ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাস সিস্টেম সংস্কারে হাত দেয়া উচিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২০ মে ২০১৭

বাস সিস্টেম সংস্কারে  হাত দেয়া উচিত

স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজধানীতে মেট্রোরেল কিংবা ফ্লাইওভার নির্মাণের দিকে বিভিন্ন সংস্থার যতটা ঝোঁক আছে, তার কানাকড়িও নেই বাস সিস্টেম নিয়ে। অথচ মেট্রোরেল বাস্তবায়িত হলেও ভবিষ্যতে যাত্রী পরিবহনের মূল চাহিদা মেটাতে হবে বাস সার্ভিসকেই। এমন মত দিয়ে পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু মেট্রোরেল বা বিআরটিঁর অপেক্ষায় না থেকে কৌশলগত গণপরিবহন পরিকল্পনা বা আরএসটিপি অনুযায়ী বাস সিস্টেম সংস্কারে হাত দেয়া উচিত সংশ্লিষ্টদের। দিনের পর দিন বিশৃংখলভাবে চলছে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা। যানজট, বাসের স্বল্পতা, ভাড়া নৈরাজ্য, আর চলাচলে বিশৃঙ্খলা মিলিয়ে প্রায় অকেজো এই পরিবহন ব্যবস্থা আর কতদিন, এমন প্রশ্নের যেনো উত্তর নেই কারো কাছে। সাধারণ জনগণ বলেন, ‘সব জায়গায় তো সমস্যা, গাড়ীর চালকরা দক্ষ না। কষ্ট আর দুর্ভোগ মনে হয় করতেই হবে সব সময়। এটি লাঘবের আশা করা যায় না।’ বাস্তবতা হচ্ছে, ঢাকার গণপরিবহন নিয়ে প্রথম মহাপরিকল্পনা বা এসটিপি প্রণীত হয় ২০০৪ সালে। তবে নানা কারণে এর বাস্তবায়ন আটকে যাওয়ায় ২০১৫ সালে তা সংশোধন করে তৈরি হয় আরএসটিপি। ঢাকার ভবিষ্যৎ বিবেচনায় নিয়ে আরএসটিপিতে মেট্রোরেল ৩টি থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৫টি। আর বিআরটি রাখা হয় ২টি। এরমধ্যেই মেট্রোরেল সিক্স এর কাজ শুরু হলেও বাকী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে ২০৩৫ সাল নাগাদ। কিন্তু ততদিনে কী অবস্থা দাঁড়াবে নগরবাসীর? ডিএনসিসির পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক ড. এস এম সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এগুলোর ২০৩৫ সাল নাগাদ শেষ হবে। তাহলে ২০৩৫ সাল নাগাদ আমরা কি করবো? সুতরাং বাস সিস্টেমকে রেখে এগিয়ে যেতে হবে কাজ।’ পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, ‘ঢাকা শহরের মোট পরিবহনের যে চাহিদাটা থাকবে তার মাত্র ১৭ শতাংশ এই বিআরটি এবং এমআরটি দিবে। বাস কিন্তু তখনও ৪০ শতাংশ সেবাটা দিবে।’ তারা বলছেন, বাস সার্ভিস নিয়ে নতুন কোন পরিকল্পনার দরকার নেই। বরং আরএসটিপিতে বাসের জন্য যে পরামর্শ দেয়া আছে, তা বাস্তবায়ন করলেই চেহারা পাল্টে যাবে গণপরিবহনের। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক আরও বলেন, ‘বাসের রুট ঠিক করে সীমিত সংখ্যক কোম্পানী দিয়ে তার গতি বাড়ানোর জন্য তাকে গুরুত্ব দিতে হবে রাস্তার মধ্যে। এক্ষেত্রে গণপরিবহন সম্পৃক্ত সবগুলো সংস্থাকে একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় এনে পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে পরিচালনা করা উচিত। এবং গুরুত্ব হিসেবে একটি ডেডিকেটেড লেন করে দেওয়া উচিত। গাজীপুর থেকে মহাখালী হয়ে লম্বা এই রাস্তা ধরেই বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিলো অল্প সময়ে অধিক যাত্রী পরিবহনে সক্ষম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি-থ্রি। কিন্তু এই রুটের মাঝখানে এই মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার গড়ে ওঠায় সেই প্রকল্প এখন বাতিলের খাতায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাই নগরীতে এরকম নতুন নতুন প্রকল্প গড়ে ওঠার আগেই বিআরটি আর বাস সিস্টেমকে কার্যকর করা না গেলে পরে তা আর সম্ভব হবে না।
×