ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রীষ্মের প্রকৃতি ফলে-রসে টইটম্বুর

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২০ মে ২০১৭

গ্রীষ্মের প্রকৃতি ফলে-রসে টইটম্বুর

শুভগাছা। যমুনাপারের শুভগাছায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দু’ধারে আম-কাঁঠালের সারি সারি গাছ। মাঝে মধ্যে জামগাছেরও দেখা মেলে। ছোট-বড় অসংখ্য কাঁঠাল। আম ঝুলছে ঝোপা ঝোপা। সরকারী এই বাঁধের পাশেই ভাঙ্গনকবলিত মানুষের বসবাস। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তত্ত্বাবধানকারী পানি উন্নয়ন বিভাগ এসব গাছের আম-কাঁঠালে ভাগ বসায় না। এখানকার পরিবারগুলোই এসব ফলের দাবিদার। রসালো পাকা ফলের সৌরভে মাতোয়ারা এখন প্রকৃতি। চারদিকে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামসহ নানা মিষ্টি ফলের রসে টইটম্বুর। গাঢ় সবুজ আমের শরীরে লেগেছে সিঁদুরের ছাপ। পাকা লিচুগাছ ঘিরে দিনে পাখি আর রাতে বাদুড়ের কোলাহল। জাম-জামরুল-লিচু, আনারস, আতা, তরমুজ, বাঙ্গি, বেল, জাম্বুরা, কামরাঙা, লটকনসহ হরেক ফলের স্বাদ আর রঙের ছোঁয়ায় বাঙালীর রসনা তৃিপ্তর মৌসুম। বাহারি আর পুষ্টিকর সব ফলের প্রাচুর্য এই মৌসুমকে দিয়েছে মধুমাসের মহিমা। বাঙালীর মধুমাস জ্যৈষ্ঠে রস টসটস বর্ণিল রঙের ফলে ছেয়ে গেছে বাজার। গ্রামের হাটবাজারে এখন মিষ্টি ফলের সুবাস। গ্রামের মতো শহরে ফলের দোকান সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা। মধু মাস জ্যৈষ্ঠে জামাই ভোজন গ্রাম বাংলায় প্রচলিত রীতি। মধুমাসে জামাই ষষ্ঠী বাংলার লোক সংস্কৃতির অংশ। উৎসবটি আদিকাল থেকে বাঙালী সমাজের ঘরে ঘরে পালিত হয়ে আসছে। সিরাজগঞ্জে হিন্দু অধ্যুষিত কালীবাড়ি, ঘোষপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এ রেওয়াজ চালু আছে। রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি, সিরাজগঞ্জ সদরের ছাতিয়ানতলী, কাজীপুরের সোনামুখীসহ কিছু এলাকায় জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাইমেলা বা জ্যৈষ্ঠী মেলাও বসে। দূর-দূরান্ত থেকে এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জে আসতে শুরু করেছে মধুমাসের নানা জাতের ফল। ফলের ম ম ঘ্রাণে ভরে উঠেছে আড়তগুলো। কোথাও কোথাও মৌসুমী ফলের মেলা বসছে। কুষ্টিয়া, নাটোর, ঈশ্বরদী থেকে গুটি আম, মোহনভোগ, গোপালভোগসহ বাহারি নামে বিভিন্ন আমে বাজার সয়লাব। ভারতীয় গুটি আম গোবিন্দভোগ, হিমসাগর পাওয়া যাচ্ছে বৈশাখের শুরু থেকেই। এ ছাড়া রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, লক্ষ্মণভোগ মধুমাসকে পরিপূর্ণ করে তুলেছে। আর এর পরই আসবে ফজলি আম। গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া, রানীভোগ, ফজলি, আশ্বিনা ছাড়াও এখন এ অঞ্চলে নতুন জাতের আম ফলছে। যেমন আম্রপালি, সোনালি, হাঁড়িভাঙ্গা, সূর্যপূরী, কাঁচামিঠা ইত্যাদি। মেয়েরা ধীরে-ধীরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা পাচ্ছে। বিবাহিত মেয়েরা বাবারবাড়ি যাওয়ার তেমন একটা সুযোগ পায় না। অথবা স্বামী-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ব্যবসা বা চাকরি করে, ছেলেমেয়েরা দূরে লেখাপড়া করে, সময়ের স্বল্পতাসহ নানাবিধ কারণে আত্মকেন্দ্রিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ জন্য আত্মীয়-কুটুমের সঙ্গে এ মাসে দেখা বা কুশল নেয়ার অপার সুযোগ আসে। Ñবাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে
×