স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ মাদক দিয়ে ফাঁসানো, ঘুষ গ্রহণ ও বিধবা নারীর জমি দখলে সহায়তার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিসহ তিন কর্মকর্তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওসি মুহা: সরাফত উল্লাহ, পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেন ও এসআই ওমর ফারুককে ক্লোজড করে নগরীর মাসদাইরের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের থানার ওসি মুহা: সরাফত উল্লাহ, পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেন ও এসআই ওমর ফারুকে বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসানোর পাশাপাশি জমি দখলে ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা করার অভিযোগ করেন বিধবা নারী আছমা বেগম।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৬ এপ্রিল তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলীসহ ৩ জনকে মাদক সেবনের মিথ্যা অভিযোগ ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং তার কাছে কয়েক দফা ঘুষ নেয়াসহ ১৮ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
এই ঘটনায় ৭ মে তিনি সংবাদ সম্মেলন করার পর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং তদন্ত কমিটিকে ৫ কার্য দিবসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।
এর মধ্যে মিথ্যা মাদক মামলায় কারাগারে ১৯ দিন আটক থাকার পর গত ১৬ মে আছমা বেগমের ভাই মোহাম্মদ আলী, মেয়ে জামাতা ইউসুফ ও ওমর ফারুক কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মুহা: সরাফত উল্লাহ, পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেন এবং এসআই ফারুক হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসানো ও জমি দখলে সহায়তা এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের সত্যতা পান এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ করেন। গত ২১ মে বিধবা নারী আছমা বেগমকে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসে ডেকে নিয়ে তার বক্তব্য নেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মুহা: সরাফত উল্লাহ, পরিদর্শক আবুল হোসেন এবং এসআই ফারুক হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতার পান এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ করেন এবং দায়িত্ব পালন অবহেলার কারণে তাদেরকে থানা থেকে প্রত্যাহার করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
