অস্বাস্থ্যকর খাবারে প্রতি আমাদের আগ্রহটা যেন একটু বেশিই বেশি। গবেষণায় জানা গেছে, এ ধরনের খাবারের প্রতি যদি আগ্রহ এমন বেশিই হয় তবে এর দায় ভার পড়বে আপনার মস্তিষ্কের উপর। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি মস্তিষ্কের আকর্ষণ রয়েছে। এ কারণেই অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আমাদের ঝোঁক বাড়ে। খাদ্য বিশেষজ্ঞ স্টিভেন উইদারলি তার ‘হোয়াই হিউম্যানস লাইক জাঙ্ক ফুড’ শীর্ষক গবেষণায় অস্বাস্থ্যকর খাবার ভাললাগার দুইটি কারণ তুলে ধরেছেন।
প্রথমত- খাবারের স্বাদ, গন্ধ এবং মুখের মধ্যে এর অনুভূতি। একটি খাবার মুখের মধ্যে বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টির বিষয়টিকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘অরোসেনসেশন’। আর এটাই অস্বাস্থ্যকর খাবার বা ‘জাঙ্ক ফুড’য়ের প্রতি অদম্য আগুহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
দ্বিতীয়ত- খাবারটি তৈরিতে ব্যবহৃত উপকরণ। কমবেশি সব খাবারই মূলত আমিষ, চর্বি ও কার্বোহাইড্রেইটের মিশ্রণ। তবে জাঙ্ক ফুডের ক্ষেত্রে আদর্শ মিশ্রণ হলো লবণ, চিনি ও চর্বি। এই মিশ্রণ আমাদের মস্তিষ্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, ফলে এ ধরনের খাবারের প্রতি ভাললাগা বাড়তে থাকে। তাই, স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি ভাললাগা গড়ে তোলা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে এই দুঃসাধ্য সাধনের কয়েকটি উপায় জানিয়েছে খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
চোখের আড়ালে রাখুন
অস্বাস্থ্যকর খাবার যাতে চোখের সামনে না পড়ে সে বিষয়ে যতœবান হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাই রান্নাঘরে কিংবা ফ্রিজের সামনের অংশে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখার অভ্যাস করতে হবে। ফলে স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি ক্রমেই আগ্রহ তৈরি হতে পারে। রেস্তরাঁর মুখরোচক কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবারের ছবি চোখে পড়া এড়াতে রেস্তরাঁর পেজগুলোকে ‘আনফলো’ দিয়ে রাখতে পারেন।
দ্য ফাইভ-ইনগ্রিডিয়েন্ট রুলস
যেসব খাবারে পাঁচ বা ততোধিক উপাদান থাকে সেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবারও। কারণ এগুলোও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ায়।
২১ দিনের নিয়ম
একটি অভ্যাস গড়তে বা ভাঙতে চাই মাত্র ২১ দিনের অধ্যবসায়। তাই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। আর ২১ দিন শুধুই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। সফল হতে পারলে অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়াতে কষ্ট কম হবে, গড়ে উঠবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
খাবারের বণ্টন
যেসব খাবারের জন্য মন আকুলি-বিকুলি করছে তার সবগুলোই একদিনে খেয়ে ফেললে চলবে না। ক্যালরিতে টইটম্বুর প্রিয় খাবারগুলো অল্প পরিমাণে খেতে হবে এবং ছোট কামড়ে।
খাওয়ার মাঝখানে জাঙ্ক ফুড
চকোলেট কে না ভালবাসে? তবে খিদা পেটে চকোলেট খেলে মস্তিষ্ক একে পুরোদস্তুর খাবার মনে করবে এবং খাওয়ার পরিমাণও বেশি হবে। তবে যে কোন বেলার খাবারের মাঝে এক টুকরো চকোলেট খেলে খাওয়ার পরিমাণও কম হবে, আগ্রহও কমবে।
টেলিভিশনের সামনে খাওয়া চলবে না
অবচেতন মনে বা অন্যমনষ্কভাবে খেলে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়। এর আদর্শ উদাহরণ টেলিভিশন দেখতে দেখতে খাওয়া। ফলে স্বাস্থ্যকর খাবারও ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ভরা পেটে বাজারে যাওয়া
পেট ভরা অবস্থায় বাজারে গেলে স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ফলে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার পরিমাণ কমে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: