ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৩ মে ২০১৭

ঢাকার দিনরাত

সূর্য পড়ালেখায় খুব ভাল, দিন দিন তার ডিগ্রী বেড়েই চলেছে। এটি আমার মন্তব্য নয়, আমার এক বন্ধুর। ঢাকার তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রী অতিক্রমের পর তিনি এ মন্তব্য করলেন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার ভেতর একটু হা হা হেসে নেয়া গেল। বিপর্যস্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরস কথামালা গাঁথার কাজটি কি সবাই পারে! তার ওপর সেই সরসতা যদি বুদ্ধিদীপ্ত হয়। ঢাকায় কি আগে ছত্রিশের সীমা পেরোয়নি তাপমাত্রা? অবশ্যই পেরিয়েছে, কিন্তু দিন দিন অসহ্য হয়ে উঠছে গরম উচ্চ আর্দ্রতার কারণে। বাস্তবের তাপমাত্রার চাইতে বেশি অনুভূত হচ্ছে গরম। কী আর করা, এটাই ঢাকাবাসীর নিয়তি। রাজধানী নয় নারীবান্ধব! এই শহর নারীবান্ধব নয়, এমন তথ্য জোরালো হচ্ছে। অথচ শহরের প্রায় অর্ধেক অধিবাসীই নারী। এক গবেষণায় দেখা গেছে, গণপরিবহন-ব্যবস্থা ভাল না থাকায় ৫৬ শতাংশ নারী বাড়ির বাইরে বেরোতে চান না। পাশাপাশি প্রায় এক-চতুর্থাংশ নারী বলেছেন, বাসের চালক বা সহকারী তাঁদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেছেন। ‘নারী সংবেদনশীল নগর-পরিকল্পনা’ শীর্ষক একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্ব নিরাপদ শহর দিবস উপলক্ষে এ্যাকশনএইড বাংলাদেশ শনিবার এ গবেষণার ফল প্রকাশ করে। ২০১৬ সালের এপ্রিল-মে মাসে বিভিন্ন বয়সী ও পেশার ২০০ জন নারীর মধ্যে গবেষণাটি চালানো হয়। গবেষণাটি বলছে, এই নারীদের ৯৪ শতাংশ নানা কারণে পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে না। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া তাঁরা একা এসব টয়লেট ব্যবহার নিরাপদ মনে করেন না। ৭২ শতাংশ নারী বলেছেন, ফুটপাথগুলো নির্মাণসামগ্রী, হকার ও দোকানদারদের দখলে। গবেষণাটি আরও বলছে, ৮৭ শতাংশ নারী পার্ক ও উদ্যানের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলেছেন। রক্ষণাবেক্ষণের, পরিচ্ছন্নতার সমস্যাসহ পার্ককে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের স্থান মনে করেন অনেক নারী। এ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির মারাত্মক একটি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নগরটি পুরুষতান্ত্রিক হয়ে পড়ছে।’ ঝড় না হলেও... ঝড়ে গাছ পড়ে, এটা স্বাভাবিক। আবার অস্বাভাবিক হলো ঝড় না হলেও শতবর্ষী গাছও উপড়ে পড়তে পারে। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। গতকাল ছিল সোমবার। তার আগের সোমবার রাত ১১টার দিকে প্রচ- ঝড়-বৃষ্টি হয়। ওই সময় বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে উত্তরায় ফিরছিলাম। দেখলাম আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতে প্রায় হাঁটু সমান পানি জমে গেছে পাশের রাস্তায়। একটা প্রাইভেট কার বিকল হয়ে ওই পানির মধ্যে আটকা পড়ে আছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল, বৃষ্টির সঙ্গে পড়ছিল শিলাও। ওই রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকার গাছপালা বড় ধরনের ধাক্কা খায়। এমনিতেই ঢাকায় বৃক্ষরাজি কমে আসছে, তার ওপর বয়সী গাছ উপড়ে পড়া বড় ধরনের ক্ষতি। তাছাড়া গাছ ও পাখি মেশামেশি হয়ে থাকে। গাছের অপমৃত্যু মানে পাখিরও আশ্রয়হীন হয়ে পড়া। এবারের ঝড়ে পাখিও নিহত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে, পান্থকুঞ্জ, মিরপুর রোডে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ে। ক্রিসেন্ট লেকের বিভিন্ন স্থানেও বড় বড় গাছ রাতের ঝড়ে উপড়ে পড়ে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটিও উল্টে পড়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা, ওসমানী উদ্যানেও কিছু গাছ ভেঙে পড়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে আহত কিছু পাখিকে উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ভাঙ্গা গাছের চাপায় কিছু পাখি মারা যায়। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক, উদ্যান ও পার্কে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের সংখ্যা কয়েক হাজার। শুধু ঝড়ের সময়েই নয়, শিকড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে এসব গাছ। কোন কোন গাছ এতটাই পুরনো যে, এইসব গাছের গুঁড়ির অধিকাংশই ফাঁপা হয়ে গেছে। বুধবার শুকনো খরতাপের দিনে দুপুরবেলা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে কৃষ্ণচূড়া গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সেখানে রাখা কিছু মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি গাছটি উত্তর দিকে বা পশ্চিম দিকে শহীদ মিনার বরাবর অথবা নতুন ভবন বরাবর কিংবা ভাষা শহীদ রফিক ভবনের উপরে যেত তবে শিক্ষার্থীদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত। হুট করে বিশাল বৃক্ষ উপড়ে পড়লে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে। গত বছর মার্চ মাসে ধানম-িতে এমনই একটি গাছচাপায় নিহত হন চিত্রশিল্পী-চলচ্চিত্রকার খালিদ মাহমুদ মিঠু। সম্প্রতি চন্দ্রিমা উদ্যানসংলগ্ন সড়কে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেঙে নিহত হয়েছেন এক মোটর সাইকেল আরোহী। ঢাকার রাস্তা ও ফুটপাথের ধারে থাকা গাছের শিকড়ের সঙ্গে মাটির সংযোগ খুবই কম। ইট ও কংক্রিট দিয়ে ঘেরা এসব গাছ যথেষ্ট বিচ্ছিন্ন রয়েছে মাটি থেকে। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কাজে প্রায়শই কাটা পড়ে যায় গাছের শেকড়, সরে যায় গোড়ার মাটি, দুর্বল হয়ে পড়ে গাছের ভিত্তি। তাই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক, উদ্যান ও পার্কের পুরনো বা হেলে-পড়া গাছ চিহ্নিত করে তা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। বৃক্ষবিশারদরা বলেন, গাছ লাগাবার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জনবহুল স্থানে বট-অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া বা রাধাচূড়া জাতীয় গাছ লাগানো না হয়। কারণ এসব গাছের শেকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করে না। তাই ছাতিম, জারুল, নিম ও বকুলের মতো মাটির গভীরে শেকড় প্রবেশকারী গাছ লাগানোই ভাল। উত্তরায় উত্তরঙ কবিকে জানাল সম্মাননা উত্তরার সাহিত্য-সংস্কৃতি মঞ্চ ‘উত্তরঙ’ শনিবার সন্ধ্যায় ‘সূর্যস্নানে জীবনের গানে’ শীর্ষক কবিতা পাঠের আসরের আয়োজন করে। মঙ্গল বারতার বাণী সংবলিত রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এবারের আসরের মধ্যমণি ছিলেন দেশের অন্যতম প্রধান কবি মোহাম্মদ রফিক। তাঁকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘কবি হলো বোধের বিম্ব, কথার জাদুকর, ভাষার শুদ্ধতম সন্তান। কবিকেই তাই জেগে উঠতে হয় বিপন্নতায়, সমূহ সঙ্কটে। মা ও মৃত্তিকার কান্নায়। জীবনের জয়গানে।’ কবি মোহাম্মদ রফিক তাঁর বক্তব্যে বলেন, এমন অনুষ্ঠান ও উদ্যোগের সামাজিক প্রয়োজন এবং ভূমিকা রয়েছে। তিনি তাঁর তারুণ্যের স্মৃতি থেকে বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের কালে অনেক ঝুঁকি ও ত্যাগের বিনিময়ে এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রসঙ্গ টেনে এর সাযুজ্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উত্তরাবাসী কবিবৃন্দ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কবিরা কবিতা পাঠ করেন। কবিতাপাঠে অংশ নেন কবি মাকিদ হায়দার, মারুফুল ইসলাম, এনায়েত কবীর, শামসুল আরেফিন, শ্যামল জাকারিয়া, লুৎফুল হোসেন, শিমুল সালাহউদ্দিন, ওমর আনোয়ার খন্দকার, মনিকা আহমেদ প্রমুখ। একক আবৃত্তি পরিবেশনায় ছিলেন কবি ও আবৃত্তিশিল্পী ইস্তেকবাল হোসেন। এছাড়াও আবৃত্তি করেন কাকলী আহমেদ। মনোজ্ঞ এ আয়োজনের জন্য গল্পকার জেসমিন মুন্নী ‘উত্তরঙ’-কে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীতে গল্পপাঠ আয়োজনের আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন মাহবুবা বিনু, ইয়াসমিন শফিক, সিনথিয়া প্রমুখ। ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান সভাপতি, প্রধান অতিথি, পেশাদার গ্রন্থ আলোচকÑ অনুষ্ঠানে এরা কেউ নেই! অথচ বাংলা একাডেমীর মতো জায়গায় হচ্ছে বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান। বইটিও ব্যতিক্রমী উদ্যোগই বটে। বাঙালী লেখকরা সাধারণত বার্ধক্যে না পৌঁছে লেখেন না আত্মজীবনী। আশির দশকের কবি ফরিদ কবির চলতি বছর প্রকাশ করেছেন আত্মজীবনী ‘আমার গল্প’, যা পাঠক সমাদৃত হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে তিনি ফেসবুকে যে পোস্ট দেন সেটি এখানে তুলে দিচ্ছি: ‘সত্যি সত্যিই এমনটাই চাইছিলাম! ‘আমার গল্প’ নিয়ে অন্যরকম কিছু হোক! অন্য রকম একটা অনুষ্ঠান! শেষে তাই হলো। একে একে হাজির হলেন ‘আমার গল্প’র বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র, যারা সাহিত্য ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও এক একজন তারকা! মঞ্চে উঠে নিজেদের কথা নিজেদের জবানীতে বললেন -তুষার দাশ, আবু হাসান শাহরিয়ার, নাসির আহমেদ, আশরাফ আহমদ, নাসরীন জাহান, নাঈমুল ইসলাম খান, জ.ই. মামুন ও সুকান্ত গুপ্ত অলোক। নিজেদের অনুভূতি জানালেন আমার চাচা কায়কোবাদ মিয়া, এমনকি আমার রুমমেট (জীবনসঙ্গিনী) ঝর্না ইয়াসমীনও! তারা সবাই মিলে সত্যিই জমিয়ে তুললেন অনুষ্ঠানটি! অন্তত আমি তাদের অম্লমধুর আলোচনা খুুবই উপভোগ করছিলাম! পাঠকদের মধ্যেও কয়েকজন জানালেন নিজেদের পাঠ-প্রতিক্রিয়া! তাঁরা সবাই দেশের গুরুত্বপূর্ণ লেখক-কবি ও প্রকাশক। নাম বললেই চিনবেন তাঁদেরকে- দ্বিজেন শর্মা, মঈনুল আহসান সাবের, মাসুদুজ্জামান, মারফুল ইসলাম ও মাজহারুল ইসলাম! আলোচনায় অংশ নিলেন ব্রাত্য রাইসু ও আমার সহপাঠী, সরকারী কর্মকর্তা শাহীন রীশাদও। এমনকি, জড়তা ছাড়াই বাবা সম্পর্কে নিজের কথা অকপটে বলে গেল আমার মেয়ে মুগ্ধ চন্দ্রিকাও! এমন দুর্দান্ত একটা অনুষ্ঠান আমাকে উপহার দিলেন যিনি, তিনি এর আয়োজক আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গনি। আর, এ কথা বলতেই হয়, অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন এর দর্শক-শ্রোতারা, যাদের প্রায় সবাই আমার বন্ধু ও সুহৃদ, কেউ কেউ হয়ত পাঠক। তাঁদের মধ্যেও ছিলেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক-কবি-শিল্পী-স্থপতি-সাংবাদিকসহ সরকারের ও বাংলা একাডেমির শীর্ষ কর্মকর্তা। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আমার সহপাঠী ও ব্যক্তিগত বন্ধুরা। ছিলেন আমার সহকর্মীরাও। তাদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই! আমার পরম সৌভাগ্য, আমি নিজে সামান্য মানুষ হলেও বন্ধু হিসেবে লাভ করেছি অসামান্য মানুষদের! আজ তারা ভালবাসার যে নিদর্শন দেখালেন তাতে আপ্লুত না হয়ে উপায় কী! আমি সত্যিই আপ্লুত, অভিভূত।’ ঢাকার কৃতীকন্যা ঢাকায় ছিলেন, অথচ পরে ইউরোপ আমেরিকায় থিতু হয়েছেন এমন কেউ বহির্বিশ্বে দেশের মুখ উজ্জ্বল করলে আমাদের ভাল লাগে। সব খবর তো আমরা পাই না। সব খবর রাখাও হয় না। চারুকলা থেকে স্নাতক ডিগ্রী নেয়ার পর শিল্পী ফারহানা শিফা আহমেদ বি এড করে চলে যান ইংল্যান্ডে। সেখানে গণযোগাযোগে মাস্টার্স করে কর্মসূত্রে থিতু হন আমেরিকার আরিজোনায়। সেখানে এশিয়ান মেলা ছাড়াও নানা আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এখন আরিজোনা রাজ্যে তার পরিচয় শুধু শিল্পী হিসেবে নয়, তিনি হলেন শিক্ষাবিদ। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ভাষা ও ঐতিহ্যের কুড়িটি দলের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার ইভেন্ট করছেন চলতি বছর থেকে। সামাজিক-রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। আরিজোনায় রিপাবলিকান পার্টির কমিউনিটি অ্যাফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফারহানা। সম্প্রতি তিনি আরিজোনা স্টেটের সরকারী আর্ট কমিশনের কমিশনার হিসেবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পেলেন। এ এক গুরুদায়িত্ব, বিরাট সম্মান। দুই আত্মজাকে বাঙালী হিসেবেই গড়ে তুলছেন এই কৃতীকন্যা। ২১ মে ২০১৭ [email protected]
×