ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল

মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে গ্রুপসেরা আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৩ মে ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে গ্রুপসেরা আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এফসি কাপে খেলতে যাওয়ায় তাদের কারণেই ফেডারেশন কাপের সূচীর কিছুটা রদবদল হয়। মালদ্বীপে খেলতে গিয়ে হতাশাজনকভাবে হেরে যায় দলটি। দেশে ফেরার পর স্বভাবতই দলটির ওপর সবার নজর ছিল ফেডারেশন কাপে দলটি না আবার হেরে বসে। কিন্তু এমনটা হয়নি। সোমবার ফেডারেশন কাপে ‘এ’ গ্রুপের একমাত্র খেলায় তারা (ঢাকা আবাহনী লিমিটেড) জয় কুড়িয়ে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। খেলার প্রথমার্ধেই এই আসরের বর্তমান শিরোপাধারীরা গোল করে এগিয়ে যায়। এই জয়ের পাশাপাশি ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’রা হয়েছে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। ২ ম্যাচে ১ জয়, ১ ড্রতে (আগের ম্যাচে তারা ১-১ গোলে ড্র করে সাইফ স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে) ৪ পয়েন্ট তাদের। পক্ষান্তরে আবাহনীর কাছে হারলেও কোন ক্ষতি হয়নি মুক্তির। গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে তারাও নিশ্চিত করল শেষ আটে খেলা। ২ ম্যাচে ১ জয় ও ১ হারে তাদের সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট (অপর ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় সাইফকে)। সমান ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পাওয়ায় গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল আলোচিত-নবাগত দল সাইফ স্পোর্টিং। তবে আবাহনী যদি সোমবারের ম্যাচে হারত, তাহলে হয়তো সমীকরণের মারপ্যাঁচে শেষ আটে যেতেও পারত তারা। তা না হওয়াতে আক্ষেপে পুড়ল তারা। সোমবার এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হয় গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। আজ বিরতি দিয়ে বুধবার থেকে মাঠে গড়াবে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ। ২৬ মে তৃতীয় কোয়ার্টারে গ্রুপ ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর মুখোমুখি হবে গ্রুপ ‘ডি’ রানার্সআপ ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেড। পরদিন চতুর্থ কোয়ার্টারে (২৭ মে) ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধার প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘ডি’ চ্যাম্পিয়ন রহমতগঞ্জ। এছাড়া প্রথম কোয়ার্টারে ২৪ মে গ্রুপ ‘সি’র রানার্সআপ মোহামেডানের মুখোমুখি হবে গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল। আর গ্রুপ ‘বি’র রানার্সআপ শেখ রাসেল ২৫ মে গ্রুপ ‘সি’র চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীকে মোকাবেলা করবে। আবাহনী-মুক্তিযোদ্ধার ম্যাচের প্রসঙ্গে ফেরা যাক। পুরো ম্যাচে আবাহনীরই আক্রমণের মাত্রা ছিল বেশি। তবে সার্বিকভাবে ম্যাচে উভয় দলের ফুটবলারদের নৈপুণ্য ছিল হতাশ জাগানিয়া। ১৪ মিনিটে বল নিয়ে আবাহনীর বক্সে ঢুকে পড়েন মুক্তিযোদ্ধার মিসরীয় খেলোয়াড় এসিয়ান মোহামেদ জাকি। তাকে ঘিরে ধরেন আবাহনীর চার ডিফেন্ডার। তাই গোল করতে পারেননি জাকি। ১৮ মিনিটে মুক্তির সীমানার বা প্রান্ত থেকে আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানার ক্রস বক্সে পেয়ে শট নেন ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন। মুক্তি গোলরক্ষক উত্তম বড়ুয়া শুয়ে পড়ে সেই বল ফিরিয়ে দিলে গোল হজমের কাত থেকে বেঁচে যায় মুক্তি। ২৩ মিনিটে বক্সের খুব কাছ থেকে বা পায়ে শট নেন আবাহনীর ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। বল পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় মাঠের বাইরে। ২৯ মিনিটে গোল করে লিড নেয় আবাহনী। গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়ের বাড়িয়ে দেয়া বল বুঝে নিয়ে আচমকা শটে মুক্তিযোদ্ধার গোল কাঁপান ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া (১-০)। ৪৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করেন জীবন। পোস্টের খুব কাছে বল পেয়ে হেড নিলেও বলের নাগাল পাননি। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে আবাহনী। ফরোয়ার্ডরা বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ৪৮ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢোকেন ল্যান্ডিং। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বাধার মুখে ডান প্রান্ত থেকে পোস্ট লক্ষ্য করে কোনমতে শট নেন ল্যান্ডিং। বল বারের অনেক ওপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। ৩৭ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে পোস্টের খুব কাছ থেকে হেড নেন আবাহনীর বদলি নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন। বল অল্পের জন্য জালে ঢোকেনি। শেষ পর্যন্ত রুবেল মিয়ার ওই এক গোলের কল্যাণেই গ্রুপসেরা হয়ে শেষ আটে নামে লিখিয়ে হাসিমুখে মাঠ ত্যাগ করে দ্রাগো মামিচের শিষ্যরা।
×