ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশী তল্লাশির প্রতিবাদে বিএনপির আজ বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৫ মে ২০১৭

পুলিশী তল্লাশির প্রতিবাদে বিএনপির আজ বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে পুলিশী তল্লাশির প্রতিবাদে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে এবার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে দলটি। আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে এই কর্মসূচী পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ঘোষিত এই কর্মসূচী সারাদেশে জেলা সদর, মহানগরে এবং রাজধানীর সব থানায় পালন করা হবে। বুধবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচী ঘোষণা করেন। পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিসে তল্লাশির প্রতিবাদে বুধবার সোহ্রাওয়াদী উদ্যানে সমাবেশের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু আমাদের এই সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। সমাবেশের অনুমতি না দেয়ায় প্রমাণ হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং নীলনক্সার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সরকার দেশের গণতন্ত্রকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে চায় না। এ কারণে সভা সমাবেশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। সে জন্যই বিএনপি ঘোষিত সমাবেশে অনুমতি দেয়নি। জনসভার অনুমতি না দেয়ায় প্রমাণিত হলো, গুলশান কার্যালয়ে পুলিশ যে হানা দিয়েছিল তা সরকার প্রধানের নির্দেশে পরিকল্পিত নীলনক্সার অংশ। যে কোন অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের স্বীকৃত পথ প্রতিবাদ করা। যখন এই প্রতিবাদ তারা করতে দিল না, তখন বুঝতে হবে, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি বৃহত্তর অশুভ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সেদিন গুলশানের কার্যালয়ে পুলিশ হানা দিয়েছে। তিনি বলেন, তথাকথিত মহাজোট সরকার একক কর্তৃত্বে দুঃশাসন চালিয়ে ক্ষমতা ভোগ করছে। ক্ষমতা থেকে পতনের আশঙ্কায় বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার লোহার খাঁচায় বন্দী করে রেখেছে। সভা-সমাবেশ থেকে সরকার বিরোধী সমালোচনাতেও আওয়ামী সরকার বিচলিত হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় সংগঠনে পরিণত করে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ বানচাল করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। মধ্যযুগীয় রাজাদের মতো প্রধানমন্ত্রী নিজের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তারে বাধা পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। সরকারের আগ্রাসী অভিযান এখন সর্বোচ্চ আদালতের দিকে। রাষ্ট্রের এই অঙ্গটি সম্পূর্ণভাবে আয়ত্তে নিতে পারলেই দ্বিতীয় মেয়াদের বাকশালী দুঃশাসন কণ্টকমুক্ত হয়। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মহিউদ্দিনকে রাজধানীর আরামবাগের বাস কাউন্টারের সামনে থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অবিলম্বে শেখ মহিউদ্দিনকে সুস্থ শরীরে জনসম্মুখে হাজির করার আহ্বান জানান। বলেন, এই কাজগুলো বিগত কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী করে যাচ্ছে। সবাই দেখেছে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে গেছে। যখন বাড়িতে এসে তুলে নিয়ে যায় তখন তারা পরিচয় দেয় ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক’। পরে তারা অস্বীকার করে। আমি এহেন কর্মকা-ের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলছি অবিলম্বে তাকে হাজির করুন। পরিবারের কাছে ফেরত দিন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ। আগে নির্বাচনী সরকারের ফয়সালা করতে হবে ॥ খন্দকার মোশাররফ এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্তব্য করেছেন আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি ফয়সালা করতে হবে। নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন আগে। ইসির নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আগে নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। সিইসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ দেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। বিএনপির ইসির সঙ্গে আলোচনায় রাজি আছে। কিন্তু নির্বাচনের সময় সরকারের ব্যবস্থা কি হবে তা নিয়ে আগে ফয়সালা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি। আগামীতে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এটা বিএনপির স্পষ্ট কথা। সিইসির উদ্দেশে তিনি বলেন, যতই আইন সংস্কার করেন না কেন, যতই ভাল ভাল কথা বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন পরিচালিত হয় সরকারের কর্মকর্তাদের দিয়ে। জেলায় ডিসি-এসপি, উপজেলায় ইউএনও-ওসি দিয়ে। সরকার থাকবে আওয়ামী লীগের, আর এই কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ হবে- এটা কোনদিন সম্ভব নয়। এটা আমাদের কথা নয়, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনাও এই কথা বলেছেন। কেন দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান।
×