ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইনে চেক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

কল্যাণ ও অবসর ভাতা পাচ্ছেন বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ মে ২০১৭

কল্যাণ ও অবসর ভাতা পাচ্ছেন বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হজ গমনেচ্ছু অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারী শিক্ষক- কর্মচারীদের মধ্যে কল্যাণ ও অবসর ভাতার চেক অনলাইনে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রবিবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইস) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষকদের মাঝে চেক বিতরণের এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। একস্সে টু ইনফর্মেশন (ধ২র) প্রকল্পের সহযোগিতায় বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন । অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, ব্যানবেইসের পরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ, অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব শরীফ আহমদ সাদী ও শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব মোঃ শাহজাহান আলম সাজু। শিক্ষামন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে ভিডিও কন্ফারেন্সে কথা বলেন। ভাতাপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এ সময় তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার হজ গমনেচ্ছু ১ হাজার ৮৫১ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে মোট ৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকার কল্যাণ ও অবসর সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। অনলাইনে সকলের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে। স্ব স্ব ব্যাংক এ্যাকাউন্টে তাদের টাকা পৌঁছে যাবে। এতে হয়রানি কমবে। তিনি বলেন, এবার বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ভাতা বাবদ ৬৫০ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ৮৭৪ বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীকে ২ হাজার ৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা অবসর ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এই সময়ে ৬৮ হাজার ৪২৪ জনকে ৯৬৩ কোটি টাকা কল্যাণ ভাতা প্রদান করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সকল শিক্ষক তাদের সুবিধা পাবেন। কিছু শিক্ষকের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকতায় কিছু অসৎ লোক ঢুকে গেছেন। তারা ক্লাসে পড়ান না। কিন্তু বাড়িতে টাকা দিয়ে পড়ান। সংখ্যায় কম হলেও কিছু শিক্ষক পরীক্ষাকেন্দ্রে এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছেন। এর চেয়ে কুশিক্ষা আর কী হতে পারে? তিনি বলেন, শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এটা আজকের দিনে যথেষ্ট নয়। মান আরও বাড়াতে হবে। সরকার এখন সে কাজটিই করছে। এ জন্য শিক্ষকরাই হলেন নিয়ামক শক্তি, তারাই আসল শিক্ষাটা দেবেন। জাতীয়করণে শীঘ্রই শুভদিন আসছে সরকারী শিক্ষকদের উদ্দেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, জাতীয়করণে খুব শীঘ্রই আপনাদের শুভদিন আসছে। জাতীয়করণে কত টাকা খরচ হবে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ইত্যাদি আলাদা আলাদা খরচের হিসাব অন্তত তিনবার জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শিক্ষক-কর্মচারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সমাবেশে যোগ দেয়া শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা আপনাদের মতো করে এগোতে থাকেন। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় তা করব। শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরও বলেন, রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে জাতীয়করণ হবে না। জাতীয়করণে পদ্ধতিগতভাবে এগোতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তিসঙ্গতভাবে বোঝাতে হবে জাতীয়করণের ব্যয়ের হিসাব। আপনারা (শিক্ষকরা) বলুন জাতীয়করণ করা হলে আপনারা কোচিং করাবেন না। এভাবে আপনারা পজেটিভ ধারণা দিন সরকারের উচ্চ পর্যায়কে। চাপ দিয়ে কিছু নিতে পারবেন না। সমাবেশে সাবেক শিক্ষা সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি আমার অবসরের একদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি চাও? জবাবে আমি বলি, ‘আমি দুটি জিনিস চাই। এক. শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করে দিন। দুই. আমাকে পনেরো শ’ কোটি টাকা দেন যাতে সব অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা সময়মতো দিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেন, জাতীয়করণ করব কিন্তু মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা কই? প্রস্তাবনা না দিলে, হিসেব না দিলে কীভাবে জাতীয়করণ করব? প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছিলাম এক হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি লাগবে।
×