ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্কুলছাত্রীর নগ্ন ভিডিও নেটে

থানায় নিয়ে উল্টো অপবাদ দিলেন ওসি

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২৬ মে ২০১৭

থানায় নিয়ে উল্টো অপবাদ দিলেন ওসি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শ্রীনগরে স্কুলছাত্রীর নগ্ন ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়ানোর ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীকে ওসি (তদন্ত) থানায় ডেকে নিয়ে উল্টো নষ্টা অপবাদ দিয়ে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় শ্রীনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। থানা থেকে বের হয়ে ওই ছাত্রী কান্নায় ভেঙ্গে পরলে বিষয়টি তার পরিবার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপারকে তা অবহিত করেন। এর আগে উপজেলার একটি স্কুল এ্যান্ড কলেজের ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও তার লন্ডন প্রবাসী প্রেমিক হাঁসাড়া গ্রামের রুবেল মাঝি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ায় তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই ছাত্রী দু’বার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহননের করতে গিয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফেরত আসে। ওই ছাত্রীর পরিবার জানায়, এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়েরের চারদিন পরও পুলিশ মামলা না নেয়ায় পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে গত ২১ মে নতুনভাবে অভিযোগ নিয়ে হাঁসাড়া গ্রামের লন্ডন প্রবাসী রুবেল মাঝিকে প্রধান আসামি করে তার বাবা-মাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা নেয় পুলিশ। গত কয়েক দিনে কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারলেও শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) কাজী শরিফুল ইসলাম তদন্তের নামে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ২ দিনের মধ্যে লিখিত জবানবন্দী থানায় জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়। বুধবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী তার মা ও তিন আত্মীয়কে নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত জবানবন্দী জমা দিলে কাজী শরিফুল ক্ষিপ্ত হন এবং এই জবানবন্দী হবে না বলে তা ছুড়ে ফেলে দেন। এর পর ওই ছাত্রীকে তিনি জেরা শুরু করেন। এ সময় তিনি ওই ছাত্রীকে অপবাদ দিয়ে বলেন, আরও ৬/৭ জনের সঙ্গে তোমার শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। এ সময় ছাত্রীর মা জানতে চান আমরা তো কোন ধর্ষণের মামলা করিনি, তাহলে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে কেন। এতে ওসি (তদন্ত) আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং ওই ছাত্রীকে নষ্টা অপবাদ দিয়ে তার মাকেসহ থানা থেকে বের করে দেন। এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) কাজী শরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসলে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি ওই মেয়েকে কোন অপবাদ দেইনি বা ডিএনএ টেস্টের কথা বলিনি। অনাকাক্সিক্ষতভাবে আমাকে ভুল বোঝা হচ্ছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, ময়েটির অভিভাবক আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল। এ ধরনের ঘটনা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখে থাকি।
×