স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাফল্যের জন্য হন্যে হয়ে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা কোচ জোশে মরিনহোকে এনেও সুফল পায়নি এখন পর্যন্ত। ২০১৬-১৭ মৌসুম শেষ হওয়ার পথে। অথচ একটি ট্রফিও শোকেসে যায়নি রেড ডেভিলসদের।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে সেরা চারেও থাকতে পারেনি। যে কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লীগেও খেলার ছাড়পত্র মেলেনি। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে খেলার সুযোগ এখনও আছে ম্যানইউর। এজন্য তাদের জিততে হবে উয়েফা ইউরোপা লীগের শিরোপা। এ লক্ষ্যেই আজ রাতে ফাইনালে মাঠে নামছে মরিনহোর দল। সুইডেনের স্টোকহোমে ফাইনাল মঞ্চে ম্যানইউর প্রতিপক্ষ ডাচ ক্লাব আয়াক্স। প্রথমবারের মতো এই আসরের ফাইনালে উঠে এসে শিরোপা ছাড়া কিছুই ভাবছে না ইংলিশ পরাশক্তিরা। যে কোন মূল্যে ট্রফি জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ছাড়পত্র চায় দলটি। সেমিফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাব সেল্টা ভিগোকে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট কেটেছে ম্যানইঊ।
অন্যদিকে আয়াক্স সেমির দ্বিতীয় লেগে ফরাসী ক্লাব লিও’র কাছে ৩-১ গোলে হেরেও ফাইনালের টিকেট পেয়েছে। কেননা প্রথম লেগ আয়াক্স জিতেছিল ৪-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে আয়াক্সের জয় ৫-৪ গোলে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে সময়টা গত কয়েক মৌসুম ধরেই ভাল যাচ্ছে না ইউনাইটেডের। শিরোপা জয় তো দূরের কথা, শেষ চারেও থাকতে পারছে না। তবে ইউরোপা লীগে দাপুটে ভঙ্গিতে এগিয়ে যাচ্ছে রেড ডেভিলসরা। অবশ্য ফাইনালে তারা এসেছে অনেকটা ভাগ্যের কৃপায়। ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে তারা সেল্টার কাছে পাত্তাই পায়নি। অতিথিদের দুর্ভাগ্য, একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও একটির বেশি গোলের দেখা পায়নি তারা। সেটা হলে বিদায় নিতে হতো রুনিদের। ফাইনালে জিততে আশাবাদী মরিনহো বলেন, আমরা জানি কাজটা সহজ নয়। কিন্তু কঠিনও না। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে চাম্পিয়ন হওয়ার। এটা কাজে লাগাতে সবাই মুখিয়ে আছে। এদিকে ইংল্যান্ডে এক কনসার্টে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এই ঘটনার পর নতুন করে হামলার আশঙ্কা চেপে বসেছে ইউরোপে। ইউরোপা লীগ ফাইনালেও এমন সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে কি না এমন প্রশ্নও উঠেছে ফুটবল বিশ্বে। তবে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা। আয়াক্স-ম্যানইউর ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে এখন থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে উয়েফা। মঙ্গলবার সুইডেনে পৌঁছানোর কথা ছিল দুই দলের খেলোয়াড়দের। দর্শক-সমর্থকরাও যেন মাঠে এসে খেলা উপভোগ করেন, তেমনটাই চায় উয়েফা। ফলে ম্যানচেস্টারে সন্ত্রাসী হামলার পর তারা নতুন করে আশ্বস্ত করেছে ফুটবলপ্রেমীদের। এক বিবৃতিতে উয়েফা জানিয়ে, আমাদের হাতে এমন কোন গোয়েন্দা তথ্য নেই যেটা থেকে মনে হতে পারে যে স্টকহোমে ইউরোপা লীগ ফাইনালে সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। উয়েফা সুইডিশ এফএ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে গত কয়েক মাস ধরেই। আর শুরু থেকেই এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারটি আমাদের মাথায় ছিল। গত এপ্রিলে স্টকহোমে হামলার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছে।
হামলার ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক তারকা ও বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ফিফা সেরা তারকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, ম্যানচেস্টারের এই ঘটনা শুনে আমি ব্যথিত। নিহত ও আহতদের পরিবার আর তাদের বন্ধুদের সমবেদনা জানাচ্ছি। রোনাল্ডো ছাড়াও এ ঘটনায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররা শোক প্রকাশ করছেন। এরমধ্যে অন্যতম ভিনসেন্ট কোম্পানি, ডেভিড বেকহ্যাম, মার্কাস রাশফোর্ড, রাহিম স্টার্লিং, রিও ফার্ডিনান্ড, ওয়েন রুনি, ইয়াইয়া তোরে, গ্যারেথ বেল, পাবলো জাবালেটা, কোচ কার্লো আনচেলোত্তিসহ আরও অনেকে। ইংল্যান্ডে এবারই প্রথম কোন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নয়। এর আগে ২০০৫ সালের ৭ জুলাই আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫২ জন প্রাণ হারান।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: