্ছ্বসিত মরিনহো জানিয়েছেন, তিনিই এখনও নাম্বার ওয়ান। কেনইবা বলবেন না। মরিনহোর অধীনে প্রথম মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড লীগ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপাও জিতেছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে ষষ্ঠ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করার কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার জন্য ইউরোপা লীগের শিরোপাটা প্রয়োজন ছিল। সেটাও করে ফেলেছেন। তাইতো আবেগ সামলাতে পারছেন না ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ। মরিনহো বলেন, ইপিএলে চতুর্থ, তৃতীয় অথবা দ্বিতীয় স্থানে থেকে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যখন তা হয়নি তখন এই শিরোপাটা প্রয়োজন ছিল। এ কারণেই শিরোপাটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচ বলেন, ইউনাইটেড এখন বিশে^র প্রতিটি শিরোপা অর্জন করার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। প্রথম থেকেই আমরা এরজন্য লড়াই করেছি। আমি খুব খুশি। দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাতে চাই। ওরা সবাই মনেপ্রাণে চেয়েছে ট্রফিটা। মজা করে হলেও আরেকটা সত্যি কথাই বলেছেন মরিনহো, ‘আমি এখনও আগের মতোই নাম্বার ওয়ান’। ম্যাচ শেষে আবেগতাড়িত পল পোগবা বলেন, আমরা জানি পুরো বিশ^ই এখন ম্যানচেস্টারের ঘটনায় দুঃখিত। আমাদেরও সেই শোক কাটিয়ে ম্যাচের দিকে মনোযোগী হওয়াটা জরুরী ছিল। ম্যানচেস্টারÑ আমরা তাদের জন্যই এই শিরোপা জিতেছি। আমরা ইংল্যান্ডের জন্য খেলেছি, আমরা ম্যানচেস্টারের জন্য খেলেছি এবং ওই ঘটনায় যারা নিহত হয়েছে আমরা তাদের জন্য খেলেছি। আমরা জানতাম একটি গোল এই মৌসুমে আরেকটি শিরোপা জয়ের ভিত গড়ে দিবে। আমরা এটা করে দেখিয়েছি। আমরা সত্যিই গর্বিত। সবাই হয়ত বলবে আমাদের মৌসুমটা বাজে কেটেছে। কিন্তু এই শিরোপাটা আমাদের কাছে বিশাল অর্জন, এখন আমরা এটার গর্বিত মালিক। আমরা তিনটি শিরোপা জিতেছি, তাই এখন সময় উপভোগের। ১৯৬৮ সালে ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে জয়ী দলের আদলে এই ম্যাচে ইউনাইটেড নীল জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিল। নীল কষ্ট বুকে চেপে রেখে ময়দানী লড়াইয়ে নামে মরিনহোর দল। শেষ পর্যন্ত ফাইনাল জিতে ইতিহাসও গড়েছে তারা। ফাইনালের ঠিক আগ দিয়েই ম্যানচেস্টারে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ফুটবল অঙ্গনেও নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। ম্যানইউর ফুটবলাররা যেন সেই শোককেই পরিণত করেছেন শক্তিতে। এর আগে তিনবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জিতলেও ইউরোপা লীগের শিরোপা এবারই প্রথমবারের মতো উঠল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শোকেসে। আর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর এই শিরোপার গুরুত্বটাও অনেক বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন ম্যানইউর সাবেক কিংবদন্তি ডেভিড বেকহাম। তিনি বলেন, এটা একটা ফুটবল ম্যাচের চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই শহর (ম্যানচেস্টার) আর আমাদের দেশের জন্য। আমরা যখন স্বজন হারানো পরিবারগুলোর জন্য শোক করছি, তখন একটা খেলার মাধ্যমে কিছুটা খুশি বয়ে আনতে পেরেছেন ম্যানইউর ফুটবলাররা।
×