ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

২ বাড়ি, ৩ দোকান ভাংচুর পাবনায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলে তমালসহ গ্রেফতার ১১

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২০ মে ২০১৭

২ বাড়ি, ৩ দোকান ভাংচুর পাবনায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলে তমালসহ গ্রেফতার ১১

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী, নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ উপজেলা শহরে দুই বাড়ি ও তিন দোকান ভাংচুরের ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরিফ তমালসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তমাল শরিফ ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ এমপির পুত্র। পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মন্ত্রীর শহরের বাড়ি থেকে তমালকে গ্রেফতার করা হয়। একই সময় উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব সরকারের বাড়িতে পুলিশ গিয়ে তাকে পায়নি। গ্রেফতারকৃতদের রাতেই পাবনায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরা হলোÑ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শিরহান শরিফ তমাল, যুবলীগ কর্মী রূপক, জাহাঙ্গীর, জাফর ইকবাল, রনি, প্রিন্স ইসলাম, মাহবুব ইসলাম, সাবিরুল, মেহেদী হাসান, সামসুল ও মাসুম। এদের শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঈশ্বরদী থানার পুলিশ জানায়, রাতে মামলা হওয়ার পর শুক্রবার ভোরে ঈশ্বরদী শেরশাহ রোডের বাড়ি থেকে তমালকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বাড়িতে হামলার ওই ঘটনার পর রাতে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার বিশ্বাস ঈশ্বরদী থানায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলেকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের নামে এই মামলা করেন। ওই হামলার ঘটনার সময় ঈশ্বরদী পৌরসভার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদের একটি খাবারের দোকানেও ভাংচুর চালানো হয়। ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের পৌর মেয়র আজাদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। আর মেয়র আজাদ মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর জামাতা। স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য নিয়ে তমালের সঙ্গে আজাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিরোধ রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যেও। ভূমিমন্ত্রীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা রাজিব সরকারের অনুসারী কয়েকজন বৃহস্পতিবার একটি মামলায় হাজিরা দিতে পাবনা আদালতে গেলে সেখানে জুবায়েরের সমর্থকদের সঙ্গে মারামারি হয়। আহত হন আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবলীগ কর্মী। এর জের ধরে যুবলীগ কর্মীদের একটি দল ঈশ্বরদী পৌর সদরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছাত্রলীগ নেতা জুবায়েরের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে মারধরের শিকার হন জুবায়েরের মা হাজেরা বেগম। তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যুবলীগ নেতা রাজিবের নেতৃত্বে ওই হামলা হয়েছিল বলে বাদীপক্ষ অভিযোগ করলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। রাজিব বলেন, ‘আমাদের লোকজন পাবনায় কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে জুবায়ের বিশ্বাসের লোকজন হামলা করলে কতিপয় ছেলেরা এই কাজ করে। তবে আমাকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়ানোর প্রশ্নই আসে না। আমি এ কাজের সঙ্গে জড়িত নই।’ জুবায়েরের সঙ্গে পুরনো বিরোধের কারণে এ ঘটনার তাকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন রাজিব। হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না। আমার প্রতিপক্ষরাই এ কাজ করছে। আমার ব্যক্তিগত কার্যালয় ও একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।’ তবে মামলা ও ছেলের গ্রেফতারের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান ডিলু বা তার পরিবারের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
×