ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

র‌্যাঙ্কিংয়ে সাতেই থাকছে বাংলাদেশ

এবার সন্তুষ্ট মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২১ মে ২০১৭

এবার সন্তুষ্ট মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা ছয়ে ওঠার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগানো যায়নি। তবে তিনজাতি সিরিজ শুরুর আগে যে বাংলাদেশ র‌্যাঙ্কিংয়ের সাত নম্বরে ছিল। সেখানেই থাকছে বাংলাদেশ। শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে দাপটে জিতে সেই স্থান বজায় রেখেছে মাশরাফিবাহিনী। আর এমন জয়ে সন্তুষ্টও বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেছেন, ‘জেতা সবসময়ই আনন্দের। তবে আমি মনে করি ছেলেরা যেভাবে খেলেছে সেটা সবচেয়ে সন্তুষ্টির জায়গা। আমাদের ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে আমি খুশি।’ খুশি হওয়ারই কথা। এমন জয় যে দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে মনোবলও চাঙ্গা করে তোলে। কিন্তু বাংলাদেশ সাতে থাকছে ঠিক। পয়েন্ট যে কমে গেছে। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ২৪ মে তিনজাতি সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে হারলে আরেক পয়েন্ট কমবে। তাতে করে আটে থাকা পাকিস্তানের (৮৮ পয়েন্ট) সঙ্গে মাত্র ১ পয়েন্ট পার্থক্য থাকবে। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলাতে প্রভাব তখন ভালভাবেই পড়ে যেতে পারে। তিনজাতি সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ছিল ৯১। র‌্যাঙ্কিং ছিল সাত। শ্রীলঙ্কার ছিল ৯৩ পয়েন্ট। র‌্যাঙ্কিং ছিল ছয়। পাকিস্তানের আট ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের (৭৯ পয়েন্ট) নয় নম্বর র‌্যাঙ্কিং এখনও আছে। তিনজাতি সিরিজে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতলেই র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয় নম্বরে উঠে যেত বাংলাদেশ। তখন শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলত মাশরাফিবাহিনী। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলাও অনেকটা নিশ্চিত করে নিত। কিন্তু সেই সুযোগ এখন আর নেই। ছয়ে আর ওঠার সুযোগ তিনজাতি সিরিজ দিয়ে নেই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। তাতে করে এক পয়েন্ট হারিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আবার জিতে এক পয়েন্ট পেয়েছে। তাতে করে অবস্থান একই থাকছে। এখন যদি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিতে হারে বাংলাদেশ, তাহলে এক পয়েন্ট হারাবে। তখন পাকিস্তানের সঙ্গে পয়েন্ট পার্থক্য হয়ে দাঁড়াবে ১। যা বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনায় বাধা তৈরি করবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভাল করতে না পারলে আর পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি ভাল খেলতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। মাশরাফি অবশ্য পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকেও হারানোর ভাবনা করছেন। তাতে করে পয়েন্ট আরও মজবুত হয়ে থাকবে। বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত ম্যাচে আমরা শুরুর দিকে উইকেট ফেলতে পারিনি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বোলাররা ঠিক সেই কাজটাই সাফল্যের সঙ্গে করেছে। বোলারদের কাছ থেকে আমরা এমন কিছুই সবসময় চাই। আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচে জিততে চাই। এর আগের ম্যাচেই আমাদের জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। তবে আমি মনে করি, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা যেভাবে খেললাম, সেভাবে খেলতে পারলে আমরা নিউজিল্যান্ডকেও পরের ম্যাচে হারাতে পারব।’ এমনটি হলে নিউজিল্যান্ডকেও হারানো সম্ভব। কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ বোলাররা যদি ভাল বল করত তাহলে জেতার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি আর ২০টি রান বেশি করতে পারলেও হত। সেই কাজগুলোই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনায়াসেই করেছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান তো ছন্দে ফিরেছেন। চার উইকেট শিকার করেছেন। সৌম্য সরকারও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। মাশরাফি তাই বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগ নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। মাশরাফি বলেছেন, ‘টস জেতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উইকেটে বেশ আর্দ্রতা ছিল। আমাদের ফাস্ট বোলাররা সেই আর্দ্রতাকে খুব ভালভাবেই কাজে লাগিয়েছে। দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়াটা যে কোন দলের জন্যই সমস্যা। তবে তামিম আর সৌম্য ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ওভারপ্রতি ৭ রান করে নিয়ে আমাদের কাজটা অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।’ মাশরাফি ক্রিকেটারদেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন, ‘সব বিভাগেই ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে। আমি তাদের পারফর্মেন্সে খুশি। মুস্তাফিজ তো অসাধারণ বোলিং করেছে। কয়েক বছর ধরেই সে বাংলাদেশের হয়ে দারুণ খেলছে। আশাকরি দেশের হয়ে সে এভাবে পারফর্ম করে যাবে। সৌম্য আর তামিম দারুণ ব্যাটিং করেছে। বিশেষ করে সৌম্য ছিল অসাধারণ। আশা করি, সামনের ম্যাচেও তার কাছ থেকে এমন ইনিংস পাব।’ বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য আসলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভাল করা। এজন্য এ প্রস্তুতিমূলক তিনজাতি সিরিজটি খেলছে। এ সিরিজে ভাল করা মানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভাল করার জ্বালানি পেয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশের ভাল কিছু করার সম্ভাবনা দেখছেন। তামিমের মতে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ই আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে ভাল খেলায় উৎসাহ দেবে। এ ওপেনার বলেন, ‘এখানে ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ড যেতে পারলে খুব ভাল হয়। এখানে কম বেশি সবাই দুটি করে ইনিংস খেলেছে। কিভাবে কি করতে হবে সেটা সবাই বুঝে ফেলেছে। শুরুতে সময় নিতে হয়। উইকেটে সেট হয়ে বাজে বলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।’ তবে উইকেট নিয়ে এখনও চিন্তা যায়নি। তামিম তাই বোঝালেন, ‘ইংল্যান্ডের উইকেট আয়ারল্যান্ডের এই উইকেটের চেয়ে অনেক ভিন্ন হবে। ফ্ল্যাট উইকেটে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা সহজ হবে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাই আমাদেরও ভাল সম্ভাবনা থাকবে।’
×