ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সামসুল হক হত্যা

নরসিংদীতে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৩ মে ২০১৭

নরসিংদীতে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ২২ মে ॥ নরসিংদীর পলাশে চাঞ্চল্যকর সামসুল হক হত্যা মামলায় একই পরিবারের চারজনসহ সাতজনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে বিশ হাজার টাকা করে অর্থদ-ে দ-িত করা হয়। সোমবার দুপুরে নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এই রায় দেন। একই সঙ্গে মৃত্যু হওয়ার আগ পর্যন্ত আসামিদের গলায় ফাঁস ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করার কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া সামসুল হকের ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অপরাধে ৫ জনকে সশ্রম কারাদ- ও দশ হাজার টাকা করে প্রত্যেককে অর্থদ-ে দ-িত করা হয়। অপরদিকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ১৩ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। নিহত সামসুল হক পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে কাঠ মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলোÑ মহব্বত আলী মুন্সির ছেলে আবদুল গাফফার, সিরাজ মিয়ার ছেলে মারফত আলী, মইজ উদ্দিনের ছেলে আলেক মিয়া ও তার সহধর্মিণী মোছাঃ রূপবান, তার ছেলে শরীফ মিয়া ও অপর ছেলে আরিফ মিয়া, মুল্লুক চাঁনের ছেলে তোতা মিয়া। আসামিরা সাবাই পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। আদালত সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিহত সামসুল হকের সঙ্গে প্রতিবেশী আলেক মিয়া ও গাফফারদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মামালা-পাল্টামামলা দায়ের করেন। এরই জের ধরে বিভিন্ন সময় মামলার আসামিরা অব্যাহতভাবে নিহত সামসুল হককে দেখে নেয়ার হুমকি দিত। এরই মধ্যে ২০০৯ সালে ৩১ আগস্ট রাতে নিহত সামসুল হকের ছেলে জহিরুল ইসলাম বাড়ি আসছিল। রাড়ির অদূরে পথে আসামি মারফত, শরীফ ও আরিফ, জহিরুলকে মারধর করতে থাকে। তার চিৎকারে বাবা সামসুল হক এগিয়ে যায়। ওইসময় আসামিরা বাবা, ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় আসামিরা তাদের উপর্যুপরি কুপিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি গর্তে ফেলে রাখে। পরে খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও আশপাশের লোকজন সামসুলকে মৃতাবস্থায় উদ্ধার করে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকে জহিরুল। পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সামসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় জহিরুলকে ঢাকায় প্রেরণ করে সেখানে এক মাস পর তার জ্ঞান ফেরে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নূরজাহান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে পলাশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পলাশ থানা পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক ও মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে অভিযুক্ত সাত আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সাতজনের মৃত্যুদ-ের আদেশ দেন। একই সঙ্গে প্রত্যেকে বিশ হাজার টাকা করে অর্থদ- দেন। অপরদিকে নিহতের ছেলে জহিরুলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অপরাধে আবদুল গাফফার, শরীফ মিয়া, আরিফ মিয়া, আলেক মিয়া, ফারুক মিয়া ও বাছির মিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়। আসামিরা সকলেই পলাশ উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
×