ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে এএফপি রোগে আক্রান্ত শিশু ॥ এলাকায় আতঙ্ক

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ মে ২০১৭

নীলফামারীতে এএফপি রোগে আক্রান্ত শিশু ॥ এলাকায় আতঙ্ক

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ ৯ বছরের শিশু জহুরা আক্তারের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। পাড়া মহল্লার কোন মানুষজন ও শিশুরা তার কাছে ভেড়ে না। তাকে কেউ খেলতেও ডাকে না। এলাকায় প্রকাশ পেয়েছে জহুরা একিউট ফ্যালাসিট প্যারালাইসিস (এএফপি) রোগে আক্রান্ত। রোগটি ছোঁয়াচে। শিশুটির মল বা প্রস্রাবের মাধ্যমে রোগটি বিভিন্ন জনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ডোমার পৌর এলাকার পূর্ব চিকনমাটি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রিক্সাচালক ইদ্রিস আলীর চার ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট এই জহুরা। শিশুটি স্থানীয় জলপাখুরি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। তার এই রোগের কারণে তার স্কুল যাওয়া এখন বন্ধ। ছোট মেয়ের এই রোগের কারণে বাকি তিন সন্তানকে তারা নিরাপদে রেখেছে। তবে এ রোগের কথা ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে শিশু জহুরার এই রোগটি যাতে আর ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য রিক্সাচালক ইদ্রিস আলীর বাড়ির চারদিকে ৫ বছরের নিচে দুই শত শিশুকে ১৬ মে বিশেষ ব্যবস্থায় পোলিও খাওয়ানো হয়। এ ছাড়া এএফপি রোগে আক্রান্ত জহুরার মল ও প্রস্রাব পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশিদ জানান, ১৫ বছরের কম বয়সী যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অতিদ্রুত আক্রান্ত স্থান থলথলে ও অবশ হয়ে যাওয়া এই রোগের লক্ষণ। এএফপি রোগে আক্রান্ত শিশুর হাত ও পা চিকন হয়ে যায়। তাই জহুরার এই রোগকে বিশেষভাবে গুরুত্বসহকারে নিয়ে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। শনিবার সরেজমিনে গেলে এএফপি রোগে আক্রান্ত জহুরার বাবা জানান, তার মেয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করত। হঠাৎ করেই তার হাত ও পা চিকন হতে শুরু করে। প্রথমে ভেবেছিলাম ভিটামিনের অভাব। এক স্বাস্থ্যকর্মী আমার মেয়ের রোগ দেখে বাসায় ডাক্তার নিয়ে আসে। সেই ডাক্তার প্রাথমিকভাবে এএফপি নামে একটি রোগের কথা জানায়। এখন আমি কি করব। কিভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাব এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন পাড়া, মহল্লার লোকজন এখন দূরে দূরে থাকে। মেয়েটি কোন শিশুর সঙ্গে খেলতে যেতে পারে না। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। একা একা থাকে। মেয়েটি মল ত্যাগ ও প্রস্রাব করলে তা মাটি খুঁড়ে তাৎক্ষণিকভবে চাপা দিতে হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা মেডিক্যাল অফিসার রায়হান বারী জানান, শিশুদের এএফপি রোগ হলে হাত ও পায়ের মাংস দুর্বল হয়ে অবশ হয়ে যায়। হাত ও পা চিকন হয়। ভাইরাস, দূষিত পানি, শরীরের কর্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হলেও অনেক সময় ওপিডি ভ্যাকসিন না নিলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
×