ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন জাতি সিরিজে বুধবার রেটিং বাড়ানোর সুযোগ বাংলাদেশের

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৩ মে ২০১৭

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইতোমধ্যেই টানা ৫ ম্যাচে হারতে হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে কোনভাবেই পেরে উঠছে না বাংলাদেশ দল। অথচ এই দলটির বিরুদ্ধে টানা ৭ ম্যাচ জেতার রেকর্ড আছে। সেই সাফল্যের প্রায় ৪ বছর পেরিয়ে গেছে। আর কিউইদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে আরেকটি সুযোগ নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়ার। সেই লক্ষ্যেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বুধবার ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে দ্বিতীয়বারের জন্য মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। ইতোমধ্যেই অবশ্য সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করেছে কিউইরা। কারণ সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে পরাজিত হওয়ায় পয়েন্ট কমে গেছে। সিরিজের শেষ ম্যাচে আইরিশদের হারালেও আর শিরোপা জেতার সুযোগ নেই বাংলাদেশের। কিন্তু এই জয়ে রেটিং পয়েন্ট বাড়ানোর সুযোগ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতে অনুপ্রেরণা পাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশ দলের। এবার ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল আইসিসি র‌্যাঙ্কিং। দুই দলের বিপক্ষে মোট চারটি ম্যাচ। সব জিতলে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে প্রথম বারের মতো আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে উঠে আসত। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেতে হয়েছে। আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। ফলে রেটিং বাড়েনি কিংবা কমেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ১ রেটিং পয়েন্ট খুইয়ে ফেলেন মাশরাফিরা। অবশ্য ফিরতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ওই পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করে সিরিজ শুরুর আগে যেই অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ, সেখানেই আছে এখন। কিন্তু বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচে কি ঘটবে? ৬ নম্বরে থাকা শ্রীলঙ্কার রেটিং ৯৩! আর বাংলাদেশের এখন ৯১। যদি নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দিতে পারে বাংলাদেশ তাহরে রেটিং বাড়বে ২! কারণ নিউজিল্যান্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ওপরে- (আইসিসির নিয়ম অনুসারে র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরে থাকা দলকে হারাতে পারলে রেটিং বাড়ে ২ করে)। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে রেটিং সমান ৯৩ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। তবে এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট ৪২৭৩ আর বাংলাদেশের পয়েন্ট ২৪৪৭! রেটিংয়ে ভগ্নাংশের ব্যবধানে নির্ধারিত হবে নতুন অবস্থান। সেটা বুধবার শেষ ম্যাচের পরই জানা যাবে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৮ ওয়ানডে জিতেছে বাংলাদেশ দল। আর সব জয়ই এসেছে নিজেদের দেশের মাটিতে। প্রথমবার ২০০৮ সালে যখন কিউইদের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিল টাইগাররা তার আগ পর্যন্ত টানা ১১ ম্যাচে পরাজয় দেখেছিল। এরপর আবার টানা ৫ ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। কিন্তু ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ছক উল্টে যায়। ঘরের মাটিতে কিউইদের ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর আর টানা ৩ বছর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিততেই পারেনি কিউইরা। সবমিলিয়ে টানা ৭ ম্যাচে হারে তারা। এমন ঈর্ষণীয় সাফল্যগুলো আসলেও এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে কোন জয় তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। উল্টো টানা পরাজয়ের বৃত্তে আটকা পড়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে অবশেষে জয়ের দেখা পায় নিউজিল্যান্ড। এরপর গত বছর নবেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ৩-০ ব্যবধানে নিউজিল্যান্ড সফরে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফেরে বাংলাদেশ দল। সেটাও মেনে নেয়া গেছে ভিন্ন কন্ডিশন এবং নিউজিল্যান্ড স্বাগতিক দল হওয়াতে। এবার ত্রিদেশীয় সিরিজে একেবারেই নতুন ধরনের একটি দল নিয়ে এসেছে কিউইরা। বেশ কয়েকজন নিয়মিত ও অপরিহার্য ক্রিকেটারকে ছাড়াই আসতে হয়েছে তারা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) ব্যস্ত থাকায়। এমনকি নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও আসেননি। পরিবর্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে টম লাথাম। তাই অনেকেই মনে করছিলেন কিউইদের হারানোর মোক্ষম সুযোগ এবার বাংলাদেশের। কিন্তু বাস্তবে সেটা হলো না। প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ম্যাচের ভুল শুধরে এবার ফিরতি ম্যাচে জিততে উন্মুখ মাশরাফিরা। এ বিষয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার প্রতীক্ষায় আছি। গত ম্যাচেই আমাদের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সেই সুযোগগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের সবকিছু ভাল হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছি, সামনেও সেভাবে খেলতে পারলে শেষ ম্যাচটিতেও আমাদের জয় আসবে।’ এটিই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বাংলাদেশের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ১ জুন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের। এর আগে অবশ্য দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ আছে। কিন্তু বুধবার কিউইদের হারাতে পারলে প্রথমবার তাদের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে জেতার স্বাদ নেবে বাংলাদেশ। আর সেটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বড় অনুপ্রেরণা হবে এবং র‌্যাঙ্কিংয়ের রেটিং পয়েন্টেও উন্নতি ঘটবে।
×